চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের শীর্ষ ৩পদের উপর জরীপ করেছে সোচ্চার যেখানে শীর্ষ ৩পদেই এগিয়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। জরীপে ৪১% নারী, ১৩% অমুসলীম এবং ৪% ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার (১৪অক্টোবর) সোচ্চারের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে জরিপটি প্রকাশ করা হয়।
সোচ্চার জানায়, জরীপটি পরিচালনা করা হয়েছে চলতি মাসের ৮ থেকে ১১অক্টোবর। জরীপে দেখা যায়, চাকসু নির্বাচন উপলক্ষ্যে সোচ্চারের জরীপে মোট অংশগ্রহনকারী ছিলো ৮০৩ জন।
এতে ৪৬% শিক্ষার্থী আবাসিক, ২৯% অনাবাসিক যারা ক্যাম্পাসের আশেপাশে বসবাস করে এবং ২৫% অনাবাসিক শিক্ষার্থী যারা শাটলের দূরত্বে শহরে বসবাস করে।
এতে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা ভিপি পদে ছাত্রশিবিরের ইব্রাহিম রনিকে দিবেন ২৩.১% ভোট, ছাত্রদলের সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় ৬.৫%, মতামত নেই ৫৮.৫%। পুরুষদের মধ্যে আনডিসাইডেড ভোটার ৫১%, নারীদের মধ্যে আনডিসাইডেড ৭২%।
জিএস পদে ছাত্রশিবিরের সাঈদ বিন হাবিব পাবেন ২৭.৬%, ছাত্রদলের শাফায়েত হোসেন ৬%, স্বতন্ত্র প্যানেলের রশিদ দিনার পাবেন ৪.৫%, মতামত নেই ৫১%, বাকি অন্যান্য। পুরুষদের মধ্যে আনডিসাইডেড ভোটার ৪৩.৭%, নারীদের মধ্যে ৬৪.৯%।
এজিএস পদে ছাত্রশিবিরের সাজ্জাদ হোসেন মুন্না পাবে ১৪.২%, ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক পাবে ১২.৬%, স্বতন্ত্র শাখাওয়াত হোসেন শিপন পাবে ২.৫%, অন্যান্য ৯.৯%, এবং মতামত নেই ৫৭.২%। পুরুষদের মধ্যে আনডিসাইডেড ভোটার ৪৯.৫%, নারীদের মধ্যে ৭৪.৭%।
জরিপের সংক্ষিপ্ত ফলাফল: ৮৬.৭% শিক্ষার্থী ভোট প্রদান করবেন। ৫৯% শিক্ষার্থী মনে করেন চাকসু নির্বাচনে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের প্রভাব পড়বে। ১৯% শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৪৫% শিক্ষার্থী অন্যকে নির্যাতিত হতে দেখেছেন। ৫৩% শিক্ষার্থী মনে করেন নির্বাচিত চাকসু প্রতিনিধিরা ক্যাম্পাসকে নির্যাতনমুক্ত করতে পারবেন।
৮৭% শিক্ষার্থী বলেছেন- প্যানেল দেখে নয়, যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিবেন। ৮৫% শিক্ষার্থী মনে করেন নেতৃত্বের জন্য ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হওয়া জরুরি।
৪৪% শিক্ষার্থীদের পছন্দ রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র অ্যাক্টিভিস্টদের যৌথ প্যানেল।
জরীপের ফলাফলে আরো দেখা যায়, ৬০% শিক্ষার্থী ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিবেন এমন প্রার্থীদের যারা একই সাথে ভালো ছাত্র ও ভালো অ্যাক্টিভিস্ট।
৭৫% অংশগ্রহনকারী বলেছেন- প্রার্থীর এলাকা, দল, আদর্শ, বা ভোটারের সাথে পূর্ব পরিচয় মূখ্য না, তারা যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিবেন।
৮২% অংশগ্রহনকারীর কাছে প্রার্থীর জেন্ডার বিবেচ্য না। ১৫% প্রাধান্য দিবেন পুরুষ প্রার্থীকে, ৩% নারী প্রার্থীকে।
শিক্ষার্থীরা সোচ্চারকে জানায়, চাকসু প্রতিনিধিদের কাছে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি চাওয়া হচ্ছে আবাসন ও ট্রান্সপোর্ট সমস্যার সমাধান, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চত করা, সততা স্বচ্ছতা ও স্টুডেন্ট ফোকাস চাকসু, খাবারের মান বৃদ্ধি, ও প্রশাসনিক সংস্কার (সেশনজট কমানো, শিক্ষক মূল্যায়ন, লাইব্রেরি সংস্কার, রেজিস্ট্রার ভবনের সার্ভিস ডিজিটাল করা ইত্যাদি)।
যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকলে একজন প্রার্থীকে শিক্ষার্থীরা ভোট দিবেঃ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সততা, ভালো সংগঠক, গুড সেন্স অব হিউমার, ভালো বক্তা, জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে, ভালো শিক্ষার্থী, প্রগতিশীল, ধার্মিক।
যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকলে একজন প্রার্থীকে ভোট দিবে নাঃ ব্যক্তিত্বহীন, মাদকাশক্ত, যৌন কেলেংকারি আছে, ধর্ম্বিদ্বেষী, চাঁদাবাজি বা দূর্নীতিমূলক কাজে জড়িত, সন্ত্রাসী, মিথ্যাবাদী, ছাত্র নির্যাতন করেছে বা করতে পারে এমন প্রার্থী।
আনডিসাইডেড ভোট প্রেজকশানঃ আনডিসাইডেড ভোটাররা আল্টিমেইটলি কাকে ভোট দিবেন সেটা বুঝার জন্য সোচ্চারের গবেষকদল একটা পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। তার ভিত্তিতে সোচ্চারের প্রেডিকশান হচ্ছেঃ আনডিসাইডেড ভোটারদের মধ্য থেকে ছাত্রদল পাবে ২৭%, ছাত্রশিবির পাবে ৪৬.৫%, অন্যান্য প্যানেল পাবে ২৬.৫%।
আনডিসাইডেড ভোটারদের ভোটসহ টোটাল কাস্টেড ভোটের মধ্যে ভিপি পদে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী পাবে ৫০.৩%; ছাত্রদলের প্রার্থী ভোট পাবে- ২২.৩%, বাকি ভোট অন্যান্য প্রার্থীরা পাবে।
আনডিসাইডেড ভোটারদের ভোটসহ টোটাল কাস্টেড ভোটের মধ্যে জিএস পদে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী পাবে ৫১.৩০%; ছাত্রদলের প্রার্থী ভোট পাবে- ১৭.৪০%, বাকি ভোট অন্যান্য প্রার্থীরা পাবে।
আনডিসাইডেড ভোটারদের ভোটসহ টোটাল কাস্টেড ভোটের মধ্যে এজিএস পদে ছাত্রশিবিরের প্রার্থী পাবে ৪০.৮০%; ছাত্রদলের প্রার্থী ভোট পাবে- ২৮.০৪%, বাকি ভোট অন্যান্য প্রার্থীরা পাবে।