বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন , বিগত এক বছরে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এর মধ্যে শুধু জ্বালানি তেল আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রায় সাশ্রয় হয়েছে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ।
আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম-ঢাকা জ্বালানি তেল সরবরাহ পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সচিব আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল মু. হাসান-উজ-জামান।
উপদেষ্টা বলেছেন, আগে জ্বালানি আমদানির প্রক্রিয়া ছিল সীমিত পরিসরে, যেখানে মাত্র ৪-৫টি প্রতিষ্ঠান বিড করতে পারত। বর্তমানে কিছু নির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন তুলে দেওয়ায় ১০-১২টি প্রতিষ্ঠান বিড করতে পারছে, যার ফলে প্রতিযোগিতা বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।
তিনি বলেছেন, প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রকল্প ব্যয় কমানো সম্ভব। তবে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এই সম্ভাবনা অনেক সময় বাধাগ্রস্ত হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব এবং উচ্চ ব্যয় দেশের উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু প্রকল্প ১৭-১৮ বছরেও শেষ করা যাচ্ছে না, যা আর টেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে সড়ক ও নৌপথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, পরিবেশদূষণ হ্রাস পাবে এবং সময়ও বাঁচবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, আগে যেখানে জ্বালানি পরিবহনে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগত, এখন তা মাত্র ১২ ঘণ্টায় সম্ভব হবে।
তিনি প্রকৌশলীদের দক্ষতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্পে স্থানীয় ভ্যালু এডিশন বাড়ানো জরুরি।
তিন হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। পুরো পাইপলাইন অপারেশনের দায়িত্বে থাকবে পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি।