ঢাকা ০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo বাজারে কমছে চালের দাম,বন্দরে ঢুকছে ভারতীয় চাল বোঝাই শত শত ট্রাক Logo চকরিয়া থানায় যুবকের মৃত্যু: এএসআইসহ ৩ পুলিশ প্রত্যাহার Logo ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে ব্যর্থ, পদত্যাগ করলেন ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী Logo কিশোরগঞ্জে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, দুই নেতাকে বহিষ্কার Logo জাকসুতে কর্মী সংকটে প্যানেল ঘোষণা করতে পারছে না বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো Logo আজ ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার Logo দেশকে বিরাজনীতিকরণে নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ সক্রিয়: মির্জা আব্বাস Logo লিটনকে অধিনায়ক করে এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা Logo নীতি পরিপন্থী কার্যকলাপের জন্য মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি নেতার পদ স্থগ Logo ফ্যাসিবাদী বিজেপি’ ও মোদির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন থালাপতি বিজয়

জাসদ কর্মীকে হত্যার অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৩

জাসদ কর্মীকে হত্যার অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৩

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কর্মী জমির উদ্দিনকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরের দিকে উপজেলার আমলা ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম।

আটক অনিক খান (২৪) আমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও মিটন গ্রামের সোনারুল খানের ছেলে, নাঈম (২৩) একই গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে ও নাঈম (২৩) নিমাই চাঁদের ছেলে।

নিহত জমির উদ্দিন (৪৮) আমলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মিটন গ্রামের মন্ডল পাড়ার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ ও দিনমজুরী করতেন। পাশাপাশি জাসদের কর্মী হিসেবে স্থানীয় রাজনীতি করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত জমির উদ্দিন জাসদের রাজনীতি করতেন। আওয়ামী লীগের সময় জাসদ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, স্থানীয় রাজনীতি করতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছাত্রদল নেতা অনিককে মারপিট করেছিল জমির। এ নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অনিক ও জমিরের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা ছিল। পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে অনিক ও তার লোকজন জমিরকে হত্যা করেছে।

নিহতের ছেলে জিহাদ আলী বলেন, সোমবার দুপুর ২টার টার দিকে আমাদের নিজ বাড়ি থেকে আব্বু তার মামা বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় পথের মধ্যে সিএনজি থেকে নামিয়ে কুপিয়ে ও মারপিট করে ছাত্রদল নেতা অনিক ও তার লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

জিহাদ আলী আরও বলেন, আহত অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি হত্যাকারীদের সবকিছু আমাদের বলেছেন। ছাত্রদল নেতা অনিক ও তার লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার আব্বুকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নিহতের স্ত্রী জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে কোনো এক ঘটনায় স্থানীয় চায়ের দোকানে অনিককে মেরেছিলেন তার স্বামী। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত সিংহ রায় জানান, গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত জমির উদ্দিন জাসদের কর্মী ছিলেন। এরপর সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় তাকে আর দেখা যায়নি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রদল নেতা বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমরা কোনো কিছু জানি না এবং এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত সেই ব্যাপারেও আমরা কিছু জানি না। তবে অনিক আমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি। যদি সে কোন ধরনের কোন অপরাধের সাথে জড়িত থাকে। তাহলে তার দায় তাকেই নিতে হবে৷

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে জমিরকে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলে আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাজারে কমছে চালের দাম,বন্দরে ঢুকছে ভারতীয় চাল বোঝাই শত শত ট্রাক

জাসদ কর্মীকে হত্যার অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৩

আপডেট সময় ১০:২৯:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কর্মী জমির উদ্দিনকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরের দিকে উপজেলার আমলা ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম।

আটক অনিক খান (২৪) আমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও মিটন গ্রামের সোনারুল খানের ছেলে, নাঈম (২৩) একই গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে ও নাঈম (২৩) নিমাই চাঁদের ছেলে।

নিহত জমির উদ্দিন (৪৮) আমলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মিটন গ্রামের মন্ডল পাড়ার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ ও দিনমজুরী করতেন। পাশাপাশি জাসদের কর্মী হিসেবে স্থানীয় রাজনীতি করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত জমির উদ্দিন জাসদের রাজনীতি করতেন। আওয়ামী লীগের সময় জাসদ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, স্থানীয় রাজনীতি করতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছাত্রদল নেতা অনিককে মারপিট করেছিল জমির। এ নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অনিক ও জমিরের মধ্যে পূর্ব শত্রুতা ছিল। পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে অনিক ও তার লোকজন জমিরকে হত্যা করেছে।

নিহতের ছেলে জিহাদ আলী বলেন, সোমবার দুপুর ২টার টার দিকে আমাদের নিজ বাড়ি থেকে আব্বু তার মামা বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় পথের মধ্যে সিএনজি থেকে নামিয়ে কুপিয়ে ও মারপিট করে ছাত্রদল নেতা অনিক ও তার লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

জিহাদ আলী আরও বলেন, আহত অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি হত্যাকারীদের সবকিছু আমাদের বলেছেন। ছাত্রদল নেতা অনিক ও তার লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার আব্বুকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নিহতের স্ত্রী জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে কোনো এক ঘটনায় স্থানীয় চায়ের দোকানে অনিককে মেরেছিলেন তার স্বামী। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত সিংহ রায় জানান, গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত জমির উদ্দিন জাসদের কর্মী ছিলেন। এরপর সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকায় তাকে আর দেখা যায়নি।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রদল নেতা বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমরা কোনো কিছু জানি না এবং এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত সেই ব্যাপারেও আমরা কিছু জানি না। তবে অনিক আমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি। যদি সে কোন ধরনের কোন অপরাধের সাথে জড়িত থাকে। তাহলে তার দায় তাকেই নিতে হবে৷

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে জমিরকে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলে আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।