ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নাটোর-০২ আসনে বিএনপিতে দুগ্রুপের কোন্দল, মাঠ গোছাচ্ছে জামায়াত Logo গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ফেনীর স্বরূপ সাহিত্যের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা Logo জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে তারেক রহমানের ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগান Logo ‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আ. লীগের তৈরি ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার: নাহিদ Logo আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে পুরস্কার অর্জন করেন কুষ্টিয়ার মস্তাহসিন Logo লুট হওয়া পাথর বালু ও মাটি দিয়ে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা Logo আমার ভোট আমি দেব, স্লোগান বাস্তবায়ন হতে দেব না : বিএনপি নেতা Logo পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলো মোদি Logo একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার Logo ছাত্রদল নেতার মাদক সেবনের ছবি ভাইরাল:পদ স্থগিত

‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আ. লীগের তৈরি ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আওয়ামী লীগের তৈরি এক ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার ।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকাভয়েস পাঠকদের জন্য তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু দেয়া হলো-

নাহিদ ইসলাম লেখেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ জনগণের জাতির পিতা নন। আমরা তার স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা ও ত্যাগ স্বীকার করি, কিন্তু তার শাসনামলে যে জাতীয় ট্র্যাজেডি ঘটেছিল, সেটিও আমরা স্মরণ করি। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের উপনিবেশ রাজ্যে পরিণত হয়েছিল, চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল ১৯৭২ সালের জনবিরোধী সংবিধান, আর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও একদলীয় বাকশাল স্বৈরশাসনের ভিত্তি।

আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির কেন্দ্রে রয়েছে মুজিবপূজা ও মুক্তিযুদ্ধপূজা। এ এক রাজনৈতিক মূর্তিপূজা, যা জনগণকে দমন, জাতিকে লুট এবং নাগরিকদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে বিভক্ত করার হাতিয়ার। এটি ছিল আধুনিক জমিদারির ছদ্মবেশে গণতন্ত্রের অভিনয়। অথচ মুক্তিযুদ্ধ ছিল সমগ্র জনগণের সংগ্রাম।

২০২৪ সালের জনতার গণআন্দোলন এই জমিদারিকে চূর্ণ করেছে। কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা মতবাদ আর কখনোই নাগরিকদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে বা বাংলাদেশের উপর ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিতে পারবে না। ‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আওয়ামী লীগের তৈরি এক ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার, যা ভিন্নমত দমন ও রাষ্ট্রের একচেটিয়া মালিকানা কায়েমের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশ সমানভাবে সকল নাগরিকের এবং এর জন্ম বা ভবিষ্যতের মালিকানা কোনো একক ব্যক্তির নয়।

মুজিববাদ হলো শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের নামে চালানো এক ফ্যাসিবাদী মতবাদ। আমাদের সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং একটি ফ্যাসিবাদী মতবাদের বিরুদ্ধে।

মুজিববাদ এক বিভাজন ও ফ্যাসিবাদের মতবাদ। এর অর্থ গুম, হত্যা, ধর্ষণ এবং পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর অর্থ জাতির সম্পদ লুটপাট ও বিদেশে পাচার। এর অর্থ ইসলামবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সংখ্যালঘুদের জমি দখল। এর অর্থ জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিদেশি শক্তির কাছে বিক্রি করা। ষোলো বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে জীবিত রাখা হয়েছিল একটি অস্ত্র হিসেবে, আর তার মূর্তির আড়ালে বেড়ে উঠেছিল অপহরণ, হত্যা, লুটপাট ও গণহত্যা।

মুজিববাদ একটি জীবন্ত হুমকি। এটিকে পরাজিত করতে হলে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সংগ্রাম একটি প্রজাতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য- একটি সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, সমঅধিকারভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে কোনো দল, বংশ বা নেতা জনগণের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের প্রজাতন্ত্র।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নাটোর-০২ আসনে বিএনপিতে দুগ্রুপের কোন্দল, মাঠ গোছাচ্ছে জামায়াত

‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আ. লীগের তৈরি ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার: নাহিদ

আপডেট সময় ০৫:৪০:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আওয়ামী লীগের তৈরি এক ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার ।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকাভয়েস পাঠকদের জন্য তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু দেয়া হলো-

নাহিদ ইসলাম লেখেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ জনগণের জাতির পিতা নন। আমরা তার স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা ও ত্যাগ স্বীকার করি, কিন্তু তার শাসনামলে যে জাতীয় ট্র্যাজেডি ঘটেছিল, সেটিও আমরা স্মরণ করি। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের উপনিবেশ রাজ্যে পরিণত হয়েছিল, চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল ১৯৭২ সালের জনবিরোধী সংবিধান, আর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ও একদলীয় বাকশাল স্বৈরশাসনের ভিত্তি।

আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির কেন্দ্রে রয়েছে মুজিবপূজা ও মুক্তিযুদ্ধপূজা। এ এক রাজনৈতিক মূর্তিপূজা, যা জনগণকে দমন, জাতিকে লুট এবং নাগরিকদের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে বিভক্ত করার হাতিয়ার। এটি ছিল আধুনিক জমিদারির ছদ্মবেশে গণতন্ত্রের অভিনয়। অথচ মুক্তিযুদ্ধ ছিল সমগ্র জনগণের সংগ্রাম।

২০২৪ সালের জনতার গণআন্দোলন এই জমিদারিকে চূর্ণ করেছে। কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা মতবাদ আর কখনোই নাগরিকদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে বা বাংলাদেশের উপর ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিতে পারবে না। ‘জাতির পিতা’ উপাধি কোনো ইতিহাস নয়, এটি আওয়ামী লীগের তৈরি এক ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার, যা ভিন্নমত দমন ও রাষ্ট্রের একচেটিয়া মালিকানা কায়েমের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশ সমানভাবে সকল নাগরিকের এবং এর জন্ম বা ভবিষ্যতের মালিকানা কোনো একক ব্যক্তির নয়।

মুজিববাদ হলো শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের নামে চালানো এক ফ্যাসিবাদী মতবাদ। আমাদের সংগ্রাম কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, বরং একটি ফ্যাসিবাদী মতবাদের বিরুদ্ধে।

মুজিববাদ এক বিভাজন ও ফ্যাসিবাদের মতবাদ। এর অর্থ গুম, হত্যা, ধর্ষণ এবং পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর অর্থ জাতির সম্পদ লুটপাট ও বিদেশে পাচার। এর অর্থ ইসলামবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সংখ্যালঘুদের জমি দখল। এর অর্থ জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিদেশি শক্তির কাছে বিক্রি করা। ষোলো বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে জীবিত রাখা হয়েছিল একটি অস্ত্র হিসেবে, আর তার মূর্তির আড়ালে বেড়ে উঠেছিল অপহরণ, হত্যা, লুটপাট ও গণহত্যা।

মুজিববাদ একটি জীবন্ত হুমকি। এটিকে পরাজিত করতে হলে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের সংগ্রাম একটি প্রজাতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য- একটি সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, সমঅধিকারভিত্তিক বাংলাদেশ, যেখানে কোনো দল, বংশ বা নেতা জনগণের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের প্রজাতন্ত্র।