রাজশাহীর বাগমারায় চাঁদা না পেয়ে নবাব হোসেন হোসেন বাচ্চু (৩২) নামে তাঁতী দলের এক নেতা নারায়ণ ভবানী (৫৭) নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আহত নারায়ণ ভবানীকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর তাঁতী দলের নেতা বাচ্চুকে গ্রেফতারের দাবিতে থানায় অবস্থান নেন এলাকাবাসী। পরে জড়িত ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে তারা থানা ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
বাচ্চু জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের চাঁইসাড়া গ্রামে বাচ্চুর বাড়ি। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দারা।
এলাকাবাসী জানায়, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের চাঁইসাড়া গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ ভবানীর কাছে সপ্তাহখানেক আগে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন বাচ্চু। তখন হুমকি দিয়ে নবাব বলেন, চাঁইসাড়া গ্রামে নারায়ণকে থাকতে হলে তাকে টাকা দিতে হবে। না দিলে সমস্যা হবে। তখন টাকা দিতে অপারগতা জানান নারায়ণ ভবানী। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে নারায়ণ ভবানী গ্রামের একটি চালকল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।
পথিমধ্যে তার গতি রোধ করেন বাচ্চু। তাকে কেন পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়নি, এ নিয়ে কৈফিয়ত চান। একপর্যায়ে বাচ্চু ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই নারায়ণ ভবানীকে মারধর করে ফেলে চলে যান। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে চাইসাঁড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী ও পুরুষ ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় এসে অবস্থান নেন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, বাচ্চুকে গ্রেফতার এবং নিজেদের নিরাপত্তার দাবি জানান। এ বিষয়ে মামলা গ্রহণ, জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে বিকালে তারা থানা চত্বর ত্যাগ করেন।
বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেছেন, পুলিশ মামলা গ্রহণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। বাচ্চুর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তাকে আটকের চেষ্টা করছে। চাঁইসাড়া গ্রামের লোকজনের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখবে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, এর আগে গত বছরের ১৪ অক্টোবর বাচ্চুকে মব তৈরির সময় রামদাসহ ধরে লোকজন সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছিল। কিছুদিন পর তিনি ছাড়া পান।
তাঁতী দলের বাগমারা উপজেলার আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ মামুন বলেছেন, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। বাচ্চুর অপরাধের দায় বিএনপি বা কোনো সহযোগী সংগঠন নেবে না। সে যে অপরাধ করেছে, এর কোনো ক্ষমা নেই।