লা লিগার এই মৌসুমে শিরোপা উঠবে কার হাতে—সেই উত্তরের অনেকটাই নির্ভর করছিল মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকোর মহারণে। রোববারের বিকেলটা তাই কেবল আরেকটি ম্যাচ ছিল না, ছিল গর্ব, ইতিহাস আর সম্মান বাঁচানোর লড়াই। আর সেই লড়াইয়ের রূপকার হয়ে বার্সেলোনা রচনা করল এক রোমাঞ্চকর গল্প—৭ গোলের থ্রিলার। সেখানে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে পৌঁছে গেল শিরোপার দোরগোড়ায়।
এই জয়ে ৩৫ ম্যাচ শেষে বার্সার সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৮২ পয়েন্টে। সমান ম্যাচে ঠিক তার পেছনেই ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল মাদ্রিদ। লিগের বাকি তিন ম্যাচের মাত্র একটি জিতলেই বার্সা নিশ্চিত করবে লা লিগার শিরোপা।
এল ক্লাসিকোর প্রতিটি মুহূর্ত যেন ছিল আগুনঝরা, প্রতিটি গোল যেন হৃদপিণ্ড থামিয়ে দেওয়া বিস্ময়। জয়-পরাজয়ের দোলাচলে একের পর এক নাটকীয় মোড়। সেই মহাকাব্যের শেষ দৃশ্যে বিজয়ীর মুকুট পরেছে কাতালানরা, রয়ে গেছে রিয়ালের হতাশ নিঃশ্বাস।
এদিন ম্যাচের মাত্র চতুর্থ মিনিটেই নাটকীয় মোড় নেয়। বার্সেলোনার গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি বক্সের ভেতর কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। সেখান থেকেই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন এমবাপ্পে। এরপর ১৪ মিনিটের মাথায় ভিনিসিউস জুনিয়রের দুর্দান্ত অ্যাসিস্ট থেকে নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন তিনি, রিয়ালকে নিয়ে যান ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
তবে সান্ত্বনার পর নয়, পাল্টা আক্রমণেই ম্যাচে ফিরে আসে বার্সেলোনা। ১৯তম মিনিটে কর্নার থেকে ফেরান তোরেসের বাড়ানো বলে হেড নিয়ে জাল কাঁপান এরিক গার্সিয়া। ৩২ মিনিটে আবারও তোরেসের পাস থেকেই লামিনে ইয়ামাল লক্ষ্যভেদ করে ম্যাচে সমতা ফেরান।
তারপর যেন ঝড় বইয়ে দেন বার্সার খেলোয়াড়রা। ৩৪তম মিনিটে পেদ্রির নিখুঁত পাস থেকে দুর্দান্ত এক ফিনিশিংয়ে গোল করেন রাফিনহা, বার্সাকে এনে দেন ৩-২ ব্যবধানের লিড। বিরতির ঠিক আগে, অর্থাৎ ৪৫তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান বাড়ান এই ব্রাজিলিয়ান। ফলে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষে ড্রেসিংরুমে ফিরে যায়।
বিরতির পর অবশ্য আর একটি বৈধ গোল হয়। যদিও বেশ কয়েকবার উভয় দল বল জালে জড়ায়। কিন্তু সেগুলো অফসাইড ও হ্যান্ডবল হওয়ার কারণে বাতিল হয়। ৭০ মিনিটে ভিনিসিউসের বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে এমবাপ্পে গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এবং ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেন। কিন্তু বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হওয়ায় শুরুতে ২-০ গোলে লিড নিয়েও ৪-৩ ব্যবধানে হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।