ঢাকা ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

লক্ষ্মীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গৃহবধুকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, আহত ৩

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ কমপক্ষে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় হামলাকারীরা নগদ ৬৫,৫০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বাদী মোক্তার আহমেদ বাদী হয়ে রামগতি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব চরসীতা মাস্টারপাড়ায় মোক্তার আহমেদ তার সম্পত্তিতে একটি আধা-পাকা টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন। কিন্তু গত ৩১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে বিবাদীরা জোরপূর্বক ওই ঘরে প্রবেশ করে দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় মোক্তার আহমেদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ১৭৪) করেন।

শনিবার রাতে মোক্তার আহমেদ তার পরিবার ও ছেলে সামাদকে নিয়ে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাদের ঘরের কাছে পৌঁছালে ভেতরে শব্দ শুনতে পান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিবাদীরা একযোগে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলায় ১ নম্বর বিবাদী নুরুল আলম (আলমগীর) দা দিয়ে ১ নম্বর সাক্ষী সুলতানা আক্তার পান্নার মাথায় কোপ দেন, এতে তার মাথা ফেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। এতে ছয়টি সেলাই লাগে। ২ নম্বর বিবাদী আব্দুল মজিদ সাবল দিয়ে ২ নম্বর সাক্ষী মির সাব্বিরের ডান চোখের নিচে আঘাত করলে চামড়া কেটে যায় এবং তিনটি সেলাই দিতে হয়। মির সাব্বির মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আব্দুল মজিদ তার কাছ থেকে সিনজেনটা কোম্পানির নগদ ৬৯,৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এছাড়া, ৩ নম্বর বিবাদী মোঃ হাসান ৩ নম্বর সাক্ষী রহমত এলাহী সালাম-এর ডান পায়ের গোড়ালিতে কোদাল দিয়ে আঘাত করলে তার পায়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়। ৪, ৫, ৬ এবং ৭ নম্বর বিবাদী, যথাক্রমে আব্দুস সহিদ, মোঃ সুমন, বিবি মরিয়ম এবং তাছলিমা বেগম লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। ৮ নম্বর বিবাদী নূর নাহার বেগম হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র এগিয়ে দেন।

আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এবং এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের কে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসা চলমান এমতাবস্থায় মোক্তার আহমেদ বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে ১ নম্বর বিবাদী মোঃ নুরুল আলমের (আলমগীর) সঙ্গে “ঢাকা ভয়েস” যোগাযোগের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

পরবর্তীতে ৫ নম্বর বিবাদী সুমনের সাথে “ঢাকা ভয়েস” যোগাযোগ করলে, সুমন অভিযোগ অস্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস” কে বলে তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে পাশানো হয়েছে। সুমন বলে ঘটনার দিন সন্ধ্যা চিৎকার ও কান্নার শব্দ শুনে তিনি দৌঁড়ে এসে দেখে ঘরের মধ্যে মারামারি চলছে, নুরুল আলম (আলমগীর) ও মোক্তার আহমেদ এর পরিবারের মধ্যে একপর্যায়ে মোক্তার আহমেদ এর বউ সুলতানা আক্তার পান্নার মাথা পেটে মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে। সাব্বির মাটিতে পড়ে আছে আহত অবস্থায় আর
আমার চাচাতো ভাই আলমগীরও আহত।আমি একা মানুষ এটা দেখে আমি ভয়ে সেখান থেকে একটু দূরে সরে যাই। মারামারি শেষ হওয়ার ৩০ মিনিট পর সাব্বিরের বড় ভাই মিলাদ হোসেন ফাহাদ আর সাজ্জাদ হোসেন রাহাত মটর সাইকেল চালিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় তারপর তার ছোট্ট ভাই সাব্বিরকে আহত অবস্থায় সেখান থেকে তুলে মটর সাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মিলাদ হোসেন ফাহাদ ও সাজ্জাদ হোসেন রাহাদ এই মারামারির সাথে জড়িত ছিল কিনা “ঢাকা ভয়েস” সুমনের কাছে এই বিষয় জানতে চাইলে, সুমন বলে তারা মারামারির সময় ঘটনাস্থলে ছিল না। পরে এসে তার ছোট্ট ভাই সাব্বির কে নিয়ে হাসপাতালে গেছে আমি এতটুকু দেখেছি।

সুমন “ঢাকা ভয়েস” কে আরো বলে, আমরা আমার চাচা, চাচতো ভাই মিলে, রামগতি থানায় একটি মামলা করেছি, মোক্তার আহমেদ এর পরিবারের বিরুদ্ধে। আমাদের মামলা করতে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে লিন্টু কাকা। এই মামলায় মিলাদ হোসেন ফাহাদ কে আমরা আসামি করতে চাইনি তার নাম দিয়েছে আরসি গো বাড়ির লিন্টু কাকা।

এই বিষয়ে রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারি হয়েছে। উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে, এবিষয়ে মোক্তার আহমদ ও মরিয়ম বেগম উভয় পক্ষই থানায় মামলা করেছে “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত শুরু হয়েছে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে”

গণমাধ্যম কর্মীর এক প্রশ্নের জবাবে, সাজ্জাদ হোসেন রাহাদকে কেনো মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি করা হয়নি এবিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মো. কবির হোসেন “ঢাকা ভয়ের ” কে বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখেছি এই ঘটনার সাথে সাজ্জাদ হোসেন রাহাদের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। সাজ্জাদ হোসেন রাহাদ এই ঘটনা সাথে জড়িত নয়। এই কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেওয়া হয়নি।

এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গৃহবধুকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, আহত ৩

লক্ষ্মীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গৃহবধুকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা, আহত ৩

আপডেট সময় ০১:০০:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ কমপক্ষে তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় হামলাকারীরা নগদ ৬৫,৫০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বাদী মোক্তার আহমেদ বাদী হয়ে রামগতি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পূর্ব চরসীতা মাস্টারপাড়ায় মোক্তার আহমেদ তার সম্পত্তিতে একটি আধা-পাকা টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন। কিন্তু গত ৩১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে বিবাদীরা জোরপূর্বক ওই ঘরে প্রবেশ করে দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় মোক্তার আহমেদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ১৭৪) করেন।

শনিবার রাতে মোক্তার আহমেদ তার পরিবার ও ছেলে সামাদকে নিয়ে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাদের ঘরের কাছে পৌঁছালে ভেতরে শব্দ শুনতে পান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিবাদীরা একযোগে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলায় ১ নম্বর বিবাদী নুরুল আলম (আলমগীর) দা দিয়ে ১ নম্বর সাক্ষী সুলতানা আক্তার পান্নার মাথায় কোপ দেন, এতে তার মাথা ফেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। এতে ছয়টি সেলাই লাগে। ২ নম্বর বিবাদী আব্দুল মজিদ সাবল দিয়ে ২ নম্বর সাক্ষী মির সাব্বিরের ডান চোখের নিচে আঘাত করলে চামড়া কেটে যায় এবং তিনটি সেলাই দিতে হয়। মির সাব্বির মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আব্দুল মজিদ তার কাছ থেকে সিনজেনটা কোম্পানির নগদ ৬৯,৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এছাড়া, ৩ নম্বর বিবাদী মোঃ হাসান ৩ নম্বর সাক্ষী রহমত এলাহী সালাম-এর ডান পায়ের গোড়ালিতে কোদাল দিয়ে আঘাত করলে তার পায়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়। ৪, ৫, ৬ এবং ৭ নম্বর বিবাদী, যথাক্রমে আব্দুস সহিদ, মোঃ সুমন, বিবি মরিয়ম এবং তাছলিমা বেগম লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। ৮ নম্বর বিবাদী নূর নাহার বেগম হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র এগিয়ে দেন।

আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এবং এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের কে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসা চলমান এমতাবস্থায় মোক্তার আহমেদ বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে ১ নম্বর বিবাদী মোঃ নুরুল আলমের (আলমগীর) সঙ্গে “ঢাকা ভয়েস” যোগাযোগের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

পরবর্তীতে ৫ নম্বর বিবাদী সুমনের সাথে “ঢাকা ভয়েস” যোগাযোগ করলে, সুমন অভিযোগ অস্বীকার করে “ঢাকা ভয়েস” কে বলে তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে পাশানো হয়েছে। সুমন বলে ঘটনার দিন সন্ধ্যা চিৎকার ও কান্নার শব্দ শুনে তিনি দৌঁড়ে এসে দেখে ঘরের মধ্যে মারামারি চলছে, নুরুল আলম (আলমগীর) ও মোক্তার আহমেদ এর পরিবারের মধ্যে একপর্যায়ে মোক্তার আহমেদ এর বউ সুলতানা আক্তার পান্নার মাথা পেটে মাথা থেকে রক্ত বের হচ্ছে। সাব্বির মাটিতে পড়ে আছে আহত অবস্থায় আর
আমার চাচাতো ভাই আলমগীরও আহত।আমি একা মানুষ এটা দেখে আমি ভয়ে সেখান থেকে একটু দূরে সরে যাই। মারামারি শেষ হওয়ার ৩০ মিনিট পর সাব্বিরের বড় ভাই মিলাদ হোসেন ফাহাদ আর সাজ্জাদ হোসেন রাহাত মটর সাইকেল চালিয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় তারপর তার ছোট্ট ভাই সাব্বিরকে আহত অবস্থায় সেখান থেকে তুলে মটর সাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মিলাদ হোসেন ফাহাদ ও সাজ্জাদ হোসেন রাহাদ এই মারামারির সাথে জড়িত ছিল কিনা “ঢাকা ভয়েস” সুমনের কাছে এই বিষয় জানতে চাইলে, সুমন বলে তারা মারামারির সময় ঘটনাস্থলে ছিল না। পরে এসে তার ছোট্ট ভাই সাব্বির কে নিয়ে হাসপাতালে গেছে আমি এতটুকু দেখেছি।

সুমন “ঢাকা ভয়েস” কে আরো বলে, আমরা আমার চাচা, চাচতো ভাই মিলে, রামগতি থানায় একটি মামলা করেছি, মোক্তার আহমেদ এর পরিবারের বিরুদ্ধে। আমাদের মামলা করতে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে লিন্টু কাকা। এই মামলায় মিলাদ হোসেন ফাহাদ কে আমরা আসামি করতে চাইনি তার নাম দিয়েছে আরসি গো বাড়ির লিন্টু কাকা।

এই বিষয়ে রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি “ঢাকা ভয়েস” কে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারি হয়েছে। উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে, এবিষয়ে মোক্তার আহমদ ও মরিয়ম বেগম উভয় পক্ষই থানায় মামলা করেছে “আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত শুরু হয়েছে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে”

গণমাধ্যম কর্মীর এক প্রশ্নের জবাবে, সাজ্জাদ হোসেন রাহাদকে কেনো মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি করা হয়নি এবিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মো. কবির হোসেন “ঢাকা ভয়ের ” কে বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখেছি এই ঘটনার সাথে সাজ্জাদ হোসেন রাহাদের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। সাজ্জাদ হোসেন রাহাদ এই ঘটনা সাথে জড়িত নয়। এই কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেওয়া হয়নি।

এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।