ঢাকা ০৩:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ১০৪ সদস্য নিয়ে জাতিসংঘে পিকনিক করতে গেছেন প্রধান উপদেষ্টা: মেজর হাফিজ Logo একটি মহল খাগড়াছড়িতে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo চবির ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়াই আমার লক্ষ্য: সাক্ষাৎকারে দ্বীপা Logo সুন্দরগঞ্জে দুর্গোৎসবে ২শ ৭০টি পরিবারের মাঝে জামায়াতের উপহার বিতরণ  Logo জাতীয় পার্টির রওশনপন্থী মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ গ্রেপ্তার Logo সাবেক দুই এমপিসহ আ.লীগের ১৩ নেতাকর্মী আটক Logo খাগড়াছড়িতে চলমান অবরোধ কর্মসূচি শিথিলের ঘোষণা Logo খাগড়াছড়িতে চলমান অবরোধ কর্মসূচি শিথিলের ঘোষণা Logo চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ Logo টাঙ্গাইলে যুবদল নেতার নেতৃত্বে বসতবাড়িতে হামলা ভিডিও ভাইরাল
চাকসু নির্বাচনের সাক্ষাৎকার-১

চবির ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়াই আমার লক্ষ্য: সাক্ষাৎকারে দ্বীপা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (চাকসু) ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল থেকে ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে ভোটের মাঠে লড়াই করছেন নাহিমা আক্তার দ্বীপা। একই সাথে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি ছাত্রীসংস্থার সেক্রেটারি। ছাত্রীদের আবাসন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপদ ক্যাম্পাসসহ নানা বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন ঢাকাভয়েস২৪.কমের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আব্দুল্লাহ আল নাঈম।

১. ঢাকাভয়েস২৪.কম: মিস নাহিমা আক্তার দ্বীপা, বাংলাদেশের খবরের পক্ষ থেকে আপনাকে শুভকামনা। কেমন আছেন আপনি?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

২. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চাকসুতে ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে কেন লড়ছেন। নির্বাচনি প্রচারে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সুখে-দুঃখে, উন্নতি-অগ্রগতি ও কল্যাণে পাশে থাকতে চাই, তাদের জন্য কাজ করতে চাই। এই আঙিনায় প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে ছাত্রীদের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা এবং চ্যালেঞ্জের জায়গাগুলো সমাধান করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। আলহামদুলিল্লাহ, নির্বাচনি প্রচারে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। আমাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতা, আমাদেরকে জানার আগ্রহ ও কৌতূহল এবং আমাদের প্রতি তাদের দোয়া ও শুভকামনা— এগুলো সত্যিই আমাদের অভিভূত করে চলেছে।

৩. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনি তো ইসলামি ছাত্রশিবির বা তাদের রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন না। কিন্তু এবার সংগঠনটির প্যানেলে এসেছেন। এটার পেছনে কোনো কৌশল বা ভাবনা ছিল?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: হ্যাঁ, আমি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে ছিলাম না। তবে ছাত্রীসংস্থার সাথে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করছি। আপনি জেনে থাকবেন আমাদের আদর্শ, চিন্তা ও কাজের ধরন অনেকখানি মেলে। সেই জায়গা থেকে আমি ইসলামি ছাত্রশিবিরকে কাজের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীবান্ধব, শিক্ষার্থীদের জন্য যুগোপযোগী, নিরাপদ ও সুরক্ষিত ক্যাম্পাস বিনির্মাণে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা সংগঠন হিসেবে পেয়েছি। সেই চিন্তা থেকে আমি তাদের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছি। কৌশল বলতে, আমি মনে করি ছাত্রশিবির বৃহত্তর একটি সংগঠন, আমি যদি তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমার কাজ করতে পারি এবং কাজের ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে পারি তাহলে আমার পরিধি বিস্তৃত হবে। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীদেরকে রিচ করতে পারব। অর্থাৎ এখানে ছাত্রশিবিরের যে আলাদা শক্তি আছে তাদের জনবল, কৌশল, মেধা, জ্ঞান, যোগ্যতার যে সম্মিলন এটা অন্য দলগুলোতে দেখিনি। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে, তাদের সাথে যুক্ত হলে আমার কাজের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

৪. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চবিতে ৫টি নারী হল রয়েছে। চাহিদার তুলনায় এগুলো অনেক কম। দূরদূরান্তের জেলা থেকে ক্যাম্পাসে এসে বাহিরে থেকে বেশিসংখ্যক নারী পড়াশোনা করছেন। নারীদের হল বাড়ানো এবং আবাসন নিশ্চিতে আপনার ভাবনা কি?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: নির্বাচিত হলে আমাদের সময়সীমা থাকবে ১ বছর। এক বছরে হল নির্মাণ কাজ শেষ করা দুরূহ কাজ তবে আমি এতটুকু আশাবাদী শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যত সমাধানে এক্সটেনশন নির্মাণ, স্বল্প ভাড়ায় কটেজ মেসের ব্যবস্থা করব। আর স্থায়ী আবাসন সংকট দূরীকরণে আবাসিক হল নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সাথে কার্যকরী এবং ধারাবাহিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরি করে যাব।

৫. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আমরা দেখেছি, কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার জন্য অনেক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ভোটের লড়াইয়ে জিতলে তাদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় কতটা উদ্যোগী হবেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের প্রতি খুবই সচেতন। গত ১০ই সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’কে প্রতিপাদ্য রেখে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রেখে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন করেছি আলহামদুলিল্লাহ। নির্বাচিত হলে হলগুলোতে ছাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিসিন কর্নার, পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা, মেডিক্যাল টিম গঠন এবং ক্যাম্প আয়োজন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালের চিকিৎসা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন সাধন করব ইনশাল্লাহ।

৬. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চবির বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হলে থাকেন না, ক্যাম্পাসের বাহিরে বা নগরে থাকেন। কারণ, আবাসনের তীব্র সংকট। তাই ধারণা করা হচ্ছে, অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাই নির্ধারণ করবে চাকসুর ফল। ভোট চেয়ে তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন কি? তাদের জন্য কোনো ইশতাহার আছে কি না?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: দেখুন, অধিকার/দাবি/সমস্যা সমাধানকল্পে আমার কাছে চবির প্রত্যেক ছাত্রীই গুরুত্ব বহন করে, আবাসিক হোক বা অনাবাসিক। তাই সবার কাছে সমান গুরুত্ব সহকারেই পৌঁছাতে চাই, চেষ্টা করে যাচ্ছি। ছাত্রীদের প্রতিটি বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য অধিকার, চাওয়া-পাওয়াই আমার ইশতাহার।

৭. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনার নিজস্ব সংগঠন তো সব সময় একটি আইডিওলজি তথা ইসলামি পর্দায় বিশ্বাস করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব ও নন-হিজাব সবাই বাস করেন। সেই জায়গা থেকে প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আপনার ভূমিকা কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: প্রার্থী হিসেবে আমি যথেষ্ট ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আমার আদর্শ যদিও ইসলামি পর্দায় (নারীদের সুরক্ষা প্রাচীর) বিশ্বাস করে তবে আপনারা যদি সাম্প্রতিক সময় পর্যবেক্ষণ করে থাকেন তাহলে এই প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক নয়। হিজাব কিন্তু আমাদের কাজ, চিন্তা, বুদ্ধি বিবেচনায়, মেধার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কখনও বাঁধা নয় বরং সচেতন শিক্ষার্থীরা জানে পোশাক কখনও যোগ্যতা বিচারের মাপকাঠি না। যেটা আমরা ডাকসু, জাকসুতেও দেখে আসছি। তাছাড়া আমরা জুলাই আন্দোলনে অসংখ্য হিজাবি ছাত্রীদের এগিয়ে আসতে দেখেছি তাদের এগিয়ে আসা তো নন-হিজাবি সাধারণ ছাত্রীদেরকে পিছিয়ে দেয়নি। তাছাড়াও প্রচারণায় খেয়াল করেছি সাধারণ ছাত্রীরা আমাদের সাদরে গ্রহণ করছে।

৮. ঢাকাভয়েস২৪.কম: প্রচারণায় কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন কি? অনলাইন কিংবা অফলাইনে শ্লাডশেমিং বা অন্য কোনো হয়রানির শিকার হচ্ছেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য বাঁধার সম্মুখীন হইনি। তবে অনলাইনে আমি এবং অন্যান্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে খেয়াল করছিলাম বিকৃত মানসিকতার কিছু ব্যক্তি তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন। তাদের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং কর্তৃপক্ষ বরাবর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।

৯. ঢাকাভয়েস২৪.কম: এবারের চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে কোনো ধরনের আশঙ্কার জায়গা দেখছেন কি না?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: না, এখন পর্যন্ত কোনো আশঙ্কার জায়গা আমার কাছে দৃশ্যমান হয়নি। প্রার্থী, ভোটার এবং প্রশাসনের সুন্দর সমন্বয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামনে একটা চমৎকার নির্বাচন পাবো বলে আশা রাখছি। ইনশাল্লাহ।

১০. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চাকসু নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন পেতে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: চাকসু নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন পেতে আমরা তাদের বাস্তবিক সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করছি, কথাগুলো নোট করছি। সমাধানের পদ্ধতি কেমন চাচ্ছে, প্রশাসনের পূর্ব পদক্ষেপগুলো সন্তোষজনক ছিলো কিনা এবং তারা প্রশাসন থেকে কি ধরনের সমাধান আশা করছেন এই বিষয়গুলো জানার এবং বুঝার চেষ্টা করছি। তাদের মনস্তাত্ত্বিক ভাবনাগুলো ধারণ করছি। ডোর টু ডোর, পারসন টু পারসন সাক্ষাৎ করছি। লিফলেট বিতরণ করছি। সেই আলোকে সমাধানের কিছু রোডম্যাপ সামনে আনার চেষ্টা করছি।

১১. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনাদের শক্তির জায়গা কোনগুলো আর দুর্বলতার জায়গা কোনগুলো?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আমি বিশ্বাস করি একজন প্রার্থীর শক্তির জায়গা তার সততা, বিশ্বাস এবং কল্যাণকামীতা। এই তিন গুণের সমাহার ঘটলে ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা দিয়েও ব্যক্তি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। এগুলোই আমার শক্তি এবং পুঁজি।

১২. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনি ও আপনাদের প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আমরা আমাদের জয়ের ব্যাপারে পূর্ণ আশাবাদী ইনশাল্লাহ।

১৩. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আপনাকেও ধন্যবাদ।

১০৪ সদস্য নিয়ে জাতিসংঘে পিকনিক করতে গেছেন প্রধান উপদেষ্টা: মেজর হাফিজ

চাকসু নির্বাচনের সাক্ষাৎকার-১

চবির ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়াই আমার লক্ষ্য: সাক্ষাৎকারে দ্বীপা

আপডেট সময় ০১:৩৫:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (চাকসু) ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল থেকে ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে ভোটের মাঠে লড়াই করছেন নাহিমা আক্তার দ্বীপা। একই সাথে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি ছাত্রীসংস্থার সেক্রেটারি। ছাত্রীদের আবাসন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপদ ক্যাম্পাসসহ নানা বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন ঢাকাভয়েস২৪.কমের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আব্দুল্লাহ আল নাঈম।

১. ঢাকাভয়েস২৪.কম: মিস নাহিমা আক্তার দ্বীপা, বাংলাদেশের খবরের পক্ষ থেকে আপনাকে শুভকামনা। কেমন আছেন আপনি?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

২. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চাকসুতে ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে কেন লড়ছেন। নির্বাচনি প্রচারে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সুখে-দুঃখে, উন্নতি-অগ্রগতি ও কল্যাণে পাশে থাকতে চাই, তাদের জন্য কাজ করতে চাই। এই আঙিনায় প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে ছাত্রীদের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা এবং চ্যালেঞ্জের জায়গাগুলো সমাধান করতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। আলহামদুলিল্লাহ, নির্বাচনি প্রচারে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। আমাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতা, আমাদেরকে জানার আগ্রহ ও কৌতূহল এবং আমাদের প্রতি তাদের দোয়া ও শুভকামনা— এগুলো সত্যিই আমাদের অভিভূত করে চলেছে।

৩. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনি তো ইসলামি ছাত্রশিবির বা তাদের রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন না। কিন্তু এবার সংগঠনটির প্যানেলে এসেছেন। এটার পেছনে কোনো কৌশল বা ভাবনা ছিল?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: হ্যাঁ, আমি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে ছিলাম না। তবে ছাত্রীসংস্থার সাথে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করছি। আপনি জেনে থাকবেন আমাদের আদর্শ, চিন্তা ও কাজের ধরন অনেকখানি মেলে। সেই জায়গা থেকে আমি ইসলামি ছাত্রশিবিরকে কাজের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীবান্ধব, শিক্ষার্থীদের জন্য যুগোপযোগী, নিরাপদ ও সুরক্ষিত ক্যাম্পাস বিনির্মাণে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা সংগঠন হিসেবে পেয়েছি। সেই চিন্তা থেকে আমি তাদের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছি। কৌশল বলতে, আমি মনে করি ছাত্রশিবির বৃহত্তর একটি সংগঠন, আমি যদি তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমার কাজ করতে পারি এবং কাজের ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে পারি তাহলে আমার পরিধি বিস্তৃত হবে। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীদেরকে রিচ করতে পারব। অর্থাৎ এখানে ছাত্রশিবিরের যে আলাদা শক্তি আছে তাদের জনবল, কৌশল, মেধা, জ্ঞান, যোগ্যতার যে সম্মিলন এটা অন্য দলগুলোতে দেখিনি। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে, তাদের সাথে যুক্ত হলে আমার কাজের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

৪. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চবিতে ৫টি নারী হল রয়েছে। চাহিদার তুলনায় এগুলো অনেক কম। দূরদূরান্তের জেলা থেকে ক্যাম্পাসে এসে বাহিরে থেকে বেশিসংখ্যক নারী পড়াশোনা করছেন। নারীদের হল বাড়ানো এবং আবাসন নিশ্চিতে আপনার ভাবনা কি?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: নির্বাচিত হলে আমাদের সময়সীমা থাকবে ১ বছর। এক বছরে হল নির্মাণ কাজ শেষ করা দুরূহ কাজ তবে আমি এতটুকু আশাবাদী শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যত সমাধানে এক্সটেনশন নির্মাণ, স্বল্প ভাড়ায় কটেজ মেসের ব্যবস্থা করব। আর স্থায়ী আবাসন সংকট দূরীকরণে আবাসিক হল নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সাথে কার্যকরী এবং ধারাবাহিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরি করে যাব।

৫. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আমরা দেখেছি, কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার জন্য অনেক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ভোটের লড়াইয়ে জিতলে তাদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় কতটা উদ্যোগী হবেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের প্রতি খুবই সচেতন। গত ১০ই সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’কে প্রতিপাদ্য রেখে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রেখে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন করেছি আলহামদুলিল্লাহ। নির্বাচিত হলে হলগুলোতে ছাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিসিন কর্নার, পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা, মেডিক্যাল টিম গঠন এবং ক্যাম্প আয়োজন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালের চিকিৎসা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন সাধন করব ইনশাল্লাহ।

৬. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চবির বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হলে থাকেন না, ক্যাম্পাসের বাহিরে বা নগরে থাকেন। কারণ, আবাসনের তীব্র সংকট। তাই ধারণা করা হচ্ছে, অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাই নির্ধারণ করবে চাকসুর ফল। ভোট চেয়ে তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন কি? তাদের জন্য কোনো ইশতাহার আছে কি না?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: দেখুন, অধিকার/দাবি/সমস্যা সমাধানকল্পে আমার কাছে চবির প্রত্যেক ছাত্রীই গুরুত্ব বহন করে, আবাসিক হোক বা অনাবাসিক। তাই সবার কাছে সমান গুরুত্ব সহকারেই পৌঁছাতে চাই, চেষ্টা করে যাচ্ছি। ছাত্রীদের প্রতিটি বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য অধিকার, চাওয়া-পাওয়াই আমার ইশতাহার।

৭. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনার নিজস্ব সংগঠন তো সব সময় একটি আইডিওলজি তথা ইসলামি পর্দায় বিশ্বাস করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজাব ও নন-হিজাব সবাই বাস করেন। সেই জায়গা থেকে প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আপনার ভূমিকা কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: প্রার্থী হিসেবে আমি যথেষ্ট ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আমার আদর্শ যদিও ইসলামি পর্দায় (নারীদের সুরক্ষা প্রাচীর) বিশ্বাস করে তবে আপনারা যদি সাম্প্রতিক সময় পর্যবেক্ষণ করে থাকেন তাহলে এই প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক নয়। হিজাব কিন্তু আমাদের কাজ, চিন্তা, বুদ্ধি বিবেচনায়, মেধার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কখনও বাঁধা নয় বরং সচেতন শিক্ষার্থীরা জানে পোশাক কখনও যোগ্যতা বিচারের মাপকাঠি না। যেটা আমরা ডাকসু, জাকসুতেও দেখে আসছি। তাছাড়া আমরা জুলাই আন্দোলনে অসংখ্য হিজাবি ছাত্রীদের এগিয়ে আসতে দেখেছি তাদের এগিয়ে আসা তো নন-হিজাবি সাধারণ ছাত্রীদেরকে পিছিয়ে দেয়নি। তাছাড়াও প্রচারণায় খেয়াল করেছি সাধারণ ছাত্রীরা আমাদের সাদরে গ্রহণ করছে।

৮. ঢাকাভয়েস২৪.কম: প্রচারণায় কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন কি? অনলাইন কিংবা অফলাইনে শ্লাডশেমিং বা অন্য কোনো হয়রানির শিকার হচ্ছেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য বাঁধার সম্মুখীন হইনি। তবে অনলাইনে আমি এবং অন্যান্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে খেয়াল করছিলাম বিকৃত মানসিকতার কিছু ব্যক্তি তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে থাকেন। তাদের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং কর্তৃপক্ষ বরাবর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।

৯. ঢাকাভয়েস২৪.কম: এবারের চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে কোনো ধরনের আশঙ্কার জায়গা দেখছেন কি না?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: না, এখন পর্যন্ত কোনো আশঙ্কার জায়গা আমার কাছে দৃশ্যমান হয়নি। প্রার্থী, ভোটার এবং প্রশাসনের সুন্দর সমন্বয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামনে একটা চমৎকার নির্বাচন পাবো বলে আশা রাখছি। ইনশাল্লাহ।

১০. ঢাকাভয়েস২৪.কম: চাকসু নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন পেতে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: চাকসু নির্বাচনে ভোটারদের সমর্থন পেতে আমরা তাদের বাস্তবিক সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করছি, কথাগুলো নোট করছি। সমাধানের পদ্ধতি কেমন চাচ্ছে, প্রশাসনের পূর্ব পদক্ষেপগুলো সন্তোষজনক ছিলো কিনা এবং তারা প্রশাসন থেকে কি ধরনের সমাধান আশা করছেন এই বিষয়গুলো জানার এবং বুঝার চেষ্টা করছি। তাদের মনস্তাত্ত্বিক ভাবনাগুলো ধারণ করছি। ডোর টু ডোর, পারসন টু পারসন সাক্ষাৎ করছি। লিফলেট বিতরণ করছি। সেই আলোকে সমাধানের কিছু রোডম্যাপ সামনে আনার চেষ্টা করছি।

১১. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনাদের শক্তির জায়গা কোনগুলো আর দুর্বলতার জায়গা কোনগুলো?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আমি বিশ্বাস করি একজন প্রার্থীর শক্তির জায়গা তার সততা, বিশ্বাস এবং কল্যাণকামীতা। এই তিন গুণের সমাহার ঘটলে ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা দিয়েও ব্যক্তি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। এগুলোই আমার শক্তি এবং পুঁজি।

১২. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আপনি ও আপনাদের প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আমরা আমাদের জয়ের ব্যাপারে পূর্ণ আশাবাদী ইনশাল্লাহ।

১৩. ঢাকাভয়েস২৪.কম: আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

নাহিমা আক্তার দ্বীপা: আপনাকেও ধন্যবাদ।