গাজা সিটিতে সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফায় ইসরাইলি বাহিনী অভিযান চালানোর সময় ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। এই হাসপাতালে অবস্থান করছেন কয়েক হাজার রোগী, চিকিৎসক, স্টাফ এবং বাস্তুচ্যুত মানুষ। তারা সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। হাসপাতালটির একজন চিকিৎসক বলেছেন, এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতাল খালি করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
জাতিসংঘ বলেছে, বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে ১১ই নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালে কমপক্ষে ৪০ জন রোগী মারা গেছেন। এর মধ্যে আছে অপরিণত চারটি শিশু। হাসপাতালটির প্রশাসকরা এসব তথ্য দিয়েছেন।
পানি এবং ধোয়া-মোছার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রতিদিন গাজায় দুই ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইল। সহায়তা বিষয়ক গ্রুপগুলো বলছে, চাহিদার তুলনায় এই পরিমাণ খুবই সামান্য। এই অনুমতি দেয়ারও বিরোধিতা করেছে ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ও উগ্রবাদী ইতামার বেন গাভির ও কয়েকজন নেতা। তিনি একে ইসরাইলের ভুল নীতি বলে অভিহিত করেছেন। বলেছেন, যতক্ষণ জিম্মিদের মুক্তি না দেবে হামাস, ততক্ষণ শত্রুদের মানবিক উপহার দেয়ার কোনো অর্থ হয় না। একে সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত বলে সমালোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে শত্রুদের যেন অক্সিজেন দেয়া হলো। জাতীয়তাবাদী উগ্র ডানপন্থি দলটির প্রধান আভিগডর লিবারম্যান মন্ত্রিপরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে এই বেপরোয়া সিদ্ধান্ত বন্ধ করতে।
ওদিকে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেখানে নানা রকম রোগ ছড়িয়ে পড়া এবং মানুষ অনাহারী থাকায় মানবিক সঙ্কট আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনপন্থি কোনো বক্তব্য ব্যবহার করলে এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্ট ব্যবহারকারীদের সাসপেন্ড করার হুমকি দিয়েছেন ইলন মাস্ক।
খান ইউনুস থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক বলছেন, আল শিফা হাসপাতালের ভিতরে থাকা একজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। ওই চিকিৎসক তাকে জানিয়েছেন যে, আল রশিদ সড়ক ধরে আল শিফা হাসপাতালের প্রতিজন মানুষকে সরে যাওয়ার জন্য ঠিক এক ঘণ্টা সময় দিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। সাধারণত লোকজন দক্ষিণে সরে যাওয়ার জন্য এই রুটটি ব্যবহার করেন না। তারা ব্যবহার করেন সালাহ আল-দিন সড়ক। তা সত্ত্বেও তাদেরকে এক ঘণ্টা সময় দেয়া হয়েছে হাসপাতাল খালি করে দিতে। ওই চিকিৎসক আরও বলেছেন, এক ঘণ্টার মধ্যে সব মানুষকে সরিয়ে নিয়ে হাসপাতাল খালি করা অসম্ভব। কারণ রোগী ও অপরিণত শিশুদেরকে বহন করার মতো পর্যাপ্ত এম্বুলেন্স তাদের নেই। তিনি এ অবস্থাকে আরেক সঙ্কট বলে অভিহিত করেন।