ঢাকা ০৭:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে সাবল দিয়ে পিটিয়ে হত্যা Logo দেশ রক্ষার ক্ষমতা শুধু বিএনপির আছে : শামসুজ্জামান দুদু Logo ডাকসুতে শিবির বিজয়ী হলে এবার ক্যান্টিনে ফ্রি খাওয়ানোর ঘোষণা বনি আমিনের Logo ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে ‘ভাইরাল’ সেই মিজানের হোটেল ভাঙচুর Logo ফ্যাসিবাদ পতনে আন্তর্জাতিক বিশ্বে কাজ করেছেন ড. ইউনূস ও জামায়াত Logo পাকিস্তান হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক Logo দেশে আর গলাবাজি, টেন্ডারবাজির ও দুর্নীতি রাজনীতি চলবে না : মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন Logo জামায়াত নেতার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে চবি ছাত্রশিবিরের বিবৃতি Logo আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপে মরক্কো Logo যারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছে, তারাই এখন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: আসিফ মাহমুদ

মাজার ভাঙা ও লাশ পুড়িয়ে দেওয়া রাসুলের শিক্ষা নয় : রুহুল কবির রিজভী

আজ আমরা নিজেরা দ্বিধাবিভক্ত। আমরা কারো মাজার ভাঙছি। কোনো লাশ পুড়িয়ে দিচ্ছি। এটা তো রাসুলের শিক্ষা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, আজ আমরা গণতন্ত্রের চেতনাই বলি, আমরা রাষ্ট্রীয় চেতনাই বলি– পৃথিবীর কাছে নিদর্শন দিয়ে গেছেন আরবের সেই মহামানব। আমরা সেখান থেকে শিক্ষা না নিয়ে আমরা নিজেদের যে ধর্ম, নিজেদের যে ইসলাম, সেটাকেই আমরা কত ফেরকা, কত ফিতা, কত ধরনের কথাবার্তা দিয়ে শুধু বিভাজন করছি। অথচ ঐক্যের প্রতীকই ছিলেন আমাদের মহানবী।

রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজ যে মহামানবকে নিয়ে এখানে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে, মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে, তার সম্পর্কে আমার মতো একজন ক্ষুদ্র মানুষের বিস্তারিত বলা খুবই কঠিন ব্যাপার। এটা সম্ভব নয়। শুধু তার রেখে যাওয়া যে আদর্শ এবং তিনি আল্লাহর কাছ থেকে প্রাপ্ত যে বাণী সমগ্র বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন, ছড়াতে গিয়ে তিনি যে অনুপম নিদর্শন এবং তার ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তিনি রেখে গেছেন। যদি আমরা সামান্যতম অনুকরণ করতাম বা আমরা লালন করতাম তাহলে এই দেশ থেকে অন্যায়-অনাচার, কুপ্রবৃত্তি, পাপাচার, হানাহানি রক্তারক্তি সব বন্ধ হয়ে যেত।

তিনি বলেছেন, যিনি আমাদের মডেল, যিনি আমাদের আদর্শের প্রতীক, তাকে আমরা কেউ অনুসরণ করি না। তাকে আমরা কেউ অনুকরণ করি না। এটাই হলো মুসলিম সমাজের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ যে দেশে বাস করছি, সেই দেশের যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনিও মুসলমান ছিলেন, কাজে না হলেও নামে ছিলেন। একবার বলেছিলেন মদিনা চার্টার অনুযায়ী দেশ চালাবেন, সেটা আমরা কি দেখলাম– তার এক মন্ত্রীর ১৪০টা বাড়ি লন্ডনে, তার বাড়ি থাকার পরও তার ছেলেমেয়ের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা জায়গা।

রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমাদের ওপর বিপদ আসে, আমরা দেশেই থাকি, আমাদের নেত্রী দেশেই থাকেন, মিথ্যা মামলায় পাঁচ-ছয় বছর তিনি নির্যাতনে কারাবন্দি অবস্থায় থাকেন, আমরা কোনো পন্থি দল নই, বাংলাদেশপন্থি দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। আপনারা কি পন্থি আপনারা নিজেরাই প্রমাণ করেছেন। ১৯৮১ সালের দেশে যখন ফিরলেন, জিয়াউর রহমান যখন আপনাকে ফেরার অনুমতি দিলেন, দেশে ফিরলেন কোন দেশ থেকে? আপনি এসেছিলেন, আবার ৫ আগস্টে কোন দেশে পালিয়ে গেলেন? আপনাদের অধিকাংশ লোক কোন দেশে পালিয়ে গেছে? এটা জনগণ দেখেছে। এখনো দেখছি। আবার ওই দেশ থেকেই আমরা অডিও বার্তা, ভিডিও বার্তা শুনি যে তোমরা উল্টে দাও, পাল্টে দাও, কারো হাত ভেঙ্গে দাও, কারো পা ভেঙ্গে দাও, এটা কীভাবে সম্ভব।

তৌহিদী জনতার নামে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি উদার নৈতিক দেশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বাস করে। এই দেশের পূজামণ্ডপ পাহারা দেয় আলেম-ওলামারা। সেই দেশে মাজার ভেঙে সেখানে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এটার আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবশ্যই এর পেছনে আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে। বিএনপির আমলে চক্রান্ত করেছিলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করার জন্য এখন আবার সেই প্রচেষ্টা চলছে কি না, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে।

মিলাদ মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর শরাফত আলী শফু। এতে মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা সেলিম রেজা।

জনপ্রিয় সংবাদ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে সাবল দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

মাজার ভাঙা ও লাশ পুড়িয়ে দেওয়া রাসুলের শিক্ষা নয় : রুহুল কবির রিজভী

আপডেট সময় ০১:৩২:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আজ আমরা নিজেরা দ্বিধাবিভক্ত। আমরা কারো মাজার ভাঙছি। কোনো লাশ পুড়িয়ে দিচ্ছি। এটা তো রাসুলের শিক্ষা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, আজ আমরা গণতন্ত্রের চেতনাই বলি, আমরা রাষ্ট্রীয় চেতনাই বলি– পৃথিবীর কাছে নিদর্শন দিয়ে গেছেন আরবের সেই মহামানব। আমরা সেখান থেকে শিক্ষা না নিয়ে আমরা নিজেদের যে ধর্ম, নিজেদের যে ইসলাম, সেটাকেই আমরা কত ফেরকা, কত ফিতা, কত ধরনের কথাবার্তা দিয়ে শুধু বিভাজন করছি। অথচ ঐক্যের প্রতীকই ছিলেন আমাদের মহানবী।

রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজ যে মহামানবকে নিয়ে এখানে আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে, মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে, তার সম্পর্কে আমার মতো একজন ক্ষুদ্র মানুষের বিস্তারিত বলা খুবই কঠিন ব্যাপার। এটা সম্ভব নয়। শুধু তার রেখে যাওয়া যে আদর্শ এবং তিনি আল্লাহর কাছ থেকে প্রাপ্ত যে বাণী সমগ্র বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন, ছড়াতে গিয়ে তিনি যে অনুপম নিদর্শন এবং তার ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তিনি রেখে গেছেন। যদি আমরা সামান্যতম অনুকরণ করতাম বা আমরা লালন করতাম তাহলে এই দেশ থেকে অন্যায়-অনাচার, কুপ্রবৃত্তি, পাপাচার, হানাহানি রক্তারক্তি সব বন্ধ হয়ে যেত।

তিনি বলেছেন, যিনি আমাদের মডেল, যিনি আমাদের আদর্শের প্রতীক, তাকে আমরা কেউ অনুসরণ করি না। তাকে আমরা কেউ অনুকরণ করি না। এটাই হলো মুসলিম সমাজের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ যে দেশে বাস করছি, সেই দেশের যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনিও মুসলমান ছিলেন, কাজে না হলেও নামে ছিলেন। একবার বলেছিলেন মদিনা চার্টার অনুযায়ী দেশ চালাবেন, সেটা আমরা কি দেখলাম– তার এক মন্ত্রীর ১৪০টা বাড়ি লন্ডনে, তার বাড়ি থাকার পরও তার ছেলেমেয়ের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা জায়গা।

রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমাদের ওপর বিপদ আসে, আমরা দেশেই থাকি, আমাদের নেত্রী দেশেই থাকেন, মিথ্যা মামলায় পাঁচ-ছয় বছর তিনি নির্যাতনে কারাবন্দি অবস্থায় থাকেন, আমরা কোনো পন্থি দল নই, বাংলাদেশপন্থি দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। আপনারা কি পন্থি আপনারা নিজেরাই প্রমাণ করেছেন। ১৯৮১ সালের দেশে যখন ফিরলেন, জিয়াউর রহমান যখন আপনাকে ফেরার অনুমতি দিলেন, দেশে ফিরলেন কোন দেশ থেকে? আপনি এসেছিলেন, আবার ৫ আগস্টে কোন দেশে পালিয়ে গেলেন? আপনাদের অধিকাংশ লোক কোন দেশে পালিয়ে গেছে? এটা জনগণ দেখেছে। এখনো দেখছি। আবার ওই দেশ থেকেই আমরা অডিও বার্তা, ভিডিও বার্তা শুনি যে তোমরা উল্টে দাও, পাল্টে দাও, কারো হাত ভেঙ্গে দাও, কারো পা ভেঙ্গে দাও, এটা কীভাবে সম্ভব।

তৌহিদী জনতার নামে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি উদার নৈতিক দেশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বাস করে। এই দেশের পূজামণ্ডপ পাহারা দেয় আলেম-ওলামারা। সেই দেশে মাজার ভেঙে সেখানে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। এটার আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবশ্যই এর পেছনে আন্তর্জাতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে। বিএনপির আমলে চক্রান্ত করেছিলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে কলঙ্কিত করার জন্য এখন আবার সেই প্রচেষ্টা চলছে কি না, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খতিয়ে দেখতে হবে।

মিলাদ মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর শরাফত আলী শফু। এতে মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা সেলিম রেজা।