গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানার গুটিয়া এলাকায় পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার সূত্র ধরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মৃত মুন্সি মিয়ার স্ত্রী ফয়জুন নেছা ২০১৮ সালে তার মালিকানাধীন একটি জমির অংশ ছোট ছেলে বশির আহমেদকে লিখে দিয়েছেন। জমিটি এস খতিয়ান ১৫ ও আরএস খতিয়ান ১৩৬, মুজা খুটিয়া, এসএ দাগ নং ২৪১ এবং আরএস দাগ নং ২৬৩ এর অন্তর্ভুক্ত।
বশির আহমেদ অভিযোগ করেন, তার বড় ভাই ফরিদ মিয়া ওই জমিতে জোর করে দোকান নির্মাণ করলে তিনি বাধা দেন। বাধা উপেক্ষা করে দোকান নির্মাণ করেন ফরিদ এবং ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জোরপূর্বক ভোগদখল করেন। পরে পারিবারিক বৈঠকে ফরিদকে দোকান নির্মাণের টাকা পরিশোধ করে দেন বশির এবং দোকানের ভাড়াটিয়া আমির হোসেনের সঙ্গে ২০২৩-২০২৮ পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেন।
বশিরের দাবি, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি জমিটি তার মেয়ে শারমিন আহমেদ সুমির কাছে বিক্রি করেন। বর্তমানে এই জমির মালিক তার মেয় শারমিন আহমেদ সুমি। তবে আবারো বিপত্তি ঘটে ২০২৪ এর ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে বশির আহমেদকে এবং তার ছেলেকে আওয়ামীলীগ ট্যাগ দিয়ে তার ভাই ফরিদ মিয়া, উবায়েদ গং রা এই জমি পূনরায় দখল করার চেষ্টা করেন। তবে জমির বর্তমান মালিক শারমিন বহুতল ভবন নির্মাণের চেষ্টা করলে
এ নিয়ে কয়েক দফা সংঘর্ষের পর এলাকাবাসী মীমাংসা করলেও পুনরায় দখলচেষ্টা চালানো হয়।
পরবর্তীতে গত ৫ আগস্ট সকাল ১১টায় শারমিন টঙ্গী পশ্চিম থানায় জিডি করেন। এবং পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজে যেন কেউ বাধা সৃষ্টি না করে নির্দেশ দিয়ে আসেন । তবে ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে ফরিদ মিয়া, ওবায়দুল হক, রিপন মিয়া, সেলিনা পারভীনসহ একদল লোক নির্মাণস্থলে গিয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ। এতে শারমিনের মামাতো ভাই সাজ্জাদুল ইসলাম ইমন ও ছোট ভাই সজিব আহমেদ গুরুতর আহত হন। ইমনের হাত ভেঙে যায় এবং সজিবের মাথা ও চোখে আঘাত লাগে। আহতরা আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
হামলার পর শারমিনের লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা দখলদার বাহিনী নিয়ে বারবার তাদের পারিবারিক সম্পত্তিতে বাধা দিচ্ছে এবং হামলার মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
অন্যদিকে ফরিদ মিয়ার পাল্টা অভিযোগে দাবি করেন, জমিটি তার বৈধ পৈতৃক সম্পত্তি এবং আদালতে মামলা চলমান রয়েছে তবুও ফরিদ এবং তার মেয়ে এখানে এসে দোকান ভাঙচুর করেন এবং বাধা দিলে তার ছেলে রিপনকে মেরে আহত করেন। এই ঘটনায় ফরিদ মিয়া বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে না। থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের হওয়ায় পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছি, উভয় পক্ষের জিডির কপি রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।