ঢাকা ০৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগ-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ৪ Logo ব্লকেড সরিয়ে নিন, রাজপথের একপাশে অবস্থান করুন: নাহিদ Logo এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’কর্মসূচিতে হামলায় ছাত্রশিবিরে গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা Logo আবারও সারা দেশে ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন Logo গোপালগঞ্জে ডিসির বাংলোয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগে হামলা, পুলিশ সদস্য আহত Logo দেশীয় অস্ত্রসহ পুলিশের ওপর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলা, সংঘর্ষ চলছে Logo আ. লীগের হামলায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে এনসিপি নেতারা Logo সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আট দিন রিমান্ডে Logo গোপালগঞ্জে এবার ইউএনও’র গাড়িতে হামলা-ভাঙচুর Logo ইসির ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে আ. লীগের ‘নৌকা’

অবৈধ নির্বাচনের মেয়র হতে চাইলে সেটা কি বৈধ হয়, সারজিসের প্রশ্ন

অবৈধ নির্বাচনের মেয়র হতে চাইলে সেটা কি বৈধ হয়, সারজিসের প্রশ্ন

যে নির্বাচন অবৈধ, সে নির্বাচনের মেয়র হতে চাইলে সেটা কীভাবে বৈধ হয়? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

সোমবার (১৯ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। পোস্টটি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে উদ্দেশ করে লেখা।

ফেসবুক পোস্টে সারজিস লিখেছেন– ইশরাক ভাইকে আমি চিনতাম সাদেক হোসেন খোকার ছেলে হিসেবে। যেদিন হাসিনার পুলিশের হাত থেকে বুক চিতিয়ে নিজের কর্মীকে ছিনিয়ে আনলেন, সেদিন থেকে ইশরাক ভাইকে আমি তার পরিচয়ে চিনি, রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনি। তার সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। গতানুগতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কিংবা বাংলাদেশের পার্সপেক্টিভে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের অন্য দশজন নেতার মতো গতানুগতিক চিন্তাধারার মনে হয়নি।

তিনি (ইশরাক) অনেক ক্ষেত্রেই সত্যটাকে অকপটে স্বীকার করেছেন, ইভেন সেটা দলের বক্তব্যের সঙ্গে না মিললেও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে এ প্রজন্মের যারা আছেন, তাদের থেকে সময়ের, জনগণের ও আমাদের প্রত্যাশাটা অন্যদের তুলনায় বেশি। ইশরাক ভাই তাদের মধ্যে অন্যতম।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি তাদের জায়গা থেকে অসংখ্যবার বলেছে, এটাই সত্য যে বিগত তিনটা জাতীয় নির্বাচন ও অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচনগুলো ছিল একপাক্ষিক, প্রশ্নবিদ্ধ ও অবৈধ। যে নির্বাচন অবৈধ, সে নির্বাচনের মেয়র আমি কীভাবে হতে চাই? সেটা কীভাবে বৈধ হয়? তাহলে তো সে নির্বাচনকে আমি বৈধতা দিয়ে দিচ্ছি!

তাহলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) শুধু ইশরাক ভাই কেন, সকল জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড ও সংসদীয় আসনে সবাইকে তাদের জায়গা ফিরিয়ে দেয়া উচিত। মেয়র হয়ে সাময়িক ক্ষমতার ব্যবহার করা, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা; এসবের দিকে তাকিয়ে সামান্য কয়েক দিনের জন্য একটা চেয়ারে বসে অবৈধ নির্বাচনগুলোকে ইশরাক ভাই যদি বৈধতা দেন, তাহলে এটি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি কালো দাগ হয়ে থাকবে।

সারজিস বলেন, আমি বিশ্বাস করি, তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তায় এই মাইলস্টোনগুলো ধীরে ধীরে অর্জন করে নিতে পারবেন। কিন্তু সাময়িক প্রাপ্তির আশায় অবৈধ নির্বাচনের সো-কল্ড বৈধ মেয়র হিসেবে বসে তিনি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এতো বড় একটি দাগ লাগাবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত তাকেই নেয়া উচিত।

একটি বিষয় বিচারাধীন প্রক্রিয়ায় থাকাকালীন স্থানীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে নগর ভবনের সামনে এর চেয়ে কয়েকগুণ বড় বিক্ষোভ কিংবা অবস্থান কর্মসূচি এখন যেমন করছেন, আগামীতেও তিনি করতে পারবেন। সে তুমুল জনপ্রিয়তা তার আছে। কিন্তু এ জনপ্রিয়তাকে তিনি অপরাধের বৈধতা উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারেন না। তার সঙ্গে এটা যায় না।

জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা উল্লেখ করেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কথা চিন্তা করে না হোক, অভ্যুত্থানের সামনের সারির আপোষহীন একজন নেতৃত্ব ও যোদ্ধার কথা চিন্তা করে হলেও তার স্থানীয় কিছু কর্মীদের মাধ্যমে তিনি আসিফ মাহমুদকে এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করাতে পারেন না, অপমানিত করাতে পারেন না, গালিগালাজ করাতে পারেন না, বাবা-মা তুলে কথা বলাতে পারেন না। এটা কখনোই রাজনৈতিক শিষ্টাচারপন্থী না। পরোক্ষভাবে এ দায় তার ওপরেও বর্তায়।

সারজিস বলেন, যারা আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি, তারাই যদি বিগত অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেয়ার জন্য নিজেদের সক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাহলে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় ঐতিহাসিক দায় তৈরি করবে। ইশরাক ভাই সেই দায় সারাজীবনের জন্য বহন করবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগ-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ৪

অবৈধ নির্বাচনের মেয়র হতে চাইলে সেটা কি বৈধ হয়, সারজিসের প্রশ্ন

আপডেট সময় ০৫:১৬:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

যে নির্বাচন অবৈধ, সে নির্বাচনের মেয়র হতে চাইলে সেটা কীভাবে বৈধ হয়? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

সোমবার (১৯ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। পোস্টটি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে উদ্দেশ করে লেখা।

ফেসবুক পোস্টে সারজিস লিখেছেন– ইশরাক ভাইকে আমি চিনতাম সাদেক হোসেন খোকার ছেলে হিসেবে। যেদিন হাসিনার পুলিশের হাত থেকে বুক চিতিয়ে নিজের কর্মীকে ছিনিয়ে আনলেন, সেদিন থেকে ইশরাক ভাইকে আমি তার পরিচয়ে চিনি, রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনি। তার সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। গতানুগতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কিংবা বাংলাদেশের পার্সপেক্টিভে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের অন্য দশজন নেতার মতো গতানুগতিক চিন্তাধারার মনে হয়নি।

তিনি (ইশরাক) অনেক ক্ষেত্রেই সত্যটাকে অকপটে স্বীকার করেছেন, ইভেন সেটা দলের বক্তব্যের সঙ্গে না মিললেও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে এ প্রজন্মের যারা আছেন, তাদের থেকে সময়ের, জনগণের ও আমাদের প্রত্যাশাটা অন্যদের তুলনায় বেশি। ইশরাক ভাই তাদের মধ্যে অন্যতম।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি তাদের জায়গা থেকে অসংখ্যবার বলেছে, এটাই সত্য যে বিগত তিনটা জাতীয় নির্বাচন ও অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচনগুলো ছিল একপাক্ষিক, প্রশ্নবিদ্ধ ও অবৈধ। যে নির্বাচন অবৈধ, সে নির্বাচনের মেয়র আমি কীভাবে হতে চাই? সেটা কীভাবে বৈধ হয়? তাহলে তো সে নির্বাচনকে আমি বৈধতা দিয়ে দিচ্ছি!

তাহলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) শুধু ইশরাক ভাই কেন, সকল জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড ও সংসদীয় আসনে সবাইকে তাদের জায়গা ফিরিয়ে দেয়া উচিত। মেয়র হয়ে সাময়িক ক্ষমতার ব্যবহার করা, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা; এসবের দিকে তাকিয়ে সামান্য কয়েক দিনের জন্য একটা চেয়ারে বসে অবৈধ নির্বাচনগুলোকে ইশরাক ভাই যদি বৈধতা দেন, তাহলে এটি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি কালো দাগ হয়ে থাকবে।

সারজিস বলেন, আমি বিশ্বাস করি, তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তায় এই মাইলস্টোনগুলো ধীরে ধীরে অর্জন করে নিতে পারবেন। কিন্তু সাময়িক প্রাপ্তির আশায় অবৈধ নির্বাচনের সো-কল্ড বৈধ মেয়র হিসেবে বসে তিনি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এতো বড় একটি দাগ লাগাবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত তাকেই নেয়া উচিত।

একটি বিষয় বিচারাধীন প্রক্রিয়ায় থাকাকালীন স্থানীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে নগর ভবনের সামনে এর চেয়ে কয়েকগুণ বড় বিক্ষোভ কিংবা অবস্থান কর্মসূচি এখন যেমন করছেন, আগামীতেও তিনি করতে পারবেন। সে তুমুল জনপ্রিয়তা তার আছে। কিন্তু এ জনপ্রিয়তাকে তিনি অপরাধের বৈধতা উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারেন না। তার সঙ্গে এটা যায় না।

জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা উল্লেখ করেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কথা চিন্তা করে না হোক, অভ্যুত্থানের সামনের সারির আপোষহীন একজন নেতৃত্ব ও যোদ্ধার কথা চিন্তা করে হলেও তার স্থানীয় কিছু কর্মীদের মাধ্যমে তিনি আসিফ মাহমুদকে এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করাতে পারেন না, অপমানিত করাতে পারেন না, গালিগালাজ করাতে পারেন না, বাবা-মা তুলে কথা বলাতে পারেন না। এটা কখনোই রাজনৈতিক শিষ্টাচারপন্থী না। পরোক্ষভাবে এ দায় তার ওপরেও বর্তায়।

সারজিস বলেন, যারা আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি, তারাই যদি বিগত অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেয়ার জন্য নিজেদের সক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাহলে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় ঐতিহাসিক দায় তৈরি করবে। ইশরাক ভাই সেই দায় সারাজীবনের জন্য বহন করবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।