ঢাকা ০৭:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বিদেশি ৭০টি মিশনে সরানো হলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক‍্যাফেতে এখনো আছে রাষ্ট্রপতির ছবি Logo কাউনিয়ায় শতাধিক জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিলো ছাত্রশিবির Logo পাবনায় জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল  টুর্নামেন্ট উদ্বোধন Logo জুলাই সনদেই নির্বাচন চায় জামায়াত-এনসিপি, ভিন্ন অবস্থানে বিএনপি Logo অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেওয়া নাতিকে নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিলেন বনি আমিন Logo গাইবান্ধায় জামায়াত নেতাকে গলা কেটে হত্যা Logo পাবনায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছাত্রশিবিরের সংবর্ধনা আনুষ্ঠান Logo কুষ্টিয়ায় স্কুল ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়ানোর ঘটনায় শিক্ষক র‍্যাবের হাতে আটক Logo চটজলদি প্রেসিডেন্টের ছবি নামান,মধ্যরাতে মিশনে মিশনে ঢাকার ফোন Logo ফারুকীর সর্বশেষ অবস্থা জানালেন তার স্ত্রী তিশা

দেশের প্রথম ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিভেনম উৎপাদন প্লান্ট হচ্ছে মুন্সিগঞ্জে

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিভেনম উৎপাদন প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায়। দেশের স্বাস্থ্য খাতে যুগান্তকারী এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নিজস্ব সক্ষমতায় ভ্যাকসিন ও বিষধর সাপের বিষের প্রতিষেধক (antivenom) উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।

প্রথমে এই প্রকল্পটি গোপালগঞ্জে করার পরিকল্পনা থাকলেও পরবর্তীতে স্থানান্তর করা হয় মুন্সিগঞ্জে। পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভৌগোলিক অবস্থান, ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদেশি গবেষক ও প্রকৌশলীদের নিরাপত্তা এবং আবাসনের সুবিধার দিক বিবেচনায় মুন্সিগঞ্জকেই চূড়ান্ত করা হয়।

এই প্রকল্পটি স্থাপিত হচ্ছে বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে, প্রায় ৪০ একর জমির উপর। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩,১২৪ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিভেনম উৎপাদন হবে। এছাড়া এখানে পিসিআর কিট, অ্যান্টিজেন এবং অন্যান্য ঔষধ ও ডায়াগনস্টিক সামগ্রীও প্রস্তুত করা হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে ৬টি এবং ২০২৯ সালের মধ্যে আরও ৯টি ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে।

দেশে বর্তমানে যেসব ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর অধিকাংশই আমদানি করা হয় ভারত, চীন ও অন্যান্য দেশ থেকে। ফলে খরচ যেমন বেশি, তেমনি সংকটকালে সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। নতুন এই প্ল্যান্ট চালু হলে দেশীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন ও রপ্তানির সক্ষমতা অর্জন করবে বাংলাদেশ।

বিশেষ করে অ্যান্টিভেনম উৎপাদন এই প্ল্যান্টের অন্যতম প্রধান দিক। প্রতিবছর দেশে সাপের কামড়ে বহু মানুষ মারা যায়, অথচ দেশে এখনো কোনো অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের ব্যবস্থা ছিল না। এই প্রকল্প সে ঘাটতি পূরণ করবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইডিসিএল (Essential Drugs Company Limited)–এর তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও গবেষণা সুবিধা যুক্ত করে এটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

অন্যদিকে, গোপালগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে ইডিসিএলের যেসব ইউনিট ছিল, তাদের কার্যক্রম ধাপে ধাপে মুন্সিগঞ্জে স্থানান্তর করা হবে। ভবিষ্যতে দেশের শতভাগ সরকারি হাসপাতাল এখান থেকেই ওষুধ ও টিকা সরবরাহ পাবে—এমনটাই লক্ষ্য।

সম্প্রতি প্ল্যান্ট এলাকা পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. নাজমুল ইসলাম ও নূরজাহান বেগম, যেখানে নির্মাণকাজের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। তাঁরা জানান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় এই প্রকল্প বাংলাদেশকে স্বাস্থ্য খাতে আরও এগিয়ে নেবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিদেশি ৭০টি মিশনে সরানো হলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক‍্যাফেতে এখনো আছে রাষ্ট্রপতির ছবি

দেশের প্রথম ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিভেনম উৎপাদন প্লান্ট হচ্ছে মুন্সিগঞ্জে

আপডেট সময় ০৯:১২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিভেনম উৎপাদন প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায়। দেশের স্বাস্থ্য খাতে যুগান্তকারী এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নিজস্ব সক্ষমতায় ভ্যাকসিন ও বিষধর সাপের বিষের প্রতিষেধক (antivenom) উৎপাদনের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।

প্রথমে এই প্রকল্পটি গোপালগঞ্জে করার পরিকল্পনা থাকলেও পরবর্তীতে স্থানান্তর করা হয় মুন্সিগঞ্জে। পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভৌগোলিক অবস্থান, ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদেশি গবেষক ও প্রকৌশলীদের নিরাপত্তা এবং আবাসনের সুবিধার দিক বিবেচনায় মুন্সিগঞ্জকেই চূড়ান্ত করা হয়।

এই প্রকল্পটি স্থাপিত হচ্ছে বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে, প্রায় ৪০ একর জমির উপর। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩,১২৪ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিভেনম উৎপাদন হবে। এছাড়া এখানে পিসিআর কিট, অ্যান্টিজেন এবং অন্যান্য ঔষধ ও ডায়াগনস্টিক সামগ্রীও প্রস্তুত করা হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৮ সালের মধ্যে ৬টি এবং ২০২৯ সালের মধ্যে আরও ৯টি ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে।

দেশে বর্তমানে যেসব ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর অধিকাংশই আমদানি করা হয় ভারত, চীন ও অন্যান্য দেশ থেকে। ফলে খরচ যেমন বেশি, তেমনি সংকটকালে সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। নতুন এই প্ল্যান্ট চালু হলে দেশীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন ও রপ্তানির সক্ষমতা অর্জন করবে বাংলাদেশ।

বিশেষ করে অ্যান্টিভেনম উৎপাদন এই প্ল্যান্টের অন্যতম প্রধান দিক। প্রতিবছর দেশে সাপের কামড়ে বহু মানুষ মারা যায়, অথচ দেশে এখনো কোনো অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের ব্যবস্থা ছিল না। এই প্রকল্প সে ঘাটতি পূরণ করবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইডিসিএল (Essential Drugs Company Limited)–এর তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও গবেষণা সুবিধা যুক্ত করে এটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একটি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

অন্যদিকে, গোপালগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে ইডিসিএলের যেসব ইউনিট ছিল, তাদের কার্যক্রম ধাপে ধাপে মুন্সিগঞ্জে স্থানান্তর করা হবে। ভবিষ্যতে দেশের শতভাগ সরকারি হাসপাতাল এখান থেকেই ওষুধ ও টিকা সরবরাহ পাবে—এমনটাই লক্ষ্য।

সম্প্রতি প্ল্যান্ট এলাকা পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. নাজমুল ইসলাম ও নূরজাহান বেগম, যেখানে নির্মাণকাজের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। তাঁরা জানান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় এই প্রকল্প বাংলাদেশকে স্বাস্থ্য খাতে আরও এগিয়ে নেবে।