ঢাকা ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ছাত্রদলের ডাকসু ও হল সংসদ প্যানেলে ১৪ জন ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলে ২৮ জনের মধ্যে ৬ জন এবং হল সংসদে অন্তত ৯ জন পদপ্রার্থীর ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের তথ্য ঘেঁটে ও অনুসন্ধান করে দেখা যায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ প্যানেলে ছাত্র পরিবহন সম্পাদক প্রার্থী সাইফ উল্লাহ সাইফ (সাইফ এরফান), ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক আরকানুল ইসলাম রূপক, কমনরুম, রিডিংরুম, ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক প্রার্থী চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রার্থী এহসানুল ইসলাম, সদস্য প্রার্থী রঞ্জন রায় ও শামীম রানা অভিযুক্ত।

এদের সকলের সাথে ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রলীগের সাথে তাদের একাধিক ছবি ও দায়িত্বপালন নিষিদ্ধ এই সংগঠনের সাথে তাদের সম্পর্কের গভীরতা ও বিশ্বস্ততা প্রমাণ করে।

এদিকে পিছিয়ে নেই হল সংসদও। সেখানেও আছে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অভিযুক্ত একাধিক ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী।

জিয়া হল সংসদে সাহিত্য সম্পাদক প্রার্থী রায়হান আহমেদ শিব্বির এবং একই হলের সংস্কৃতি সম্পাদক প্রার্থী হারুন অর রশীদও অভিযুক্ত (আবরার হারুন)। এর মধ্যে শিব্বির ছাত্রলীগের ২০২২ সালের কমিটিতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে সদস্য ছিলেন। হারুনের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে লেখালেখি করতে দেখা গেছে।

এদিকে শেখ মুজিব হলে নোমান আব্দুল্লাহ ছাত্রদল মনোনীত আউটডোর গেমস ও ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘেঁটে দেখা যায় ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগে ছিল তার তুমুল সক্রিয় অবস্থান।

কুয়েত মৈত্রী হল জিএস পদপ্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস পুতুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ছাত্রলীগের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার। একই সাথে শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে টিএসসিতে নেচেছিলেন এই নেত্রী।

মুহসীন হল সংসদ ভিপি প্রার্থী আবু জর গিফারির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সাবেক স্লোগান মাস্টার হিসাবে হলে দায়িত্ব পালন করার অভিযোগ আছে।

একইভাবে শহিদুল্লাহ হল সংসদ জিএস প্রার্থী রবিউল ইসলাম নাহিদ, ফজলুল হক মুসলিম হল সংসদ ভিপি প্রার্থী শেখ রমজান আলী রকি, বিজয় একাত্তর হল সংসদ সদস্য প্রার্থী আহনাফ আহমেদ রাফির বিরুদ্ধেও ছাত্রলীগের পক্ষে প্রোগ্রাম ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে থাকার ছবি ও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য ঢাবি ছাত্রদলের হল কমিটি থেকে ছাত্রলীগ করার অভিযোগে ৬ জনকে বহিষ্কার করে ছাত্রদল। সেই ৬ জনের একজন নিতু রানী সাহাকেও ছাত্রদল থেকে শামসুন্নাহার হল সংসদের এজিএস প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন,
“একটা বিষয় বুঝলাম না, এরকম ছাত্রলীগ তো সব প্যানেলেই আছে। শিবিরের তো দুইজন (সাদিক, ফরহাদ) ছাত্রলীগ, তাদের থেকে বক্তব্য নিয়েছেন?”

তিনি আরও বলেন,
“প্রথম কথা হলো আমাদের ক্যান্ডিডেটরা কেউ সক্রিয় ছাত্রলীগ না, কেউ পদধারী ছাত্রলীগ ছিলেন না। দ্বিতীয়ত সবাই এখন ছাত্রদলে সক্রিয়।

নিতু রানী সাহার ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তার বিষয়টি নিয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ইতিবাচক আবহ তৈরি হয়েছিল এবং আমরা খুব শীঘ্রই একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেবো। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেওয়া হলে এমনও সিদ্ধান্ত আসতে পারে যে তার যে বহিষ্কারাদেশ সেটি প্রত্যাহার হতে পারে। এটা অসম্ভবের কিছু না। আর নিতু রানী সাহা ব্যতীত বাকিরা সকলে আমাদের ছাত্রদলের পদস্থ। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে এরকম আজগুবি অভিযোগ এনে তো লাভ নেই।

এখন কেউ ফার্স্ট সেকেন্ড ইয়ারে মিছিলে গিয়েছে সেই ছবি, আবার শুধুমাত্র ছাত্রলীগ ক্লাসমেট কারো সাথে ছবি দেখিয়ে অভিযোগ হয় না। বিশেষত হলে যারা থাকে তাদেরকে কেমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তা জানা কথা। ফার্স্ট ইয়ারে মিছিল করেছে, পরে ছাত্রদলের অভিযোগে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।”

ঢাকাভয়েস২৪

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইলেন ডিএমপি কমিশনার

ছাত্রদলের ডাকসু ও হল সংসদ প্যানেলে ১৪ জন ছাত্রলীগ

আপডেট সময় ০৯:১৪:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলে ২৮ জনের মধ্যে ৬ জন এবং হল সংসদে অন্তত ৯ জন পদপ্রার্থীর ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের তথ্য ঘেঁটে ও অনুসন্ধান করে দেখা যায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ প্যানেলে ছাত্র পরিবহন সম্পাদক প্রার্থী সাইফ উল্লাহ সাইফ (সাইফ এরফান), ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক আরকানুল ইসলাম রূপক, কমনরুম, রিডিংরুম, ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক প্রার্থী চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রার্থী এহসানুল ইসলাম, সদস্য প্রার্থী রঞ্জন রায় ও শামীম রানা অভিযুক্ত।

এদের সকলের সাথে ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রমাণ মিলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রলীগের সাথে তাদের একাধিক ছবি ও দায়িত্বপালন নিষিদ্ধ এই সংগঠনের সাথে তাদের সম্পর্কের গভীরতা ও বিশ্বস্ততা প্রমাণ করে।

এদিকে পিছিয়ে নেই হল সংসদও। সেখানেও আছে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অভিযুক্ত একাধিক ছাত্রদল মনোনীত প্রার্থী।

জিয়া হল সংসদে সাহিত্য সম্পাদক প্রার্থী রায়হান আহমেদ শিব্বির এবং একই হলের সংস্কৃতি সম্পাদক প্রার্থী হারুন অর রশীদও অভিযুক্ত (আবরার হারুন)। এর মধ্যে শিব্বির ছাত্রলীগের ২০২২ সালের কমিটিতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে সদস্য ছিলেন। হারুনের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে লেখালেখি করতে দেখা গেছে।

এদিকে শেখ মুজিব হলে নোমান আব্দুল্লাহ ছাত্রদল মনোনীত আউটডোর গেমস ও ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘেঁটে দেখা যায় ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগে ছিল তার তুমুল সক্রিয় অবস্থান।

কুয়েত মৈত্রী হল জিএস পদপ্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস পুতুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ছাত্রলীগের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার। একই সাথে শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে টিএসসিতে নেচেছিলেন এই নেত্রী।

মুহসীন হল সংসদ ভিপি প্রার্থী আবু জর গিফারির বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সাবেক স্লোগান মাস্টার হিসাবে হলে দায়িত্ব পালন করার অভিযোগ আছে।

একইভাবে শহিদুল্লাহ হল সংসদ জিএস প্রার্থী রবিউল ইসলাম নাহিদ, ফজলুল হক মুসলিম হল সংসদ ভিপি প্রার্থী শেখ রমজান আলী রকি, বিজয় একাত্তর হল সংসদ সদস্য প্রার্থী আহনাফ আহমেদ রাফির বিরুদ্ধেও ছাত্রলীগের পক্ষে প্রোগ্রাম ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে থাকার ছবি ও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য ঢাবি ছাত্রদলের হল কমিটি থেকে ছাত্রলীগ করার অভিযোগে ৬ জনকে বহিষ্কার করে ছাত্রদল। সেই ৬ জনের একজন নিতু রানী সাহাকেও ছাত্রদল থেকে শামসুন্নাহার হল সংসদের এজিএস প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন,
“একটা বিষয় বুঝলাম না, এরকম ছাত্রলীগ তো সব প্যানেলেই আছে। শিবিরের তো দুইজন (সাদিক, ফরহাদ) ছাত্রলীগ, তাদের থেকে বক্তব্য নিয়েছেন?”

তিনি আরও বলেন,
“প্রথম কথা হলো আমাদের ক্যান্ডিডেটরা কেউ সক্রিয় ছাত্রলীগ না, কেউ পদধারী ছাত্রলীগ ছিলেন না। দ্বিতীয়ত সবাই এখন ছাত্রদলে সক্রিয়।

নিতু রানী সাহার ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তার বিষয়টি নিয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ইতিবাচক আবহ তৈরি হয়েছিল এবং আমরা খুব শীঘ্রই একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেবো। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেওয়া হলে এমনও সিদ্ধান্ত আসতে পারে যে তার যে বহিষ্কারাদেশ সেটি প্রত্যাহার হতে পারে। এটা অসম্ভবের কিছু না। আর নিতু রানী সাহা ব্যতীত বাকিরা সকলে আমাদের ছাত্রদলের পদস্থ। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে এরকম আজগুবি অভিযোগ এনে তো লাভ নেই।

এখন কেউ ফার্স্ট সেকেন্ড ইয়ারে মিছিলে গিয়েছে সেই ছবি, আবার শুধুমাত্র ছাত্রলীগ ক্লাসমেট কারো সাথে ছবি দেখিয়ে অভিযোগ হয় না। বিশেষত হলে যারা থাকে তাদেরকে কেমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তা জানা কথা। ফার্স্ট ইয়ারে মিছিল করেছে, পরে ছাত্রদলের অভিযোগে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।”

ঢাকাভয়েস২৪