ফাইনালে যেতে হলে রেকর্ড গড়তে হতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কাজটা যে কঠিন ছিল তা ম্যাচ শেষেও বোঝা গেল। ৩৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩১২ রানে থামে প্রোটিয়াদের ইনিংস। এতে ৫০ রানের জয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড।
দুবাইয়ের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ভারত। ২০০৯ সালের পর আবারো শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে সুযোগ পেয়েছে ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নরা। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে কিউইরা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জিততে নিউজিল্যান্ডের বোলিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য লক্ষ্যটা কঠিন হলেও ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন কিউই অধিনায়ক। রান তাড়ার শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল প্রোটিয়ারা। রাসি ফন ডার ডুসেনকে সঙ্গে নিয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ১০৫ রানের জুটি গড়েছিলেন দুজনে।
এ সময় ম্যাচের মোমেন্টাম পেতে মরিয়া ছিল নিউজিল্যান্ড। ২৩তম ওভারে সেই মোমেন্টাম এনে দিলেন স্যান্টনার। প্রতিপক্ষের অধিনায়ক বাভুমাকে ৫৬ রানে আউট করে। সঙ্গীর বিদায়ে যেন মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন ডুসেন। ব্যক্তিগত ৬৯ রানের সময় স্যান্টনারেরই শিকার হন তিনিও।
ডুসেনকে ফেরানোর পর ফিরতি ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা ব্যাটারকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার।
ওয়ানডেতে সর্বশেষ পাঁচ ইনিংসে পঞ্চাশর্ধ্বো ইনিংস খেলা হেনরিখ ক্ল্যাসেনকে আজ ৩ রানের বেশি করতে দেননি স্যান্টনার। টানা তিন উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডার ভেঙ্গে দেন তিনি। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন অন্য তিন স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েল-রাচিন রবীন্দ্র-গ্লেন ফিলিপস। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষের পরাজয়টা এক প্রকার নিশ্চিত করেন তারা।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে অবিশ্বাস্য এক সেঞ্চুরি করেন ডেভিড মিলার। যেন কাঁটায় কাঁটায় ১০০ রানের ইনিংস খেলে যেন বুঝিয়ে দিতে যাচ্ছিলেন হারার আগে হারবেন না তিনি। শেষ ওভারে ১৮ রান নিয়ে ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি করলেও তা বৃথাই গেল। শুধু শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে পেরেছেন বাঁহাতি ব্যাটার। ৬৭ বলের বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১০ চার ও ৪ ছক্কায়। এ পরাজয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে আরেকবার খালি হাতে ফিরতে হলো টুর্নামেন্টের প্রথমবারের চ্যাম্পিয়নদের। ১৯৯৮ সালের পর আর কখনো ফাইনাল খেলার সুযোগ পায়নি প্রোটিয়ারা।
এর আগে লাহোরে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়ে নিউজিল্যান্ড। রাচিন ও কেন উইলিয়ামসনের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৫৬২ রান করে তারা। আগের দলীয় সর্বোচ্চ ছিল অস্ট্রেলিয়ার। লাহোরেই ৩৫২ রান তাড়া করে ৩৫৬ রানের স্কোর করেছিল অজিরা।
ক্যারিয়ারে ১৫তম সেঞ্চুরি পাওয়া উইলিয়ামসনের ১০২ রানের বিপরীতে ১০৮ রান করেন রাচিন। ২৪ বছর বয়সী ব্যাটারের ইনিংসটি ছিল ক্যারিয়ারে পঞ্চম সেঞ্চুরি। কিউইদের বড় সংগ্রহে অবশ্য শেষ দিকে সমান ৪৯ রানের ইনিংস খেলে দারুণ অবদান রাখেন ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। প্রতিপক্ষের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন লুঙ্গি এনগিডি।