ঢাকা ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo দ্য নিউজের সাংবাদিক ইমরানকে প্রাণনাশের হুমকি Logo দেশ জুড়ে এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত: মির্জা ফখরুল Logo চট্রগ্রাম বন্দরে ১২০০ টন কাচামাল নিয়ে জাহাজডুবি Logo রিশাদের রেকর্ড বোলিংয়ে মিরপুরে বাংলাদেশের বড় জয় Logo মৌলভীবাজারে এম নাসের রহমানের নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু Logo একাত্তরের শহিদ আবদুর রবের কবর জিয়ারত করলেন চাকসুর ভিপি-জিএসরা Logo ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ নিয়ে সালাহউদ্দিনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানালেন জামায়াত আমির Logo ‘শহীদ মুগ্ধের বাবা ও আতিকুলকে চেনেন না, তিনি শুধু চিনেন এস আলমের গাড়ি Logo “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, পাকিস্তানের সব উপকার ভুলে গেছে আফগানিস্তান” Logo বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডে সকল ফ্লাইট বাতিল, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

বিলুপ্তির পথ থেকে জৌলুস ফিরে পাচ্ছে ৩শ বছর পুরনো জামালপুরে ঔতিহ্যবাহী শুটকির বাজার

৩শত বছর পুরনো এক সময়ের জামালপুর জেলার সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক হাট হিসেবে পরিচিত রানীগঞ্জ হাটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিলো। তবে বর্তমানে অবকাঠামোগত উন্নয়নে এই হাট কিছুটা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিলীন হয়ে যাওয়ার পথ থেকে ফিরে আসছে এই হাটের মূলকেন্দ্র শুটকির বাজার। ঔতিহ্যবাহী হাটটি আবার আগের মতো জৌলুস ফিরে আসবে এমনটাই আশা করছে হাটের ব্যবসায়ীরা।

আজ থেকে প্রায় শতাব্দী বছর আগে জামালপুর শহরের তীর ঘেষা বংস নদী দিয়ে চলাচল করতো দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিশাল বিশাল সাম্পান নৌকা। শুধু দেশেরই নয় ভিনদেশী ব্যবসায়ীরাও পণ্য পরিবহনে তাদের ছোট-বড় জাহাজ নিয়ে চলাচল করতো এই পথে। সেই সময় থেকেই আস্তে আস্তে গড়ে উঠে হাটটি। ভূমি জরিপ সিএস সূত্রে জানা গেছে, অবিভক্ত ভারতে নাটোরের রানী দেবী চৌধুরানীর সা¤্রাজ্য ছিলো এটি। তারই নাম অনুসারে প্রায় ১০ একর জমি জুড়ে হাটটি স্থাপন করেছিলেন তিনি। সেই সময় জামালপুর ও তার আশপাশের এলাকা ছাড়াও ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম ঘটত এই হাটে। ধান, পাট, চাল, গম, সরিষা, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, মসলাসহ বিভিন্ন ধরনের শত শত মণ পণ্যবোঝাই বিশাল নৌকাসহ ব্যবসায়ীদের ও নৌযানের বহর ভিড়ত এখানে।
তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সবচেয়ে বেশি যে পণ্যটি ক্রয়-বিক্রয় হতো সেটি হলো শুটকি। মূলত শুটকির বাজারের জন্যই এ বাজারের ছিলো আলাদা খ্যাতি। শুরু থেকেই অন্য সব পণ্য শনিবার আর মঙ্গলবার পাওয়া গেলেও শুটকির বাজার বসে প্রতিদিনই। বর্তমানে সর্বোচ্চ কেজি প্রতি ২২শত টাকার চিংড়ি থেকে শুরু করে ২শত টাকা কেজি জাটকি শুটকি ছাড়াও নানা দামের শুটকি পাওয়া যায় এখানে। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে প্রতি সোমবার নুনা ইলিশ, ফেপি, চিংড়ি, কর্তি, মলা, লইট্টা, ছুড়ি, চেলা, ইচা, চৌটকি, কলম্বসহ দেশী-বিদেশী প্রায় ৫০ রকমের শুটকি আসে এখানে। তবে মাঝখানে খুব একটা লাভের মুখ দেখেনি এই হাটের ব্যবসারা। বাজারে দোকান কমে যাওয়া ও অনলাইনে শুটকি কেনা-বেচার কারণে কিছু দিন খুব একটা বাজারে আসতো না ক্রেতা। তবে বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ও অনলাইনে খারাপ মানের পণ্য দেওয়ার কারণে আবার আগের মতো বাজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে ক্রেতারা এতে কিছুটা লাভের মুখ দেখছে ব্যবসায়ীরা। এ বাজারে বর্তমানে প্রায় ৩৮টি দোকানে ৫০ রকমেরও বেশি শুটকি পাওয়া যাচ্ছে।

তবে শুটকি ব্যববায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান ভিন্ন কথা, তারা বলছেন ১০-১২ বছর আগে যেমন বেঁচা-কেনা হতো সেটি এখন হচ্ছে না। অনেক ব্যবসায়ীর কোটি টাকার ওপরে লোকসান হয়ে আজ তারা পথে বসেছে। বাজারে দোকান বৃদ্ধি পেলেও তাদের প্রত্যাশা মতো ক্রেতা বৃদ্ধি পায়নি।

শুটকি ব্যবসায়ী রাশেদ বলেন, এখানে সবাই মাঝারি ব্যবসায়ী। সবার দোকান বা ব্যবসার পরিধি সমান। প্রতি সোমবার চট্টগ্রাম থেকে আমাদের এখানে শুটকি আসে। প্রতি দোকানে মাসে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা করে ৩৮টি দোকানে গড়ে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার শুটকি নামে। আজ থেকে ১০ বছর আগে আরো বেশি শুটকি মানতো। কিছু বছর থেকে আমাদের ব্যবসা আগের তুলনাই খারাপ, কারণ আগে শেরপুর, নালিতাবাড়ি, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ থেকে পাইকাররা আসতো। কিন্তু এখন ওই অঞ্চল গুলোতে শুটকির বাজার হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি সেখানেই শুটকি চলে যায়। এতে করে পাইকাররা গাড়ি ভাড়া দিয়ে এদিক আর আসে না।
আরেক ব্যবসায়ী মো: মুরাদ বলেন, আমি আমার বাবার সাথে ব্যবসা করতার আমার বাবার মৃত্যুর পর আমি একাই দোকান চালাচ্ছি। আমি যদি ১০ বছর আগের কথা বলি তখন এখানে দোকান ছিলো ২০টি আর এখন এখানে দোকান হচ্ছে ৩৮টি। মানুষ আগে গরিব ছিলো, সপ্তাহে ৫ দিন মানুষ শুটকি খেতো। এখন মানুষ মাছ আর মাংস ছাড়া ভাতই খায় না। মানুষ শুটকি খাওয়া বাদ দিয়েছে তার মধ্যে শুটকির দোকানও আগের থেকে বেড়েছে। তাই ব্যবসা খুব একটা ভালো না।
ব্যবাসায়ী নাশেব বলেন, এই বাজারে আমরা বাপ-দাদারা ব্যবসা করতো এখন আমি ব্যবসা করি। এই ব্যবসা করতে হলে বাকি দিতেই হবে বাকি ছাড়া এই খানে ব্যবসা করা যাবে না। এখানে কাগজপত্রে বাকি হয় না ব্যবসায়ী-পাইকারা একে ওপরের ওপর বিশ্বাসে ব্যবসা করি। আমার চাচার দোকান ছিলো এই বাজারেই। আগে যখন উপজেলা থেকে পাইকাররা আসতো তখন তারা হাজার-হাজার টাকার শুটকি বাকি নিয়ে ব্যবসা করতো। কিছু বছর থেকে উপজেলার পাইকাররা আর আসে না পাওনা টাকাও দেয় না। এতে করে আমার চাচার প্রায় এক কোটি টাকা বাকি পড়ে আছে। তিনি এখন ব্যবসা ছেড়ে পথে বসে গেছে।

ব্যবাসায়ী মনু বলেন, আগের তুলনায় কিছুটা বেচা-কেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বাজার অবকাঠামোগত দিক থেকে তেমন একটা ভালো ছিলো না, বর্তমানে বাজারে দোকানের সংখ্যা বেঁধেছে, এতে নতুন ব্যবসায়ীরা আসবে বাজারের পরিধিও বৃদ্ধি পাবে। বাজার যত বড় হবে ক্রেতাদের বাজারে আসাটাও ততো বাড়বে। আমরা আশা করছি এতে আগের বা এখনকার তুলনায় বিক্রি অনেকটায় ভালো হবে।

জেলার সমাজ চিন্তাবিদরা বলছে, ঔতিহ্যবাহী জামালপুরের রানিগঞ্জ বাজার প্রায় হারিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু বর্তমানে বাজারে স্থায়ী পাকা দোকান নির্মাণ করায় বাজারটি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটায় কমে গিয়েছে। তবে নবনির্মিত দোকান গুলো নিয়ে যেনো কোন প্রকার ভাড়া বাণিজ্য না করা হয়, কোন প্রকার অফিস, ক্লাব, রাজনৈতিক বা কোন সংগঠনকে ভাড়া না দিয়ে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নিকট ভাড়া দেওয়া হয় এমনটাই আশা করছি আমরা।

জামালপুর পৌর প্রশাসক এ, কে, এম আবদুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, রানিগঞ্জ বাজারের নতুন পাকা দোকান তৈরি করা হচ্ছে। এখনো সম্পুর্ণ কাজ শেষ হয়নি তবে বেশির ভাগ কাজই শেষ হয়েছে। নতুন দোকান গুলো যেনো ওই বাজারের ব্যববায়ীরা ভাড়া পায় সেদিকে সর্বোচ্চ নজর দেওয়া হবে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দ্য নিউজের সাংবাদিক ইমরানকে প্রাণনাশের হুমকি

বিলুপ্তির পথ থেকে জৌলুস ফিরে পাচ্ছে ৩শ বছর পুরনো জামালপুরে ঔতিহ্যবাহী শুটকির বাজার

আপডেট সময় ০৩:০১:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

৩শত বছর পুরনো এক সময়ের জামালপুর জেলার সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক হাট হিসেবে পরিচিত রানীগঞ্জ হাটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিলো। তবে বর্তমানে অবকাঠামোগত উন্নয়নে এই হাট কিছুটা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিলীন হয়ে যাওয়ার পথ থেকে ফিরে আসছে এই হাটের মূলকেন্দ্র শুটকির বাজার। ঔতিহ্যবাহী হাটটি আবার আগের মতো জৌলুস ফিরে আসবে এমনটাই আশা করছে হাটের ব্যবসায়ীরা।

আজ থেকে প্রায় শতাব্দী বছর আগে জামালপুর শহরের তীর ঘেষা বংস নদী দিয়ে চলাচল করতো দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিশাল বিশাল সাম্পান নৌকা। শুধু দেশেরই নয় ভিনদেশী ব্যবসায়ীরাও পণ্য পরিবহনে তাদের ছোট-বড় জাহাজ নিয়ে চলাচল করতো এই পথে। সেই সময় থেকেই আস্তে আস্তে গড়ে উঠে হাটটি। ভূমি জরিপ সিএস সূত্রে জানা গেছে, অবিভক্ত ভারতে নাটোরের রানী দেবী চৌধুরানীর সা¤্রাজ্য ছিলো এটি। তারই নাম অনুসারে প্রায় ১০ একর জমি জুড়ে হাটটি স্থাপন করেছিলেন তিনি। সেই সময় জামালপুর ও তার আশপাশের এলাকা ছাড়াও ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম ঘটত এই হাটে। ধান, পাট, চাল, গম, সরিষা, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, মসলাসহ বিভিন্ন ধরনের শত শত মণ পণ্যবোঝাই বিশাল নৌকাসহ ব্যবসায়ীদের ও নৌযানের বহর ভিড়ত এখানে।
তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সবচেয়ে বেশি যে পণ্যটি ক্রয়-বিক্রয় হতো সেটি হলো শুটকি। মূলত শুটকির বাজারের জন্যই এ বাজারের ছিলো আলাদা খ্যাতি। শুরু থেকেই অন্য সব পণ্য শনিবার আর মঙ্গলবার পাওয়া গেলেও শুটকির বাজার বসে প্রতিদিনই। বর্তমানে সর্বোচ্চ কেজি প্রতি ২২শত টাকার চিংড়ি থেকে শুরু করে ২শত টাকা কেজি জাটকি শুটকি ছাড়াও নানা দামের শুটকি পাওয়া যায় এখানে। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে প্রতি সোমবার নুনা ইলিশ, ফেপি, চিংড়ি, কর্তি, মলা, লইট্টা, ছুড়ি, চেলা, ইচা, চৌটকি, কলম্বসহ দেশী-বিদেশী প্রায় ৫০ রকমের শুটকি আসে এখানে। তবে মাঝখানে খুব একটা লাভের মুখ দেখেনি এই হাটের ব্যবসারা। বাজারে দোকান কমে যাওয়া ও অনলাইনে শুটকি কেনা-বেচার কারণে কিছু দিন খুব একটা বাজারে আসতো না ক্রেতা। তবে বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ও অনলাইনে খারাপ মানের পণ্য দেওয়ার কারণে আবার আগের মতো বাজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে ক্রেতারা এতে কিছুটা লাভের মুখ দেখছে ব্যবসায়ীরা। এ বাজারে বর্তমানে প্রায় ৩৮টি দোকানে ৫০ রকমেরও বেশি শুটকি পাওয়া যাচ্ছে।

তবে শুটকি ব্যববায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান ভিন্ন কথা, তারা বলছেন ১০-১২ বছর আগে যেমন বেঁচা-কেনা হতো সেটি এখন হচ্ছে না। অনেক ব্যবসায়ীর কোটি টাকার ওপরে লোকসান হয়ে আজ তারা পথে বসেছে। বাজারে দোকান বৃদ্ধি পেলেও তাদের প্রত্যাশা মতো ক্রেতা বৃদ্ধি পায়নি।

শুটকি ব্যবসায়ী রাশেদ বলেন, এখানে সবাই মাঝারি ব্যবসায়ী। সবার দোকান বা ব্যবসার পরিধি সমান। প্রতি সোমবার চট্টগ্রাম থেকে আমাদের এখানে শুটকি আসে। প্রতি দোকানে মাসে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা করে ৩৮টি দোকানে গড়ে ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার শুটকি নামে। আজ থেকে ১০ বছর আগে আরো বেশি শুটকি মানতো। কিছু বছর থেকে আমাদের ব্যবসা আগের তুলনাই খারাপ, কারণ আগে শেরপুর, নালিতাবাড়ি, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ থেকে পাইকাররা আসতো। কিন্তু এখন ওই অঞ্চল গুলোতে শুটকির বাজার হওয়ায় চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি সেখানেই শুটকি চলে যায়। এতে করে পাইকাররা গাড়ি ভাড়া দিয়ে এদিক আর আসে না।
আরেক ব্যবসায়ী মো: মুরাদ বলেন, আমি আমার বাবার সাথে ব্যবসা করতার আমার বাবার মৃত্যুর পর আমি একাই দোকান চালাচ্ছি। আমি যদি ১০ বছর আগের কথা বলি তখন এখানে দোকান ছিলো ২০টি আর এখন এখানে দোকান হচ্ছে ৩৮টি। মানুষ আগে গরিব ছিলো, সপ্তাহে ৫ দিন মানুষ শুটকি খেতো। এখন মানুষ মাছ আর মাংস ছাড়া ভাতই খায় না। মানুষ শুটকি খাওয়া বাদ দিয়েছে তার মধ্যে শুটকির দোকানও আগের থেকে বেড়েছে। তাই ব্যবসা খুব একটা ভালো না।
ব্যবাসায়ী নাশেব বলেন, এই বাজারে আমরা বাপ-দাদারা ব্যবসা করতো এখন আমি ব্যবসা করি। এই ব্যবসা করতে হলে বাকি দিতেই হবে বাকি ছাড়া এই খানে ব্যবসা করা যাবে না। এখানে কাগজপত্রে বাকি হয় না ব্যবসায়ী-পাইকারা একে ওপরের ওপর বিশ্বাসে ব্যবসা করি। আমার চাচার দোকান ছিলো এই বাজারেই। আগে যখন উপজেলা থেকে পাইকাররা আসতো তখন তারা হাজার-হাজার টাকার শুটকি বাকি নিয়ে ব্যবসা করতো। কিছু বছর থেকে উপজেলার পাইকাররা আর আসে না পাওনা টাকাও দেয় না। এতে করে আমার চাচার প্রায় এক কোটি টাকা বাকি পড়ে আছে। তিনি এখন ব্যবসা ছেড়ে পথে বসে গেছে।

ব্যবাসায়ী মনু বলেন, আগের তুলনায় কিছুটা বেচা-কেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বাজার অবকাঠামোগত দিক থেকে তেমন একটা ভালো ছিলো না, বর্তমানে বাজারে দোকানের সংখ্যা বেঁধেছে, এতে নতুন ব্যবসায়ীরা আসবে বাজারের পরিধিও বৃদ্ধি পাবে। বাজার যত বড় হবে ক্রেতাদের বাজারে আসাটাও ততো বাড়বে। আমরা আশা করছি এতে আগের বা এখনকার তুলনায় বিক্রি অনেকটায় ভালো হবে।

জেলার সমাজ চিন্তাবিদরা বলছে, ঔতিহ্যবাহী জামালপুরের রানিগঞ্জ বাজার প্রায় হারিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু বর্তমানে বাজারে স্থায়ী পাকা দোকান নির্মাণ করায় বাজারটি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটায় কমে গিয়েছে। তবে নবনির্মিত দোকান গুলো নিয়ে যেনো কোন প্রকার ভাড়া বাণিজ্য না করা হয়, কোন প্রকার অফিস, ক্লাব, রাজনৈতিক বা কোন সংগঠনকে ভাড়া না দিয়ে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নিকট ভাড়া দেওয়া হয় এমনটাই আশা করছি আমরা।

জামালপুর পৌর প্রশাসক এ, কে, এম আবদুল্লাহ বিন রশিদ বলেন, রানিগঞ্জ বাজারের নতুন পাকা দোকান তৈরি করা হচ্ছে। এখনো সম্পুর্ণ কাজ শেষ হয়নি তবে বেশির ভাগ কাজই শেষ হয়েছে। নতুন দোকান গুলো যেনো ওই বাজারের ব্যববায়ীরা ভাড়া পায় সেদিকে সর্বোচ্চ নজর দেওয়া হবে।