কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দলীয় কোন্দলের কারণে গত ১১ মাসে তিনবার উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ দলের নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে আইনি নোটিশ দিয়েছেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আইনজীবী আবুল হাশেম।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল হক। কমিটিতে মো. রফিকুল হোসেনকে আহ্বায়ক, সাদেক হোসেন ভূঁইয়া, এম এ করিম মজুমদার, মো. আবুল খায়ের আবু, মো. ইউসুফ ভূঁইয়া, মো. মজিবুর রহমান ও মো. মিজানুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। এ ছাড়া আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন মো. সামছুদ্দিন কালু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবু ইউসুফ, শাহজাহান মজুমদার, আবু বকর ছিদ্দিক, শাহজাহান বাবলু, নুরুল্লাহ মজুমদার, আবুল কাশেম, নাজমুল হাছান ভূঁইয়া, আবু তাহের, মফিজুর রহমান হক, মনিরুজ্জামান খান, আবুল হাশেম, তৌহিদুর রহমান মজুমদার, সলিমুল্লাহ মিয়াজীসহ আরও ৮৬ জন।
এ ছাড়া ২২ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। উপদেষ্টা কমিটিতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এমরান কবির চৌধুরী ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়াকে উপদেষ্টা রাখা হয়। রুহুল আমিন ভূঁইয়া কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগেরও উপদেষ্টা।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ হয়ে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল হাশেম লিগ্যাল নোটিশ দেন। এতে তিনি ১১ মাসের মধ্যে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন। লিগ্যাল নোটিশে তিনি তাঁর নাম আহ্বায়ক কমিটির ১৩ নম্বরে থাকায় অসম্মানিত বোধ করেন বলে উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে আগের কমিটির সভাপতি আবু ইউসুফ ও সাধারণ সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিককে পুনর্বহালের দাবি জানান।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সামছুদ্দিন কালুকে সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ অধ্যক্ষ আবু ইউসুফকে সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা পরিষদের সদস্য আবু বকর ছিদ্দিককে সম্পাদক করে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ওই কমিটি বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি গঠন করে।
এই দুই কমিটি নিয়ে আপত্তি তোলে নাঙ্গলকোট আওয়ামী লীগের বিবদমান পক্ষগুলো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদের কক্ষে এক সভা হয়। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল হক উপস্থিত ছিলেন। এতে নাঙ্গলকোটের ছয়জন নেতার বক্তব্য নেওয়া হয়। ওই দিন রাতেই রফিকুল হোসেনকে আহ্বায়ক ও সাদেক হোসেন ভূঁইয়াকে সদস্যসচিব করে কমিটি করা হয়।
১০ নভেম্বর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল হাশেম গঠনতন্ত্রপরিপন্থী কমিটি হওয়ায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ দেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মুজিবুল হক বলেন, নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। দলের সভাপতির নির্বাচনী এলাকা এটি।