দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় দুই শিবিরকর্মী হত্যা মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম (৫০) ও ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক (৬৫)সহ পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
রোববার (১২ অক্টোবর ২০২৫) দুপুর আড়াইটায় দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইব্রাহিম আলীর আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
দিনাজপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আদালতের নির্দেশে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পাঁচ নেতাকর্মীকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আটক পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী হলেন— বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম (৫০) ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল খালেক (৬৫) উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা (৫২) মো. আমিনুল ইসলাম (৫৫) মো. রেজাউল করিম শেখ (৪৮)
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে বীরগঞ্জ উপজেলার ভেলাপুকুর এলাকায় দুজন শিবিরকর্মী—সালাউদ্দিন (১৬) ও আসাদুল হক (১৫)—কে হত্যা করা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তৎকালীন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপালের নির্দেশে তার অনুসারীরা ওই দুই কিশোরকে ধরে ফেলে এবং “শিবির শিবির” বলে চিৎকার করে বেদম প্রহার করে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকরা দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সালাউদ্দিন সেদিনই মারা যায়, আর পরদিন আসাদুলের মৃত্যু হয়।
ঘটনার সময় পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় পৃথক দু’টি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা করা হয়।
দীর্ঘ ৯ বছর পর, ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সালাউদ্দিনের মা জহুরা বেগম বাদী হয়ে বীরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রাক্তন এমপি মনোরঞ্জনশীল গোপালসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও প্রায় ১০০ জনকে আসামি করা হয়।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল গফুর বলেন, “মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। ইতোমধ্যে কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।”