ঢাকা ০৫:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নালিতাবাড়ীতে ৫০০ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে দোস্ত এইডের খাদ্য সহায়তা বিতরণ Logo হাতিয়ায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী কে সিঙ্গেল ডিজিট সংবর্ধনা দিল ছাত্রশিবির Logo পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে অনশন, অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী Logo বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা, বজ্রসহ ভারী বর্ষণের আভাস Logo যারা আগে আ‘মী লীগে ছিলেন, তাদের বিএনপিতে আসা নিয়ে কেউ যেন হাসি-ঠাট্টা না করে Logo বিএনপি ভাঙার মিশন:জিএম কাদেরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে এনায়েত Logo চুয়াডাঙ্গায় পূর্ব শক্রতার জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা Logo যারা হাসিনার সঙ্গে আঁতাত করে চলছিলো তারা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : সরওয়ার Logo কুমিল্লায় চোর সন্দেহে যুবককে আটকে কুকুর লেলিয়ে নির্যাতন Logo যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণে একই পরিবারের দগ্ধ ৪ জন

পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে অনশন, অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল বিকেল থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরে তারা এই অনশন করছেন। ১৯ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তারা সেখানে অবস্থান করছেন।

অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন সমাজকর্ম বিভাগের ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী ইস্পাহানি এবং আরবি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রমজানুল মোবারক।

আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও তাদের অনশনে দেখা যায়। গতকাল বিকেল ৫টায় এককভাবে অনশনে বসেন সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম। এরপর তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী যোগ দেন।

এ সময় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সজিবুর রহমান বলেছেন, আমরা গতকাল রাত থেকে বসে আছি, রোদের মধ্যে পুড়ছি, বৃষ্টিতে ভিজছি, মশার কামড় খাচ্ছি। আমাদের শরীরের কী অবস্থা তা দেখার কেউ নেই। অনেকেই স্লোগান দিয়েছিল ‘রক্ত লাগলে রক্ত নে, পোষ্য কোটার কবর দে’। তারা তাদের রক্ত দেওয়া শেষ করেছে, কিন্তু আমাদের রক্ত দেওয়া এখনো শেষ হয়নি। আমরা আছি। যতক্ষণ না সমাধান হবে, আমরা থাকব। আমাদের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না, এখনও নেই। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে এখানে আছি এবং থাকব।

সমাজকর্ম বিভাগের ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা বলেন, আমার ভাইয়েরা গতকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজছে, রোদের মধ্যে পুড়ছে, মশার কামড়ে কষ্ট পাচ্ছে তাদের খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ নেই। প্রশাসনের নামে এই প্রহসন আর কতদিন চলবে? যেখানে আমরা ৬০-৬৫ পেয়ে ভর্তি হতে পারি না, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা নামমাত্র পাশ নম্বর পেয়ে কীভাবে ভর্তি হয়?

তিনি আরও বলেছেন, তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে এতটা অনিরাপদ অনুভব করেন কেন? তাদের কি আত্মবিশ্বাস নেই যে সন্তানরা যোগ্যতায় ভর্তি হতে পারবে? এই ভিক্ষাবৃত্তি আর কতদিন চলবে? এখানে যারা অনশনে বসেছে, সবাই তাদের মায়ের কলিজার টুকরা। তারা যে এভাবে নিপীড়িত হচ্ছে তা দেখার কি কেউ নেই?

দুপুর ১টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের পাশে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক। তিনি বলেন, আমি মূলত ছাত্রদের খোঁজ নিতে এসেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি, তারা খুব কষ্টে আছে। তাই আমি নিজেও তাদের সঙ্গে অনশনে যোগ দিয়েছি। ইতোমধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে, আমরা তাদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে পাঠিয়েছি।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা চালু করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা যদি স্নাতক প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেয়ে পাশ করে, তবে তারা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

নালিতাবাড়ীতে ৫০০ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে দোস্ত এইডের খাদ্য সহায়তা বিতরণ

পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে অনশন, অসুস্থ দুই শিক্ষার্থী

আপডেট সময় ০২:০৪:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল বিকেল থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরে তারা এই অনশন করছেন। ১৯ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তারা সেখানে অবস্থান করছেন।

অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন সমাজকর্ম বিভাগের ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী ইস্পাহানি এবং আরবি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রমজানুল মোবারক।

আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও তাদের অনশনে দেখা যায়। গতকাল বিকেল ৫টায় এককভাবে অনশনে বসেন সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম। এরপর তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী যোগ দেন।

এ সময় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সজিবুর রহমান বলেছেন, আমরা গতকাল রাত থেকে বসে আছি, রোদের মধ্যে পুড়ছি, বৃষ্টিতে ভিজছি, মশার কামড় খাচ্ছি। আমাদের শরীরের কী অবস্থা তা দেখার কেউ নেই। অনেকেই স্লোগান দিয়েছিল ‘রক্ত লাগলে রক্ত নে, পোষ্য কোটার কবর দে’। তারা তাদের রক্ত দেওয়া শেষ করেছে, কিন্তু আমাদের রক্ত দেওয়া এখনো শেষ হয়নি। আমরা আছি। যতক্ষণ না সমাধান হবে, আমরা থাকব। আমাদের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না, এখনও নেই। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে এখানে আছি এবং থাকব।

সমাজকর্ম বিভাগের ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা বলেন, আমার ভাইয়েরা গতকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজছে, রোদের মধ্যে পুড়ছে, মশার কামড়ে কষ্ট পাচ্ছে তাদের খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ নেই। প্রশাসনের নামে এই প্রহসন আর কতদিন চলবে? যেখানে আমরা ৬০-৬৫ পেয়ে ভর্তি হতে পারি না, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা নামমাত্র পাশ নম্বর পেয়ে কীভাবে ভর্তি হয়?

তিনি আরও বলেছেন, তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে এতটা অনিরাপদ অনুভব করেন কেন? তাদের কি আত্মবিশ্বাস নেই যে সন্তানরা যোগ্যতায় ভর্তি হতে পারবে? এই ভিক্ষাবৃত্তি আর কতদিন চলবে? এখানে যারা অনশনে বসেছে, সবাই তাদের মায়ের কলিজার টুকরা। তারা যে এভাবে নিপীড়িত হচ্ছে তা দেখার কি কেউ নেই?

দুপুর ১টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের পাশে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক। তিনি বলেন, আমি মূলত ছাত্রদের খোঁজ নিতে এসেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি, তারা খুব কষ্টে আছে। তাই আমি নিজেও তাদের সঙ্গে অনশনে যোগ দিয়েছি। ইতোমধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে, আমরা তাদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে পাঠিয়েছি।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা চালু করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা যদি স্নাতক প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেয়ে পাশ করে, তবে তারা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।