আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের সব প্রস্তুতি গুছিয়ে এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী সপ্তাহেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতির সবশেষ অবস্থা জানাতে আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা।
সংসদ নির্বাচনের আগে রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচনের প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা জানায় নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার সেই রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করতে যাচ্ছে পুরো কমিশন।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, রেওয়াজ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পূর্বে নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে। সেই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন আয়োজনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হবে। রাষ্ট্রপতি কোনো নির্দেশনা দিলে তা শুনবে কমিশন। তবে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে কি না তা সিদ্ধান্ত হয়নি।
কমিশন সচিব জানান, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভাবছে না ইসি। বর্তমানে দেশে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। তিনি আরও জানান, আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদল পাঠাবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর তৎকালীন কে এম নূরুল হুদা কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলো। পরে ওই বছরের ৩ নভেম্বর কমিশন সভায় তফসিল চূড়ান্ত হয়। তফসিল ঘোষণা হয় ৮ নভেম্বর। পরে ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের তারিখ করে ১৩ নভেম্বর পুনঃতফসিল করে হুদা কমিশন।
সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে হবে ইসিকে। সেই ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে গত ১ নভেম্বর। সংবিধান নির্দেশিত পদ্ধতিতে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ নির্বাচনের আয়োজন করতে কমিশন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সম্প্রতি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ইসি।
তফসিল ঘোষণার আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের প্রস্তুতির বিষয় জানাতে বৈঠক করেছিলো ইসি। তাতে বিএনপিসহ সমমনারা তাতে যোগ দেয়নি।যেসব দল যোগ দিয়েছে, তাদের অনেকে ভোটের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগের বিষয়টি সামনে এনেছে। কিন্তু সিইসি আগের মতই দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যা নিরসনের দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সরঞ্জাম এরই মধ্যে জেলা নির্বাচন কার্যালয়গুলোতে পৌঁছে গেছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে অমোচনীয় কালি ও স্ট্যাম্প প্যাডও পাঠানো হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ ও অন্যান্য বিষয় গুছিয়ে ভোটের সম্ভাব্য দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে ডাকা হবে কমিশন সভা। টেলিভিশন ও বেতারের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করবেন সিইসি। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ভোট শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এদিকে, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপিসহ তার জোট শরিকরা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন সংবিধান মেনেই হবে। কোনো দলের সঙ্গে সংলাপ করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। সেই সময় শেষ হয়ে গেছে।