ঢাকা ১১:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ‘পিআর পদ্ধতি সংযোজন ও গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়া জরুরি’ Logo শিক্ষকের উপর পুলিশী হামলার প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন Logo মুন্সীগঞ্জে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের মানববন্ধন Logo চাকসু নির্বাচন: ভোট গ্রহণের পর কেন্দ্র পাহারায় ছাত্রীরা Logo সুন্দরগঞ্জে সরকারি হাসপাতালে অ্যানথ্রাক্স চিকিৎসায় অনীহা, বিপাকে রোগীরা Logo মুগ্ধতা ছড়িয়ে বিদায় নিলেন শাজাহানপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদ হাসান Logo পাকিস্তান-আফগানিস্তান ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত Logo জকসু নির্বাচন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা ও প্রস্তুতি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩২ বিলিয়ন ডলার Logo রাকসুর আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ছাত্রদল নেতা আমানের ক্যাম্পাসে অবস্থান

প্রতিহিংসার রাজনীতি : গণতন্ত্রের অন্তরায়

মোহাম্মদ মিয়া:স্নাতক শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ,সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়

অবেহেলিত জনপদ রামু উপজেলার বেংডেবা গ্রামে জন্ম কিন্তু পড়ালেখার প্রয়োজনে কখনো জোয়ারিয়ানালার পথে, কখনো চট্টগ্রামের নগরজীবনে হাঁটতে হাঁটতে রাজনীতির নানা রূপ দেখেছি—কখনো দূর থেকে, কখনো খুব কাছ থেকে। সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়ালেখা করলেও শুধু আইন জানলেই তো দায়িত্ব শেষ হয় না। একজন সচেতন নাগরিক এবং ভবিষ্যৎ আইনজীবী হিসেবে দেশের রাজনীতি নিয়ে ভাবা, প্রশ্ন তোলা—এটাই স্বাভাবিক।

আজ যখন দেশের অতীত ও বর্তমান রাজনীতির চিত্র দেখি, তখন মন ব্যথিত হয়। প্রশ্ন জাগে—এই পথ কোথায় যাচ্ছে? প্রতিহিংসার রাজনীতি এখন এমন এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যা করোনাভাইরাসের চেয়েও ভয়ংকর। ক্ষমতার পালাবদলে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দমন করে, আবার পালা বদল হলে পূর্বের চিত্রই নতুন মুখে ফিরে আসে। আশ্বাসে জনমনে স্বপ্ন জাগলেও বাস্তবতা হয় সম্পূর্ণ বিপরীত। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আজ দাফন হয়ে গেছে। দেশের সবকিছু এখন রাজনৈতিক দলের বলয়ের মাঝে বন্দি। এমন এক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমি বলতে চাই—আমরা কোথায় যাচ্ছি?

আমরা কোথায় যাচ্ছি?
বর্তমান রাজনীতিতে সততা, যোগ্যতা, সঠিক নেতৃত্ব এবং প্রকৃত অর্থে যোগ্য ব্যক্তির উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে অনুপস্থিত। এসব গুণের অভাবে রাজনীতি হারিয়েছে তার মহৎ উদ্দেশ্য—জনসেবা। এর ফলে জন্ম নিয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, যা দেশের অগ্রগতিকে বারবার থামিয়ে দিচ্ছে। সম্ভাবনার বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক অস্থিরতা ও নেতৃত্বের শূন্যতায় জর্জরিত। প্রতিহিংসার এই রাজনীতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে অদূর ভবিষ্যতে বাংলার আকাশে নেমে আসবে ঘোর অন্ধকার। ক্ষমতার পালাবদল কেবল প্রতিশোধের খেলা হয়ে দাঁড়াবে—জনগণের কল্যাণ নয়।

সমাধান ও আহ্বান
এই ভয়াবহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য দরকার একটি মৌলিক পরিবর্তন—মন ও মানসিকতায়। নেতৃত্বে আসতে হবে সেইসব মানুষদের, যারা সত্যিকার অর্থে দেশপ্রেমিক, সৎ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিজেদের ভেতরে আত্মসমালোচনা করে গণতন্ত্রের চর্চা বাড়াতে হবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়ের শাসন এবং সংলাপভিত্তিক রাজনীতি চর্চা করতে হবে। তরুণ সমাজ ও সচেতন নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনে।

একটি উন্নত, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমাদের সবার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে তখনই, যখন আমরা প্রতিহিংসার পথ ছেড়ে সংহতির পথ বেছে নেব।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

‘পিআর পদ্ধতি সংযোজন ও গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়া জরুরি’

প্রতিহিংসার রাজনীতি : গণতন্ত্রের অন্তরায়

আপডেট সময় ১০:৪২:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

মোহাম্মদ মিয়া:স্নাতক শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ,সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়

অবেহেলিত জনপদ রামু উপজেলার বেংডেবা গ্রামে জন্ম কিন্তু পড়ালেখার প্রয়োজনে কখনো জোয়ারিয়ানালার পথে, কখনো চট্টগ্রামের নগরজীবনে হাঁটতে হাঁটতে রাজনীতির নানা রূপ দেখেছি—কখনো দূর থেকে, কখনো খুব কাছ থেকে। সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়ালেখা করলেও শুধু আইন জানলেই তো দায়িত্ব শেষ হয় না। একজন সচেতন নাগরিক এবং ভবিষ্যৎ আইনজীবী হিসেবে দেশের রাজনীতি নিয়ে ভাবা, প্রশ্ন তোলা—এটাই স্বাভাবিক।

আজ যখন দেশের অতীত ও বর্তমান রাজনীতির চিত্র দেখি, তখন মন ব্যথিত হয়। প্রশ্ন জাগে—এই পথ কোথায় যাচ্ছে? প্রতিহিংসার রাজনীতি এখন এমন এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যা করোনাভাইরাসের চেয়েও ভয়ংকর। ক্ষমতার পালাবদলে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দমন করে, আবার পালা বদল হলে পূর্বের চিত্রই নতুন মুখে ফিরে আসে। আশ্বাসে জনমনে স্বপ্ন জাগলেও বাস্তবতা হয় সম্পূর্ণ বিপরীত। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আজ দাফন হয়ে গেছে। দেশের সবকিছু এখন রাজনৈতিক দলের বলয়ের মাঝে বন্দি। এমন এক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমি বলতে চাই—আমরা কোথায় যাচ্ছি?

আমরা কোথায় যাচ্ছি?
বর্তমান রাজনীতিতে সততা, যোগ্যতা, সঠিক নেতৃত্ব এবং প্রকৃত অর্থে যোগ্য ব্যক্তির উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে অনুপস্থিত। এসব গুণের অভাবে রাজনীতি হারিয়েছে তার মহৎ উদ্দেশ্য—জনসেবা। এর ফলে জন্ম নিয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, যা দেশের অগ্রগতিকে বারবার থামিয়ে দিচ্ছে। সম্ভাবনার বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক সংকট, সামাজিক অস্থিরতা ও নেতৃত্বের শূন্যতায় জর্জরিত। প্রতিহিংসার এই রাজনীতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে অদূর ভবিষ্যতে বাংলার আকাশে নেমে আসবে ঘোর অন্ধকার। ক্ষমতার পালাবদল কেবল প্রতিশোধের খেলা হয়ে দাঁড়াবে—জনগণের কল্যাণ নয়।

সমাধান ও আহ্বান
এই ভয়াবহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য দরকার একটি মৌলিক পরিবর্তন—মন ও মানসিকতায়। নেতৃত্বে আসতে হবে সেইসব মানুষদের, যারা সত্যিকার অর্থে দেশপ্রেমিক, সৎ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিজেদের ভেতরে আত্মসমালোচনা করে গণতন্ত্রের চর্চা বাড়াতে হবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়ের শাসন এবং সংলাপভিত্তিক রাজনীতি চর্চা করতে হবে। তরুণ সমাজ ও সচেতন নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনে।

একটি উন্নত, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমাদের সবার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে তখনই, যখন আমরা প্রতিহিংসার পথ ছেড়ে সংহতির পথ বেছে নেব।