ঢাকা ১১:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo অবশেষে ক্ষমা চাইলেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী Logo খামেনিকে ভয়ংকর মৃত্যু থেকে বাঁচালাম, ধন্যবাদ টুকুও জানাল না: ট্রাম্প Logo নবী (সা.) ও সাহাবিদের নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে আইনজীবী গ্রেফতার Logo জুলাই পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ: পরিবর্তন কতটুকু? Logo আগামী সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে: ট্রাম্প Logo প্রধান উপদেষ্টার জন্মদিনে কেক ও ফুল পাঠালেন তারেক রহমান Logo আগামী নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সবচাইতে ভালো নির্বাচন: প্রেস সচিব Logo ‘জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি’ Logo মুন্সীগঞ্জে গোলাপ জলে গোসল করে নেতা- “আর আওয়ামীলীগ করবো না” Logo প্রেসিডেন্ট হওয়া সবচেয়ে বিপজ্জনক কাজ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

তিন দিনে গাজায় ১৫ ইসরাইলি সেনা নিহত

ঢাকাভয়েস ডেক্স:ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেডের ধারাবাহিক হামলায় এই সেনারা প্রাণ হারান বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

শুক্রবার (২৭ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর গাজার তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর একটি সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে বিস্ফোরক রকেট হামলা চালায় আল কাসাম ব্রিগেড।
এতে গাড়িতে থাকা ১৭ সেনার মধ্যে ৭ জন নিহত এবং বাকিরা গুরুতর আহত হন। এ হামলাটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত ও নিখুঁত আক্রমণ।

তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানায়, একদিন আগেই (বৃহস্পতিবার) গাজা সিটির কেন্দ্রীয় এলাকায় আল কাসামের ব্রিগেডের গুলিতে এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হন।
একই সঙ্গে বিস্ফোরক রকেট দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয় ইসরায়েলি বাহিনীর দু’টি মেরকাভা ট্যাংক, একটি সাঁজোয়া যান ও একটি বুলডোজার।
তারও একদিন আগে (বুধবার) দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় সংঘটিত আরেকটি হামলায় প্রাণ হারান আরও সাত ইসরায়েলি সেনা।

নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার কর্মকর্তা। আল কাসাম ব্রিগেডের ছদ্মবেশী যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের লক্ষ্যবস্তু করে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চে গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের নতুন অভিযান শুরুর পর, এত অল্প সময়ের মধ্যে এতজন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম।বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য এক গুরুতর মনস্তাত্ত্বিক ও কৌশলগত ধাক্কা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ওই দিন থেকেই গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
সরকারি হিসেবে, এখন পর্যন্ত এই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৬ হাজার ৩৬৫ জন, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন। বেশিরভাগ হতাহতই নারী ও শিশু।
প্রায় ১৫ মাস টানা অভিযান চালানোর পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। তবে এই শান্তি স্থায়ী হয়নি।

চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। একইসঙ্গে খাবার ও ওষুধসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করায় গাজায় শুরু হয়েছে ভয়াবহ মানবিক সংকট।
হামাসের হাতে থাকা ২৫১ জিম্মির মধ্যে এখনো প্রায় ৩৫ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাদের উদ্ধারে নতুন করে অভিযান জোরদার করছে ইসরায়েল। তবে সংঘর্ষ বাড়ায় জিম্মিদের জীবন আরও বিপন্ন হয়ে উঠছে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের অভিযানের বিরুদ্ধে একাধিকবার বক্তব্য দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এ ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ কার্যকর সমঝোতায় পৌঁছায়নি।

 

 

ঢাকাভয়েস২৪/সাদিক

ট্যাগস :

অবশেষে ক্ষমা চাইলেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী

তিন দিনে গাজায় ১৫ ইসরাইলি সেনা নিহত

আপডেট সময় ০২:৫৭:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

ঢাকাভয়েস ডেক্স:ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেডের ধারাবাহিক হামলায় এই সেনারা প্রাণ হারান বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

শুক্রবার (২৭ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর গাজার তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর একটি সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে বিস্ফোরক রকেট হামলা চালায় আল কাসাম ব্রিগেড।
এতে গাড়িতে থাকা ১৭ সেনার মধ্যে ৭ জন নিহত এবং বাকিরা গুরুতর আহত হন। এ হামলাটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত ও নিখুঁত আক্রমণ।

তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানায়, একদিন আগেই (বৃহস্পতিবার) গাজা সিটির কেন্দ্রীয় এলাকায় আল কাসামের ব্রিগেডের গুলিতে এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হন।
একই সঙ্গে বিস্ফোরক রকেট দিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয় ইসরায়েলি বাহিনীর দু’টি মেরকাভা ট্যাংক, একটি সাঁজোয়া যান ও একটি বুলডোজার।
তারও একদিন আগে (বুধবার) দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় সংঘটিত আরেকটি হামলায় প্রাণ হারান আরও সাত ইসরায়েলি সেনা।

নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার কর্মকর্তা। আল কাসাম ব্রিগেডের ছদ্মবেশী যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের লক্ষ্যবস্তু করে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চে গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের নতুন অভিযান শুরুর পর, এত অল্প সময়ের মধ্যে এতজন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম।বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য এক গুরুতর মনস্তাত্ত্বিক ও কৌশলগত ধাক্কা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ওই দিন থেকেই গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
সরকারি হিসেবে, এখন পর্যন্ত এই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৬ হাজার ৩৬৫ জন, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন। বেশিরভাগ হতাহতই নারী ও শিশু।
প্রায় ১৫ মাস টানা অভিযান চালানোর পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। তবে এই শান্তি স্থায়ী হয়নি।

চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। একইসঙ্গে খাবার ও ওষুধসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করায় গাজায় শুরু হয়েছে ভয়াবহ মানবিক সংকট।
হামাসের হাতে থাকা ২৫১ জিম্মির মধ্যে এখনো প্রায় ৩৫ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাদের উদ্ধারে নতুন করে অভিযান জোরদার করছে ইসরায়েল। তবে সংঘর্ষ বাড়ায় জিম্মিদের জীবন আরও বিপন্ন হয়ে উঠছে বলে আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের অভিযানের বিরুদ্ধে একাধিকবার বক্তব্য দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এ ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ কার্যকর সমঝোতায় পৌঁছায়নি।

 

 

ঢাকাভয়েস২৪/সাদিক