ফিলিস্তিনের যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও চিকিৎসা উপকরণবাহী জাহাজ পাঠিয়েছে তুরস্ক। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. ফাহরেতিন কোকা এক টুইটবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাহাজটি মিসরের এল আরিশ বন্দরে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। মিসরের এই বন্দরটি গাজা ও মিসরের মধ্যকার সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছে অবস্থিত। ক্রসিং থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে এল আরিশ বন্দর। যুদ্ধের গত ৩৭ দিনে গাজা উপত্যকায় এই প্রথম সহায়তা হিসেবে হাসপাতাল নির্মাণ সামগ্রী এলো।
তুরস্কের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোট ৮টি ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুতের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, জেনারেটর, চিকিৎসা উপকরণ ও অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে জাহাজটিতে।
এএফপিকে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘গাজা উপত্যকার এখন যে পরিস্থিতি, তাতে সেখানে ফিল্ড হাসপাতাল নির্মানের মতো অবস্থা নেই। আমরা মিসরের সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, যেন বন্দর ও তার আশপাশের এলাকায় নির্মাণ করা হয়। গাজার রোগী ও আহতদের চিকিৎসার জন্যই এই অনুরোধ করেছি আমরা। মিসরের সরকার অনুরোধে সাড়া দিয়েছে। সরকারি কর্তৃপক্ষ যেসব জায়গা নির্দিষ্ট করে দেবে, সেসব স্থানেই ফিল্ড হাসপাতালের নির্মাণ হবে।
গত ০৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলার পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এই অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
গত ৩৭ দিন ধরে চলা এই অভিযানে গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১১ হাজার ৭৮ জন মানুষ। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও কয়েক হাজার। ইসরায়েলি বিমান ও স্থলবাহিনী অভিযান অব্যাহত রাখায় প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
হামলার প্রথম দিনই গাজা উপত্যকায় পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল ইসরায়েল। পাশপাশি জ্বালানি তেল প্রবেশেও নিষিদ্ধ করেছিল।
ইসরায়েলি অভিযান চালানোর কয়েক দিনের মধ্যেই জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উপত্যকার একমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি। এখন একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হাসপাতালগুলোও। উপত্যকার বড় দু’টি হাসপাতাল আল শিফা ও আল কুদস হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে সোমবার। এর আগে গত সপ্তাহে আরও ৭-৮টি হাসপাতাল জ্বালানির অভাবে চিকিৎসাসেবা স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়েছে।