ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo রুয়ার কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় অধ্যাপক মহিউদ্দীনকে নওগাঁ উন্নয়ন ফোরামের সংবর্ধনা Logo খোকসা থানায় চোরাই ট্রলি গায়েব, ভুয়া স্ট্যাম্পে ধামাচাপা Logo চালকের ঘুমের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে মাইক্রোবাসটি,একই পরিবারের ৭ জন নিহত Logo মেহেরপুরের সড়কে ককটেল ফাটিয়ে গণডাকাতি Logo জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিএনপি প্রতিক্রিয়া জানাবে আজ Logo এখন জনগণের ভয়ে সরকার পোস্ট ডিলিট করে Logo বিচারিক হত্যাকাণ্ড ‘শাহবাগ-আওয়ামী যৌথ প্রজেক্টের ফল’: ঢাবি শিবির সেক্রেটারি Logo বেগমগঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে মাইক্রোবাস, নিহত ৭ Logo কক্সবাজার নয়, ওয়াশিংটনে আছেন পিটার হাস Logo ভারতে আকস্মিক বন্যায় ৯ সেনাসহ দেড় শতাধিক নিখোঁজ

জবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দূর্ব্যবহারের অভিযোগে একাধিক সংবাদের শিরোনাম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে হয়েছেন সংবাদের শিরোনাম। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করেন অসদাচারণ। স্কলারশিপ পাওয়া শিক্ষকদের একটি মাত্র স্বাক্ষরের জন্য বার বার যেতে হয় তার দপ্তরে। সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তরও দেন না এই রেজিস্ট্রার। মতামত জানতে চাইলে দিতে বলেন লিখিত দিতে, মন ভালো না থাকলে বলেন রুম থেকে বেরিয়ে যাও।
এদিকে এসব বিষয়ে উপাচার্যের নিকট ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ দিলেও নির্বিকার থেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে রেজিস্ট্রারের সঙ্গে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বিষয়ে কথা বলতে গেলে সাংবাদিক আতিক মেসবাহ লগ্ন এবং রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করেন রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন।

এসময় সাংবাদিকদ্বয় রেজিস্ট্রারের নিকট জকসু নির্বাচন কোথায় আটকে আছে এরুপ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি এবিষয়ে কথা বললে আগ্রহী নয়। এসময় তাদেরকে বের হয়ে যেতে বলেন ওই রেজিস্ট্রার।

এর আগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষক ইউজিসির ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপে স্বাক্ষর নিতে গিয়ে ঘৃনীত আচরণের শিকার হন। রেজিস্ট্রার ওই শিক্ষককে বলেন, ‘দ্রুত করতে গেলে আরও দেরি হবে, আমি তো এখন লাঞ্চ করবো, এখন চলে যান। আমরা স্বাক্ষর করার জন্য এখানে বসে নেই।’ এমন নানাভাবে হেনস্তা করেন রেজিস্ট্রার গিয়াসউদ্দিন।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক বলেন, ইউজিসি থেকে আমাকে দ্রুত সময়ে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়। আশা করেছিলাম এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মহোদয়ের কাছে গেলে তিনি আন্তরিকতার সাথে স্বাক্ষর করে দিবেন। এরপরও কয়েক দফায় সারাদিন ঘুরে যখন ওনার স্বাক্ষরের জন্য শেষ বার যাই, তখন আবার কেন গিয়েছি জানতে চেয়ে তিনি লাঞ্চ করবেন বলে কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তার এমন ব্যবহারে খুবই হতবাক ও মর্মাহত হয়েছি। এমন দায়িত্বশীল পদে থেকে কারো সঙ্গে এমন ব্যবহার করা সমীচীন নয়।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকেল চুরির ঘটনায় অভিযোগ দিতে গেলে হেনস্তার শিকার হন শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সভাপতি ইভান তাহসীব। এসময় রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন তাকে বলেন, ‘বের হয়ে যাও! কর্মকর্তাদের ডেকে বলেন ওরে বের করে দাও! বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছ এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে’।
এছাড়া তানজিম মাহমুদ নামে অপর এক সাংবাদিক অবন্তিকার আত্মহত্যা তদন্ত বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার তাকে বলেন, “কালবেলা বা সকালবেলা যেই হও পরে আসো। এখন বের হয়ে যাও”

সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন, ফোন করলে রেজিস্ট্রার নিজে না ধরে পিএস বা সহযোগী রেজিস্ট্রার ফোন ধরে যা বলার লিখিত দিয়ে যেতে বলেন। এমন আচরণ প্রশাসনের জবাবদিহি ও তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আতিক মেজবাহ লগ্ন বলেন, আমি একজন রিপোর্টার হিসেবে জকসু নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্যারের এমন আচরণে আমি ব্যথিত।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক রাকিবুল ইসলাম বলেন, রেজিস্ট্রার স্যার বলেন, তিনি জকসুর নীতিমালা কমিটির সদস্য সচিব নন। একজন সাধারণ সদস্য। তিনি কিছু জানেন না। একইসাথে তিনি সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে আগ্রহী না বলে জানান।

এবিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড মো. শেখ গিয়াস উদ্দিনকে ফোন দিলে তার পিএস এনামুল হক ফোন ধরেন। তিনি বলেন, “রেজিস্ট্রার স্যার ব্যস্ত আছেন। আপনি পরে ফোন দিয়েন।” এছাড়াও রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তার পিএস বলেন, “স্যার অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে খুব ব্যস্ত আছেন। যা জানার লিখিত দিয়ে যান।”

এদিকে একের পর এক ক্যাম্পাসে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাগুলো আমার নজরে এসেছে। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। তোমরা তা দৃশ্যমান দেখতে পাবে। ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

রুয়ার কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় অধ্যাপক মহিউদ্দীনকে নওগাঁ উন্নয়ন ফোরামের সংবর্ধনা

জবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দূর্ব্যবহারের অভিযোগে একাধিক সংবাদের শিরোনাম

আপডেট সময় ০৯:৪৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে হয়েছেন সংবাদের শিরোনাম। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করেন অসদাচারণ। স্কলারশিপ পাওয়া শিক্ষকদের একটি মাত্র স্বাক্ষরের জন্য বার বার যেতে হয় তার দপ্তরে। সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তরও দেন না এই রেজিস্ট্রার। মতামত জানতে চাইলে দিতে বলেন লিখিত দিতে, মন ভালো না থাকলে বলেন রুম থেকে বেরিয়ে যাও।
এদিকে এসব বিষয়ে উপাচার্যের নিকট ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ দিলেও নির্বিকার থেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে রেজিস্ট্রারের সঙ্গে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বিষয়ে কথা বলতে গেলে সাংবাদিক আতিক মেসবাহ লগ্ন এবং রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করেন রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন।

এসময় সাংবাদিকদ্বয় রেজিস্ট্রারের নিকট জকসু নির্বাচন কোথায় আটকে আছে এরুপ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি এবিষয়ে কথা বললে আগ্রহী নয়। এসময় তাদেরকে বের হয়ে যেতে বলেন ওই রেজিস্ট্রার।

এর আগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষক ইউজিসির ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপে স্বাক্ষর নিতে গিয়ে ঘৃনীত আচরণের শিকার হন। রেজিস্ট্রার ওই শিক্ষককে বলেন, ‘দ্রুত করতে গেলে আরও দেরি হবে, আমি তো এখন লাঞ্চ করবো, এখন চলে যান। আমরা স্বাক্ষর করার জন্য এখানে বসে নেই।’ এমন নানাভাবে হেনস্তা করেন রেজিস্ট্রার গিয়াসউদ্দিন।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক বলেন, ইউজিসি থেকে আমাকে দ্রুত সময়ে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিপত্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়। আশা করেছিলাম এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মহোদয়ের কাছে গেলে তিনি আন্তরিকতার সাথে স্বাক্ষর করে দিবেন। এরপরও কয়েক দফায় সারাদিন ঘুরে যখন ওনার স্বাক্ষরের জন্য শেষ বার যাই, তখন আবার কেন গিয়েছি জানতে চেয়ে তিনি লাঞ্চ করবেন বলে কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তার এমন ব্যবহারে খুবই হতবাক ও মর্মাহত হয়েছি। এমন দায়িত্বশীল পদে থেকে কারো সঙ্গে এমন ব্যবহার করা সমীচীন নয়।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকেল চুরির ঘটনায় অভিযোগ দিতে গেলে হেনস্তার শিকার হন শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সভাপতি ইভান তাহসীব। এসময় রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন তাকে বলেন, ‘বের হয়ে যাও! কর্মকর্তাদের ডেকে বলেন ওরে বের করে দাও! বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছ এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে’।
এছাড়া তানজিম মাহমুদ নামে অপর এক সাংবাদিক অবন্তিকার আত্মহত্যা তদন্ত বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার তাকে বলেন, “কালবেলা বা সকালবেলা যেই হও পরে আসো। এখন বের হয়ে যাও”

সাংবাদিকরা অভিযোগ করেছেন, ফোন করলে রেজিস্ট্রার নিজে না ধরে পিএস বা সহযোগী রেজিস্ট্রার ফোন ধরে যা বলার লিখিত দিয়ে যেতে বলেন। এমন আচরণ প্রশাসনের জবাবদিহি ও তথ্য প্রাপ্তির অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আতিক মেজবাহ লগ্ন বলেন, আমি একজন রিপোর্টার হিসেবে জকসু নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্যারের এমন আচরণে আমি ব্যথিত।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক রাকিবুল ইসলাম বলেন, রেজিস্ট্রার স্যার বলেন, তিনি জকসুর নীতিমালা কমিটির সদস্য সচিব নন। একজন সাধারণ সদস্য। তিনি কিছু জানেন না। একইসাথে তিনি সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে আগ্রহী না বলে জানান।

এবিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড মো. শেখ গিয়াস উদ্দিনকে ফোন দিলে তার পিএস এনামুল হক ফোন ধরেন। তিনি বলেন, “রেজিস্ট্রার স্যার ব্যস্ত আছেন। আপনি পরে ফোন দিয়েন।” এছাড়াও রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তার পিএস বলেন, “স্যার অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে খুব ব্যস্ত আছেন। যা জানার লিখিত দিয়ে যান।”

এদিকে একের পর এক ক্যাম্পাসে সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাগুলো আমার নজরে এসেছে। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। তোমরা তা দৃশ্যমান দেখতে পাবে। ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।