ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ডাকাতির সময় চাহিদামতো অর্থ ও মালামাল না পেয়ে সশস্ত্র ডাকাতরা মরদেহের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছেন।
ডাকাতের হামলায় আহতরা হলেন- গাড়ির চালক মো. ফিরুজ মিয়া, গাড়ির মালিক মো. খলিল মিয়া, নিহতের স্বজন রাসেল মিয়া, ছালেক মিয়া, নাহিদ মিয়া, মো. আলমগীর মিয়া, মো. সালাউদ্দিন, আলেয়া বেগম ও আলী নেওয়াজ মিয়া।
ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানায়, পূর্বভাগ ইউনিয়নের মুকবুলপুর গ্রামের ছবদর আলী নামে এক ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার মিরপুর আহসানিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মারা যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই ঢাকা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে ফেরার পথে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় আসলে সশস্ত্র ডাকাতরা সড়কে গাছ ফেলে পথ রোধ করে গাড়ি আটক করেন। এরপর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। মরদেহের সঙ্গে থাকা স্বজনদের কাছ থেকে ৯টি মুঠোফোন ও নগদ অর্ধলাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ডাকাত দল।
ডাকাতদের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ ও মালামাল না পাওয়ায় মরদেহের ওপরও হামলা করা হয় বলে দাবি করেন নিহতের ছেলে মো. আলমগীর মিয়া।
তিনি বলেন, টাকা পয়সা নিছে সেটা এতোটা কষ্টদায়ক না। কিন্তু আমার বাবা একটি মৃত লাশ। তার ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বাবার লাশ দাফন করে আইনগত পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হব।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুসলে উদ্দিন বলেন, ভোর সকাল এবং সন্ধ্যায় এই রাস্তাটি ভুতুড়ে জায়গায় পরিণত হয়। এই সড়কে কিছুদিন পরপর ডাকাতি হয়। রাতের চেয়ে বেশি দিনে হয়।
স্থানীয় আইনজীবী মো. রেজাউল হক আমজাদ বলেন, এটি কেবল ডাকাতি নয়, লাশবাহী গাড়িতে হামলা। যেখানে মর্যাদার শেষ চিহ্নটুকুও রক্ষা পায়নি। স্বজন হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়া একটি পরিবারের ওপর এমন ডাকাতির হামলা খুবই ন্যক্কারজনক।
সরাইল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তপন সরকার বলেন, ওই স্থানটি ঝুঁকিপূণ। স্থানীয় লোকজন যারা রাতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করে তাদের বলা হয়েছে আসার আগে পুলিশ প্রটোকল নেয়ার জন্য। গতকাল ঢাকা থেকে যে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি এসেছিল তাদের জানা ছিল না সেজন্য ডাকাতির কবলে পড়তে হয়েছে । তবে ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যে পুলিশের টহল টিম চলে এসেছিল।
তিনি বলেন, ডাকাতদল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রাস্তার পাশে হাওর দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনাসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে।