ঢাকা ০৪:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo হাতিয়ায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র প্রার্থী ঘোষণা Logo ঢাকা ডিবেটিং সোসাইটি (DDS) এর নেতৃত্বে যুবায়ের-জাকারিয়া Logo লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজে হামলার হুমকি হুথি বিদ্রোহীর Logo ড্র দিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র শুরু বাংলাদেশের Logo ইউআইইউ‘র ২২ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার Logo সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে গেলে আরেকটা ফ্যাসিবাদ জন্ম দেবে: গোলাম পরওয়ার Logo বিএনপি নেতার গুদাম থেকে ৩০৪ বস্তা চাল উদ্ধার করল সেনাবাহিনী Logo ইরানের পরবর্তী সম্ভাব্য উত্তরসূরি মনোনীত করলেন খামেনি Logo এবার ইরানের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা হিজবুল্লাহর Logo আজীবন ক্ষমতায় থাকতে ইরান যুদ্ধকে ব্যবহার করছে নেতানিয়াহু : বিল ক্লিনটন

ছাত্রলীগ নেতা এখন ছাত্রদল সভাপতি

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপির এক পথসভায় এক ছাত্রদল নেতা উপস্থিত দলটির নেতাকর্মীদের ‘মুজিবীয়’ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বক্তব্য দিয়েছেন। তবে এমন বক্তব্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন পথসভায় উপস্থিত থাকা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা। শুক্রবার রাতে সাত সেকেণ্ডের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটি অল্প সময়ে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

এদিকে এমন বক্তব্য দেওয়া ছাত্রদল নেতা আগে ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। পরে নানা তদবিরে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। এ বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন ছাত্রদল কমিটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে একটি পোস্টারও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে ছাত্রলীগ আমলে ও ছাত্রদলের আমলে দুই ব্যানারে পোস্টারটি সাঁটানো হয়েছিল।

তবে এ বক্তব্যটি অনেক পুরাত বলে দাবি ছাত্রদল নেতাদের। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে জানানো হয়েছে তারা ব্যবস্থা নিবে বলে তারা জানিয়েছেন। ‘মুজিবীয়’ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপির পথসভায় বক্তব্য দেওয়া ছাত্রদল নেতার নাম নাহিদ হাসান। তিনি উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।

তবে বিএনপিদলীয় সূত্র জানায়, চার থেকে পাঁচ মাস আগে প্রহল্লাদপুর এলাকার লোহাগাছিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত একটি পথসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় ভুল করে সে কথা বলে ফেলেন ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি নাহিদ হাসান।

ভাইরাল ভিডিওতে নাহিদকে বলতে শোনা গেছে, ‘স্থানীয় প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সবাই আমার’-এরপরই তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এর পর তাকে ওইপথসভা মঞ্চ থেকে সরানো হয়। এ নিয়ে তখনই বেশ সমালোচনা হয়েছিল বলে জানান ছাত্রদল কর্মীরা।

বক্তব্যের বিষয়টি জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও নাহিদ হাসানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বক্তব্য ভাইরলার হওয়ার পর থেকে তার মুঠোফোন নাম্বারটি বন্ধ আছে।

তবে ইউনিয়ন ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলার সব ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা হওয়ার অনেক পর এক ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এ কমিটি নিয়ে বিতর্ক ছিল। এদিকে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল সরকারের একার সিদ্ধান্তে ও জেলা ছাত্রদল সভাপতির সুপারিশে নাহিদ হাসানকে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি করা হয়েছিল। নাহিদ ছাত্রলীগের নেতা জানার পরও তাকে বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে ছাত্রদলেরর সভাপতির পদটি দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের বহু পোস্টার-ফেস্টুন এলাকায় সাঁটানো থাকলেও তাকেই সভাপতি করা হয়েছিল। এ নিয়ে ইউনিয়ন ছাত্রদলের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছিল।

এদিকে দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টারে দেখা যায়, গাজীপুর ৩ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজের ছবিসহ নাহিদ হাসানের একটি পোস্টার ঘুরছে। একই সময় আরেকটি পোস্টার ঘুরছে যেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতার ছবি সংবলিত পোস্টার। তবে এ পোস্টার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে। এটি এডিট করা কোনো পোস্টার কিনা সেটাই যাচাই করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

প্রহল্লাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জনি সিকদার বলেন, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে আমাদের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। আ. লীগের দুঃশাসনের আমলে নাহিদসহ আমরা ছাত্রদলের কর্মীদের নিয়ে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। ছাত্রদলের দুর্দিনে নাহিদের অবদান অনেক। নাহিদ বহু কষ্ট করেছে ছাত্রদলের কর্মীদের ধরে রাখতে। তাদের পাশে থাকতে। তবে সে ছাত্রলীগ করতো এমনটি তিনি স্বীকার করেনি।

এদিকে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম সরকারে কাছের এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটি নিয়ে একা আমার দায় কেন? এ কমিটি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দুজন সক্ষরতি কমিটি হয়েছে। এখন ঘুরেফিরে আমার দায় ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ইউনিয়ন সভাপতি নাহিদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। এখন সে জবাব দিক। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল জানান, চার-পাঁচ মাস আগে প্রহল্লাদপুর এলাকায় একটি পথসভায় ওই বক্তব্যটি দিয়েছিলেন নাহিদ। নাহিদ দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদল করছেন। তিনি কেন এমন বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি নিয়ে এরই মধ্যে আমরা বসেছিলাম। সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

হাতিয়ায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র প্রার্থী ঘোষণা

ছাত্রলীগ নেতা এখন ছাত্রদল সভাপতি

আপডেট সময় ০৬:০৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপির এক পথসভায় এক ছাত্রদল নেতা উপস্থিত দলটির নেতাকর্মীদের ‘মুজিবীয়’ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বক্তব্য দিয়েছেন। তবে এমন বক্তব্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন পথসভায় উপস্থিত থাকা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা। শুক্রবার রাতে সাত সেকেণ্ডের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটি অল্প সময়ে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

এদিকে এমন বক্তব্য দেওয়া ছাত্রদল নেতা আগে ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। পরে নানা তদবিরে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। এ বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন ছাত্রদল কমিটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে একটি পোস্টারও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে ছাত্রলীগ আমলে ও ছাত্রদলের আমলে দুই ব্যানারে পোস্টারটি সাঁটানো হয়েছিল।

তবে এ বক্তব্যটি অনেক পুরাত বলে দাবি ছাত্রদল নেতাদের। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে জানানো হয়েছে তারা ব্যবস্থা নিবে বলে তারা জানিয়েছেন। ‘মুজিবীয়’ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপির পথসভায় বক্তব্য দেওয়া ছাত্রদল নেতার নাম নাহিদ হাসান। তিনি উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।

তবে বিএনপিদলীয় সূত্র জানায়, চার থেকে পাঁচ মাস আগে প্রহল্লাদপুর এলাকার লোহাগাছিয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত একটি পথসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় ভুল করে সে কথা বলে ফেলেন ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি নাহিদ হাসান।

ভাইরাল ভিডিওতে নাহিদকে বলতে শোনা গেছে, ‘স্থানীয় প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সবাই আমার’-এরপরই তাঁর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এর পর তাকে ওইপথসভা মঞ্চ থেকে সরানো হয়। এ নিয়ে তখনই বেশ সমালোচনা হয়েছিল বলে জানান ছাত্রদল কর্মীরা।

বক্তব্যের বিষয়টি জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও নাহিদ হাসানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বক্তব্য ভাইরলার হওয়ার পর থেকে তার মুঠোফোন নাম্বারটি বন্ধ আছে।

তবে ইউনিয়ন ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলার সব ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা হওয়ার অনেক পর এক ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এ কমিটি নিয়ে বিতর্ক ছিল। এদিকে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল সরকারের একার সিদ্ধান্তে ও জেলা ছাত্রদল সভাপতির সুপারিশে নাহিদ হাসানকে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি করা হয়েছিল। নাহিদ ছাত্রলীগের নেতা জানার পরও তাকে বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে ছাত্রদলেরর সভাপতির পদটি দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের বহু পোস্টার-ফেস্টুন এলাকায় সাঁটানো থাকলেও তাকেই সভাপতি করা হয়েছিল। এ নিয়ে ইউনিয়ন ছাত্রদলের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছিল।

এদিকে দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টারে দেখা যায়, গাজীপুর ৩ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজের ছবিসহ নাহিদ হাসানের একটি পোস্টার ঘুরছে। একই সময় আরেকটি পোস্টার ঘুরছে যেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতার ছবি সংবলিত পোস্টার। তবে এ পোস্টার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকে। এটি এডিট করা কোনো পোস্টার কিনা সেটাই যাচাই করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

প্রহল্লাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জনি সিকদার বলেন, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে আমাদের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। আ. লীগের দুঃশাসনের আমলে নাহিদসহ আমরা ছাত্রদলের কর্মীদের নিয়ে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। ছাত্রদলের দুর্দিনে নাহিদের অবদান অনেক। নাহিদ বহু কষ্ট করেছে ছাত্রদলের কর্মীদের ধরে রাখতে। তাদের পাশে থাকতে। তবে সে ছাত্রলীগ করতো এমনটি তিনি স্বীকার করেনি।

এদিকে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম সরকারে কাছের এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটি নিয়ে একা আমার দায় কেন? এ কমিটি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দুজন সক্ষরতি কমিটি হয়েছে। এখন ঘুরেফিরে আমার দায় ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ইউনিয়ন সভাপতি নাহিদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। এখন সে জবাব দিক। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল জানান, চার-পাঁচ মাস আগে প্রহল্লাদপুর এলাকায় একটি পথসভায় ওই বক্তব্যটি দিয়েছিলেন নাহিদ। নাহিদ দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদল করছেন। তিনি কেন এমন বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি নিয়ে এরই মধ্যে আমরা বসেছিলাম। সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।