ঢাকা ০৮:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাকরি হারানোর পর যা বললেন চ্যাটজিপিটির উদ্ভাবক স্যাম অল্টম্যান

বছরখানেক আগে চ্যাটজিপিটি এনে শোরগোল ফেলে দেয় ওপেনএআই নামে মার্কিন প্রযুক্তি খাতের আলোচিত প্রতিষ্ঠান। । প্রযুক্তিজগতে খ্যাতি পায় ওপেনএআই। নতুন করে প্রতিষ্ঠানটি আলোচনায় এসেছে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সহ–প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যানকে চাকরিচ্যুত করার মধ্য দিয়ে এর শুরু।

গতকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ওপেনএআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ এক বিবৃতিতে স্যাম অল্টম্যানকে চাকরি ছাড়া করার ঘোষণা দেয়। এর পরপর এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়ে পদ ছাড়ার কথা জানান ওপেনএআইয়ের আরেকজন সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রোকম্যান।

স্যাম অল্টম্যানের বয়স ৩৮ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরিতে স্যামের জন্ম। বিশ্বখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বছরখানেক আগে চ্যাটজিপিটি বাজারে ছেড়ে স্যামের হাত ধরে প্রযুক্তিজগতে খ্যাতি পায় ওপেনএআই। এই জগতে রীতিমতো তারকা বনে যান স্যাম।

কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি (স্যাম) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে খোলাখুলি যোগাযোগ করছিলেন না। একটা দূরত্ব জিইয়ে রেখেছিলেন, যা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় তাঁর সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছিল। এর ফলে পরিচালনা পর্ষদ স্যাম অল্টম্যানের ওপর আস্থা রাখতে পারছিল না। তাঁর চাকরি হারানোর কারণ এটাই। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে সিইওর পদ থেকে সরানো হয়েছে স্যাম অল্টম্যানকে। এখন প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) মিরা মুরাতি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য প্রতিষ্ঠানের সিইওর দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ।

চাকরি হারানোর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন স্যাম অল্টম্যান। তিনি লিখেন, ওপেনএআইয়ে কাজ করার সময়টা বেশ উপভোগ করেছেন তিনি। স্যাম লিখেন, এ কাজ আমার বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। আমি বরাবর প্রতিভাবানদের সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করি। এখানে সেটাই করেছি।

স্যাম অল্টম্যানের চাকরি হারানো খবর প্রযুক্তি জগতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে গুগলের সাবেক সিইও এরিক স্মিট লিখেন, তিনি (স্যাম) আমার কাছে একজন নায়ক। আমাদের সমন্বিত বিশ্বে তিনি পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। তিনি (স্যাম) এরপরে কি করতে যাচ্ছেন, সেটা জানার জন্য আমি মুখিয়ে আছি। শুধু আমি নই, কোটি কোটি মানুষ তাঁর ভবিষ্যতের কাজের মাধ্যমে লাভবান হবেন।

প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ওপেনএআইয়ের প্রেসিডেন্ট ও সহপ্রতিষ্ঠাতা গ্রেগ ব্রোকম্যান। এক্স পোস্টে তিনি লিখেন, আট বছর আগে আমার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ওপেনএআইয়ের যাত্রা শুরু। ওই সময়ে আমরা একসঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছি। আমি ওই সময়টা নিয়ে ভীষণ গর্বিত। আমরা একসঙ্গে কঠিন ও সুন্দর সময় পার করেছি। নানা কারণ থাকার পরও স্যামকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়াটা খুবই অস্বাভাবিক। আজকের খবরের ভিত্তিতে বলছি, আমি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছি।

২০১৫ সালে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ওপেনএআই। পরে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি পুনর্গঠন করা হয়। বর্তমানে ওপেনএআইয়ে বিনিয়োগ করেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট। কয়েক সপ্তাহ আগে ওপেনএআই জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি আট হাজার কোটি ডলারের শেয়ার বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির জন্য আলোচনা করেছিল।

চ্যাটজিপিটি একটি শক্তিশালী মেশিন লার্নিং মডেল বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে শেখার পদ্ধতি। ভাষা ইনপুট হিসেবে দিলে চ্যাটজিপিটি সেটি বুঝতে পারে। সেই কথার প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারে। চ্যাটজিপিটির কারণে লেখক ও সম্পাদকসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিতরা ক্ষতির মুখোমুখি হতে শুরু করেছেন।

ধনকুবের ইলন মাস্ক ওপেনএআইয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন কো–চেয়ার ছিলেন। সরাসরি স্যাম অল্টম্যানের সঙ্গে কাজ করেছেন। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও সেই অবস্থান থেকে সরে আসায় ওপেনএআইয়ের সমালোচনা করেছেন ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় সংবাদ

চাকরি হারানোর পর যা বললেন চ্যাটজিপিটির উদ্ভাবক স্যাম অল্টম্যান

আপডেট সময় ০৭:১৮:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

বছরখানেক আগে চ্যাটজিপিটি এনে শোরগোল ফেলে দেয় ওপেনএআই নামে মার্কিন প্রযুক্তি খাতের আলোচিত প্রতিষ্ঠান। । প্রযুক্তিজগতে খ্যাতি পায় ওপেনএআই। নতুন করে প্রতিষ্ঠানটি আলোচনায় এসেছে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সহ–প্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যানকে চাকরিচ্যুত করার মধ্য দিয়ে এর শুরু।

গতকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ওপেনএআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ এক বিবৃতিতে স্যাম অল্টম্যানকে চাকরি ছাড়া করার ঘোষণা দেয়। এর পরপর এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট দিয়ে পদ ছাড়ার কথা জানান ওপেনএআইয়ের আরেকজন সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রোকম্যান।

স্যাম অল্টম্যানের বয়স ৩৮ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরিতে স্যামের জন্ম। বিশ্বখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। বছরখানেক আগে চ্যাটজিপিটি বাজারে ছেড়ে স্যামের হাত ধরে প্রযুক্তিজগতে খ্যাতি পায় ওপেনএআই। এই জগতে রীতিমতো তারকা বনে যান স্যাম।

কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি (স্যাম) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে খোলাখুলি যোগাযোগ করছিলেন না। একটা দূরত্ব জিইয়ে রেখেছিলেন, যা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় তাঁর সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছিল। এর ফলে পরিচালনা পর্ষদ স্যাম অল্টম্যানের ওপর আস্থা রাখতে পারছিল না। তাঁর চাকরি হারানোর কারণ এটাই। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে সিইওর পদ থেকে সরানো হয়েছে স্যাম অল্টম্যানকে। এখন প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) মিরা মুরাতি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য প্রতিষ্ঠানের সিইওর দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ।

চাকরি হারানোর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন স্যাম অল্টম্যান। তিনি লিখেন, ওপেনএআইয়ে কাজ করার সময়টা বেশ উপভোগ করেছেন তিনি। স্যাম লিখেন, এ কাজ আমার বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। আমি বরাবর প্রতিভাবানদের সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করি। এখানে সেটাই করেছি।

স্যাম অল্টম্যানের চাকরি হারানো খবর প্রযুক্তি জগতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে গুগলের সাবেক সিইও এরিক স্মিট লিখেন, তিনি (স্যাম) আমার কাছে একজন নায়ক। আমাদের সমন্বিত বিশ্বে তিনি পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। তিনি (স্যাম) এরপরে কি করতে যাচ্ছেন, সেটা জানার জন্য আমি মুখিয়ে আছি। শুধু আমি নই, কোটি কোটি মানুষ তাঁর ভবিষ্যতের কাজের মাধ্যমে লাভবান হবেন।

প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ওপেনএআইয়ের প্রেসিডেন্ট ও সহপ্রতিষ্ঠাতা গ্রেগ ব্রোকম্যান। এক্স পোস্টে তিনি লিখেন, আট বছর আগে আমার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ওপেনএআইয়ের যাত্রা শুরু। ওই সময়ে আমরা একসঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছি। আমি ওই সময়টা নিয়ে ভীষণ গর্বিত। আমরা একসঙ্গে কঠিন ও সুন্দর সময় পার করেছি। নানা কারণ থাকার পরও স্যামকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়াটা খুবই অস্বাভাবিক। আজকের খবরের ভিত্তিতে বলছি, আমি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছি।

২০১৫ সালে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ওপেনএআই। পরে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি পুনর্গঠন করা হয়। বর্তমানে ওপেনএআইয়ে বিনিয়োগ করেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট। কয়েক সপ্তাহ আগে ওপেনএআই জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি আট হাজার কোটি ডলারের শেয়ার বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির জন্য আলোচনা করেছিল।

চ্যাটজিপিটি একটি শক্তিশালী মেশিন লার্নিং মডেল বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে শেখার পদ্ধতি। ভাষা ইনপুট হিসেবে দিলে চ্যাটজিপিটি সেটি বুঝতে পারে। সেই কথার প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারে। চ্যাটজিপিটির কারণে লেখক ও সম্পাদকসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিতরা ক্ষতির মুখোমুখি হতে শুরু করেছেন।

ধনকুবের ইলন মাস্ক ওপেনএআইয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন কো–চেয়ার ছিলেন। সরাসরি স্যাম অল্টম্যানের সঙ্গে কাজ করেছেন। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও সেই অবস্থান থেকে সরে আসায় ওপেনএআইয়ের সমালোচনা করেছেন ইলন মাস্ক।