ঢাকা ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জামায়াতে আমিরের রোগমুক্তি কামনায় কুমারখালীতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ খুলছে আগামীকাল Logo নওগাঁর বদলগাছীতে জামায়াতের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প Logo মৌলভীবাজারে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ১, বাস ভাঙচুর Logo মৌলভীবাজারে বাবা ও মেয়ের গলায় দা ধরে ছিনতাই, গ্রেফতার ২ Logo আমরা যে চূড়ান্ত পরিবর্তন চেয়েছিলাম, তা সম্ভব হয়নি: আসিফ মাহমুদ Logo ‘আমরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছি’ গাজার হাজারো মানুষের আর্তনাদ Logo জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত, ৫ আগস্ট উপস্থাপন করবে সরকার: প্রেস উইং Logo জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন হবে: নাহিদ ইসলাম Logo ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘আমরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছি’ গাজার হাজারো মানুষের আর্তনাদ

‘আমরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছি’ গাজার হাজারো মানুষের আর্তনাদ

“আমরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছি।”—এটাই এখন গাজার হাজারো মানুষের আর্তনাদ। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ-সমর্থিত ক্ষুধা বিশেষজ্ঞরা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছেন, গাজায় “দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি” বিকশিত হচ্ছে। তবে গাজার জন্য এই আন্তর্জাতিক ঘোষণাটি নতুন কিছু নয়। কারণ, গত কয়েক মাস ধরেই তারা ক্ষুধায় সন্তানদের মৃত্যু দেখেছেন। খাদ্য, পানি ও ওষুধের চরম সংকটে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পুরো উপত্যকা।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এটি শুধু একটি দুর্ভিক্ষ নয়, এটি একটি নিয়ন্ত্রিত মানবিক বিপর্যয়, যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তায় আরও গভীর হয়ে উঠছে।

মধ্য গাজার মাঘাজির ৩৮ বছর বয়সী জামিল মুগারি বলেন, “আমার সব সন্তানের শরীরের ওজন প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। আমার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ের ওজন এখন মাত্র ১১ কেজি। আমার ছেলে মোহাম্মদ কেবল চামড়া এবং হাড় হয়ে গেছে। আমার সব সন্তানের অবস্থা এমন। আমার নিজের ওজন আগে ৮৫ কেজি ছিল, এখন আমার বয়স ৫৫-এ নেমে এসেছে।”

পরিবারের জন্য খাবার খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ধরে রাখতে জামিল লড়াই করছেন।

তিনি বলেন, “মাঝে মাঝে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আমার মাথা ঘোরে এবং আমি প্রায় পড়ে যাই। কিন্তু আমি নিজেকে সোজা থাকতে বাধ্য করি। আমি মাঝে মাঝে কাঁপুনি অনুভব করি।”

সপ্তাহের ব্যবধানে, গাজা দুটি ভয়াবহ মাইলফলক অতিক্রম করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদেরসহ প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে।

বোমা এবং বন্দুকযুদ্ধের সাথে সাথে দুর্ভিক্ষের কারণে নির্বিচারে হত্যার শিকার মানুষের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। মঙ্গলবার, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল বলেছে, “গাজা উপত্যকায় বর্তমানে দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি চলছে।”

ইসরায়েলের বিধিনিষেধের কারণে গাজায় এখন খাবার প্রায় অস্তিত্বহীন উল্লেখ করে জামিল বলেন, “আমরা এক বা দুই সপ্তাহ ধরে কোনো আটা ছাড়াই চলতে পারি। কখনো কখনো আমরা দিনে মাত্র একবারই খাই; ডাল, এবং কখনোা কখনো আমরা খাওয়ার জন্য কিছুই পাই না আমরা কেবল পেট ভরে রাখার জন্য পানি পান করে দিন কাটাই।”

জামিলের ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে এবং তার সব সন্তানই ১২ বছরের কম বয়সী। খাবারের জন্য তারা জীবনের ঝুঁকি নিতে চাইলেও, তারা তা করতে পারছে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জামায়াতে আমিরের রোগমুক্তি কামনায় কুমারখালীতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

‘আমরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছি’ গাজার হাজারো মানুষের আর্তনাদ

আপডেট সময় ০৯:২১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

“আমরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছি।”—এটাই এখন গাজার হাজারো মানুষের আর্তনাদ। চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ-সমর্থিত ক্ষুধা বিশেষজ্ঞরা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছেন, গাজায় “দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি” বিকশিত হচ্ছে। তবে গাজার জন্য এই আন্তর্জাতিক ঘোষণাটি নতুন কিছু নয়। কারণ, গত কয়েক মাস ধরেই তারা ক্ষুধায় সন্তানদের মৃত্যু দেখেছেন। খাদ্য, পানি ও ওষুধের চরম সংকটে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পুরো উপত্যকা।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এটি শুধু একটি দুর্ভিক্ষ নয়, এটি একটি নিয়ন্ত্রিত মানবিক বিপর্যয়, যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তায় আরও গভীর হয়ে উঠছে।

মধ্য গাজার মাঘাজির ৩৮ বছর বয়সী জামিল মুগারি বলেন, “আমার সব সন্তানের শরীরের ওজন প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। আমার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ের ওজন এখন মাত্র ১১ কেজি। আমার ছেলে মোহাম্মদ কেবল চামড়া এবং হাড় হয়ে গেছে। আমার সব সন্তানের অবস্থা এমন। আমার নিজের ওজন আগে ৮৫ কেজি ছিল, এখন আমার বয়স ৫৫-এ নেমে এসেছে।”

পরিবারের জন্য খাবার খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ধরে রাখতে জামিল লড়াই করছেন।

তিনি বলেন, “মাঝে মাঝে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আমার মাথা ঘোরে এবং আমি প্রায় পড়ে যাই। কিন্তু আমি নিজেকে সোজা থাকতে বাধ্য করি। আমি মাঝে মাঝে কাঁপুনি অনুভব করি।”

সপ্তাহের ব্যবধানে, গাজা দুটি ভয়াবহ মাইলফলক অতিক্রম করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদেরসহ প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে।

বোমা এবং বন্দুকযুদ্ধের সাথে সাথে দুর্ভিক্ষের কারণে নির্বিচারে হত্যার শিকার মানুষের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। মঙ্গলবার, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল বলেছে, “গাজা উপত্যকায় বর্তমানে দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি চলছে।”

ইসরায়েলের বিধিনিষেধের কারণে গাজায় এখন খাবার প্রায় অস্তিত্বহীন উল্লেখ করে জামিল বলেন, “আমরা এক বা দুই সপ্তাহ ধরে কোনো আটা ছাড়াই চলতে পারি। কখনো কখনো আমরা দিনে মাত্র একবারই খাই; ডাল, এবং কখনোা কখনো আমরা খাওয়ার জন্য কিছুই পাই না আমরা কেবল পেট ভরে রাখার জন্য পানি পান করে দিন কাটাই।”

জামিলের ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে এবং তার সব সন্তানই ১২ বছরের কম বয়সী। খাবারের জন্য তারা জীবনের ঝুঁকি নিতে চাইলেও, তারা তা করতে পারছে না।