ঢাকা ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এতিম ছাত্রদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এতিম ছাত্রদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ

আবিদ উল্যাহ জাকের: ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির গৌরবময় স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। স্বাধীনতার সেই মহিমান্বিত দিনটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। এই দিনে এতিম ছাত্রদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

২৬ শে মার্চ (বুধবার) বিকাল ৫ ঘটিকায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সেক্রেটারী হাফেজ দেলাওয়ার হোসাইনের সঞ্চালনায় ও মহানগর সভাপতি হেলাল উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান সম্পাদক ডা. উসামাহ রাইয়ান। আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন দায়িত্বশীলগণ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. উসামা রাইয়ান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই দিনে আমরা পাকিস্তানের শোষণ, দুঃশাসন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করি, যা পরবর্তীতে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের বিজয় এনে দেয়। আমরা পেয়েছি স্বাধীন মানচিত্র, পেয়েছি লাল-সবুজের পতাকা। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—আমরা কি সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি? আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া, যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার ন্যায্য অধিকার পাবে, সমাজে সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু আজও আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। অথচ আমরা এখনো বহু ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। ১৯৭১ সালে আমাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি দেশ স্বাধীন হয়েছিল, যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার। কিন্তু এই দেশগুলো আজ বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে। তাদের নাগরিকদের জীবনমান উন্নত হয়েছে, আধুনিক অবকাঠামো গড়ে উঠেছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিপ্লব ঘটেছে। অথচ বাংলাদেশ এখনো নানা সমস্যায় জর্জরিত। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি, শিক্ষাব্যবস্থার দৈন্যদশা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আমাদের উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল তখনই পাওয়া সম্ভব, যখন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। একটি জাতির উন্নতি নির্ভর করে তার শিক্ষাব্যবস্থার ওপর। আমাদের প্রয়োজন কর্মমুখী ও নৈতিক শিক্ষাব্যবস্থা, যা একজন ছাত্রকে শুধু চাকরির জন্য প্রস্তুত করবে না, বরং একজন দক্ষ, সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।”

তিনি ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তরুণদের ওপর। তরুণরাই জাতির চালিকাশক্তি। তোমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে, নেতৃত্ব দিতে হবে, দেশকে সত্যিকারের স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিতে হবে। নিজেদের জ্ঞান, দক্ষতা ও নৈতিকতাকে শাণিত করতে হবে, যেন আমরা শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, বরং নৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও সমৃদ্ধ একটি জাতি গড়ে তুলতে পারি।

ঢাকা ভয়েস২৪/এবি

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এতিম ছাত্রদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ

আপডেট সময় ০৮:৪৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এতিম ছাত্রদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ

আবিদ উল্যাহ জাকের: ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির গৌরবময় স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। স্বাধীনতার সেই মহিমান্বিত দিনটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। এই দিনে এতিম ছাত্রদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

২৬ শে মার্চ (বুধবার) বিকাল ৫ ঘটিকায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সেক্রেটারী হাফেজ দেলাওয়ার হোসাইনের সঞ্চালনায় ও মহানগর সভাপতি হেলাল উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান সম্পাদক ডা. উসামাহ রাইয়ান। আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর দক্ষিণের বিভিন্ন দায়িত্বশীলগণ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. উসামা রাইয়ান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই দিনে আমরা পাকিস্তানের শোষণ, দুঃশাসন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করি, যা পরবর্তীতে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের বিজয় এনে দেয়। আমরা পেয়েছি স্বাধীন মানচিত্র, পেয়েছি লাল-সবুজের পতাকা। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—আমরা কি সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি? আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া, যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার ন্যায্য অধিকার পাবে, সমাজে সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু আজও আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। অথচ আমরা এখনো বহু ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। ১৯৭১ সালে আমাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি দেশ স্বাধীন হয়েছিল, যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার। কিন্তু এই দেশগুলো আজ বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলেছে। তাদের নাগরিকদের জীবনমান উন্নত হয়েছে, আধুনিক অবকাঠামো গড়ে উঠেছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিপ্লব ঘটেছে। অথচ বাংলাদেশ এখনো নানা সমস্যায় জর্জরিত। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি, শিক্ষাব্যবস্থার দৈন্যদশা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আমাদের উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল তখনই পাওয়া সম্ভব, যখন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। একটি জাতির উন্নতি নির্ভর করে তার শিক্ষাব্যবস্থার ওপর। আমাদের প্রয়োজন কর্মমুখী ও নৈতিক শিক্ষাব্যবস্থা, যা একজন ছাত্রকে শুধু চাকরির জন্য প্রস্তুত করবে না, বরং একজন দক্ষ, সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।”

তিনি ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তরুণদের ওপর। তরুণরাই জাতির চালিকাশক্তি। তোমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে, নেতৃত্ব দিতে হবে, দেশকে সত্যিকারের স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিতে হবে। নিজেদের জ্ঞান, দক্ষতা ও নৈতিকতাকে শাণিত করতে হবে, যেন আমরা শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, বরং নৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও সমৃদ্ধ একটি জাতি গড়ে তুলতে পারি।

ঢাকা ভয়েস২৪/এবি