ঢাকা ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একটি সত্যিকারের স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়তে চাই: চাকসু ভিপি ইব্রাহীম

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:৫১:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • 112

নির্বাচিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ভিপি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলছেন, তারা একটি সত্যিকারের স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়তে চান। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নির্বাচনে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সংগঠনগুলোকে সহায়তার আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে ফল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচিত ইব্রাহীম বলেন, “আমরা সত্যিকারের স্বপ্নের ক্যাম্পাস তৈরি করতে চাই। নির্বাচনে অনেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। আমরা চাই সবাইকে নিয়ে সুন্দরভাবে চাকসু পরিচালনা করতে।

“চাকসু কতটা নেতৃত্ব তৈরি করবে বা চাকসু আমাকে কতটুকু বেনিফিশারি করবে তার চেয়ে বড় কথা হল শিক্ষার্থীদের উপকারে আসছে কি-না। আমি বলতে চাই, যদি কখনো পথ ভুলে যাই, কখনো ত্রুটি-বিচ্যুতি আপনাদের মনে হয় অবশ্যই আমাদেরকে পরামর্শ দেবেন।”

ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে ইব্রাহীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনি ইশতেহারে আমাদের একটা কমিটমেন্ট আছে, ‘১২ মাসের ৩৩টি সংস্কার’। আমি মনে করি যে, আজ থেকে আমার দায়িত্ব হবে আমার কমিটমেন্টগুলো রক্ষা করা।

“যেভাবে আমার ভাই-বোনেরা আজকে আমার ওপর আস্থা রেখেছেন, আমি যখন ৩৬৫ দিন দায়িত্ব পালন করব, তারা যেন সেভাবে আস্থা রাখতে পারে, সেই কাজগুলোই করব ইনশাআল্লাহ।”

কোন তিনটি কাজকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আসলে সবগুলো কাজই গুরুত্বপূর্ণ। তিনটি বললে প্রথমে আবাসন, যাতায়াত এবং খাবারের মান বৃদ্ধি করা। এই তিনটা জায়গা নিয়ে আমি বিশেষভাবে ফোকাস করতে চাই।”

বিজয়টি আসলে কাঙ্ক্ষিত মনে করছেন কি আপনারা? আগে থেকে আত্মবিশ্বাস ছিল কি-না আপনার?

ইব্রাহীম বলেন, “আসলে বিজয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হওয়া এটা খুব কঠিন একটা বিষয়। এরকম কিছুই ছিল না। আমরা আমাদের কাজ করে গেছি। প্রত্যেক প্রার্থী তার কাজ করে গেছে। সবাই আশা করেছে নিজে বিজয়ী হবে। “তো আমিও আমার দিক থেকে চেষ্টা করেছি। আমার ভাই-বোনেরা যেদিকে মনে করেছেন, যে তাদের ম্যান্ডেট দেওয়া দরকার, দিয়েছে। আমরা শুধু চাই যেন তাদের এই আমানতকে রক্ষা করতে পারি।”

ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ থেকে জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন সাঈদ বিন হাবিব।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নবনির্বাচিত জিএস বলেন, “আমাদের এই বিজয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের। আমাদের এই বিজয় তখনই পূর্ণাঙ্গ এবং সার্থক বিজয় হবে, যখন আমরা আমাদের ইশতেহার পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।”

তিনি বলেন, “আমরা যে ইশতেহার নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছি, শিক্ষার্থীরা আমাদের যে প্রতিশ্রুতি শুনে আমাদেরকে তাদের নির্ভরতায়, আস্থা রেখেছেন, আমরা যেন সেই আস্থার মূল্যায়ন করতে পারি এবং প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি, সেটাই হবে আমাদের মূল কাজ। আর তখনই হবে আমাদের মূল পরিচয়, তখনই হবে চাকসু জয়ের সার্থকতা।”

দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম পদক্ষেপ কী হবে জানতে চাইলে হাবিব বলেন, “আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। যেহেতু আমাদের প্যানেলের অন্যান্য ভাইয়েরাও আছেন, আমরা বসার পর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেব।”

নবনির্বাচিত এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিকের কাছেও প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। তিনি বলেছেন, এখনই কোনো প্রতিক্রিয়া তিনি জানাতে চান না। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তিনি।

সাড়ে তিন দশক পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির; প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে না পেরে ভরাডুবি হয়েছে ছাত্রদল।

ভিপি হিসেবে শিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ইব্রাহিম হোসেন রনি ৭,৯৮৩ ভোট পেয়ে এবং জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ৮,০৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় ৪,৩৭৪ ভোট এবং জিএস প্রার্থী মো. শাফায়াত হোসেন পেয়েছেন ২,৭২৪ ভোট। ছাত্রশিবিরের নেতারা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতে নির্বাচিত হয়ে ৪৪ বছর পর অভাবনীয় এক জয়ে চাকসুতে প্রত্যাবর্তন করছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মেট্রো রেল চলাচলের নতুন সময়সূচি প্রকাশ

একটি সত্যিকারের স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়তে চাই: চাকসু ভিপি ইব্রাহীম

আপডেট সময় ১১:৫১:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

নির্বাচিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ভিপি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলছেন, তারা একটি সত্যিকারের স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়তে চান। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নির্বাচনে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সংগঠনগুলোকে সহায়তার আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে ফল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচিত ইব্রাহীম বলেন, “আমরা সত্যিকারের স্বপ্নের ক্যাম্পাস তৈরি করতে চাই। নির্বাচনে অনেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। আমরা চাই সবাইকে নিয়ে সুন্দরভাবে চাকসু পরিচালনা করতে।

“চাকসু কতটা নেতৃত্ব তৈরি করবে বা চাকসু আমাকে কতটুকু বেনিফিশারি করবে তার চেয়ে বড় কথা হল শিক্ষার্থীদের উপকারে আসছে কি-না। আমি বলতে চাই, যদি কখনো পথ ভুলে যাই, কখনো ত্রুটি-বিচ্যুতি আপনাদের মনে হয় অবশ্যই আমাদেরকে পরামর্শ দেবেন।”

ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে ইব্রাহীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনি ইশতেহারে আমাদের একটা কমিটমেন্ট আছে, ‘১২ মাসের ৩৩টি সংস্কার’। আমি মনে করি যে, আজ থেকে আমার দায়িত্ব হবে আমার কমিটমেন্টগুলো রক্ষা করা।

“যেভাবে আমার ভাই-বোনেরা আজকে আমার ওপর আস্থা রেখেছেন, আমি যখন ৩৬৫ দিন দায়িত্ব পালন করব, তারা যেন সেভাবে আস্থা রাখতে পারে, সেই কাজগুলোই করব ইনশাআল্লাহ।”

কোন তিনটি কাজকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আসলে সবগুলো কাজই গুরুত্বপূর্ণ। তিনটি বললে প্রথমে আবাসন, যাতায়াত এবং খাবারের মান বৃদ্ধি করা। এই তিনটা জায়গা নিয়ে আমি বিশেষভাবে ফোকাস করতে চাই।”

বিজয়টি আসলে কাঙ্ক্ষিত মনে করছেন কি আপনারা? আগে থেকে আত্মবিশ্বাস ছিল কি-না আপনার?

ইব্রাহীম বলেন, “আসলে বিজয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হওয়া এটা খুব কঠিন একটা বিষয়। এরকম কিছুই ছিল না। আমরা আমাদের কাজ করে গেছি। প্রত্যেক প্রার্থী তার কাজ করে গেছে। সবাই আশা করেছে নিজে বিজয়ী হবে। “তো আমিও আমার দিক থেকে চেষ্টা করেছি। আমার ভাই-বোনেরা যেদিকে মনে করেছেন, যে তাদের ম্যান্ডেট দেওয়া দরকার, দিয়েছে। আমরা শুধু চাই যেন তাদের এই আমানতকে রক্ষা করতে পারি।”

ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ থেকে জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন সাঈদ বিন হাবিব।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নবনির্বাচিত জিএস বলেন, “আমাদের এই বিজয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের। আমাদের এই বিজয় তখনই পূর্ণাঙ্গ এবং সার্থক বিজয় হবে, যখন আমরা আমাদের ইশতেহার পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।”

তিনি বলেন, “আমরা যে ইশতেহার নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছি, শিক্ষার্থীরা আমাদের যে প্রতিশ্রুতি শুনে আমাদেরকে তাদের নির্ভরতায়, আস্থা রেখেছেন, আমরা যেন সেই আস্থার মূল্যায়ন করতে পারি এবং প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করতে পারি, সেটাই হবে আমাদের মূল কাজ। আর তখনই হবে আমাদের মূল পরিচয়, তখনই হবে চাকসু জয়ের সার্থকতা।”

দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম পদক্ষেপ কী হবে জানতে চাইলে হাবিব বলেন, “আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। যেহেতু আমাদের প্যানেলের অন্যান্য ভাইয়েরাও আছেন, আমরা বসার পর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেব।”

নবনির্বাচিত এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিকের কাছেও প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। তিনি বলেছেন, এখনই কোনো প্রতিক্রিয়া তিনি জানাতে চান না। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তিনি।

সাড়ে তিন দশক পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির; প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে না পেরে ভরাডুবি হয়েছে ছাত্রদল।

ভিপি হিসেবে শিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ইব্রাহিম হোসেন রনি ৭,৯৮৩ ভোট পেয়ে এবং জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ৮,০৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় ৪,৩৭৪ ভোট এবং জিএস প্রার্থী মো. শাফায়াত হোসেন পেয়েছেন ২,৭২৪ ভোট। ছাত্রশিবিরের নেতারা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতে নির্বাচিত হয়ে ৪৪ বছর পর অভাবনীয় এক জয়ে চাকসুতে প্রত্যাবর্তন করছে।