ঢাকা ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

খুচরা শলাকায় সিগারেট বিক্রিতে রাজস্ব ফাঁকি ৪৯৩০ কোটি টাকা

খুচরা শলাকায় সিগারেট বিক্রিতে রাজস্ব ফাঁকি ৪৯৩০ কোটি টাকা

তামাক কোম্পানি ইচ্ছামতো সিগারেটের খুচরা শলাকার মূল্য নির্ধারণ করে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। আদায়কৃত অতিরিক্ত এ অর্থের পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা। সরকার এ অর্থের ওপর নির্ধারিত হারে রাজস্ব পেলে আরো ৪ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার রাজস্ব পেতে। যা তামাক কম্পানি ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে।

সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ হলে তামাক কম্পানি জনগণের টাকা হাতিয়ে নিতে পারবে না। একই সঙ্গে তা সিগারেট সেবন কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

আজ সোমবার বিকেলে ‘সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রিতে রাজস্ব ফাঁকি ও প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারের মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর) ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর ট্যোবাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) যৌথভাবে অনলাইন মিটিং প্লাটফরম জুমে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

বিইআর ও বিএনটিটিপির গবেষণার ফল তুলে ধরে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রতি শলাকা সিগারেটে ৫০ পয়সা থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হচ্ছে। এই অতিরিক্ত টাকার ওপর কোনো কর সরকার পাচ্ছে না। গবেষণায় দেখা যায়, মোট সিগারেট বিক্রির প্রায় ৮০ শতাংশ খুচরা শলাকা হিসেবে বিক্রি হয়। খুচরা শলাকা থেকেই তামাক কম্পানিগুলো প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করছে।

যার করের অংশ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। সাবেক সচিব ও ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক বজলুর রহমান এবং একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক সুশান্ত সিনহা। ওয়েবিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপির প্রজেক্ট ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম হিল্লোল। সঞ্চালনা করেন বিএনটিটিপির প্রজেক্ট অফিসার ইব্রাহীম খলিল।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, আইন অনুসারে গায়ের দামে ভোক্তার কাছে সিগারেট বিক্রির কথা থাকলেও তামাক কম্পানির প্রতিনিধিরাই সেই দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সিগারেট সরবরাহ করছে।

খুচরা বিক্রেতারা কোন দামে বিক্রি করবে তাও সিগারেট কস্পানিই ঠিক করে দিচ্ছে। প্রতি শলাকা খুচরা সিগারেটের দামও তারাই নির্ধারণ করছে, খুচরা বিক্রেতাদের কাছে দামসংবলিত লিফলেট সরবরাহ করছে।

তারা বলেন, তামাক কম্পানি প্রাণঘাতী পণ্যের ব্যবসা করে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো মুনাফা করা। ফলে জনস্বাস্থ্যের অবনতি ঘটিয়ে তারা সিগারেটের একক শলাকা বিক্রি এবং বিক্রি বন্ধের বিরোধিতা করে। কারণ বাজারে সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি হলে তাদের ব্যবসা ও মুনাফা ভালো হয়। কারণ খুচরা শলাকা বিক্রি হলে সহজেই তরুণদের হাতে তুলে দিতে পারে। এর মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতের ভোক্তা তৈরি করে এবং জনগণের পকেট থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশের তামাক করব্যবস্থাকে একটি গ্রহণযোগ্য নিয়মের মধ্যে আনতে ও রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করতে অতি দ্রুত একটি শক্তিশালী তামাক করনীতি প্রণয়ন করত হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বাংলাদেশের বিদায়

খুচরা শলাকায় সিগারেট বিক্রিতে রাজস্ব ফাঁকি ৪৯৩০ কোটি টাকা

আপডেট সময় ০৮:৫৬:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

তামাক কোম্পানি ইচ্ছামতো সিগারেটের খুচরা শলাকার মূল্য নির্ধারণ করে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। আদায়কৃত অতিরিক্ত এ অর্থের পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা। সরকার এ অর্থের ওপর নির্ধারিত হারে রাজস্ব পেলে আরো ৪ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার রাজস্ব পেতে। যা তামাক কম্পানি ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে।

সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধ হলে তামাক কম্পানি জনগণের টাকা হাতিয়ে নিতে পারবে না। একই সঙ্গে তা সিগারেট সেবন কমিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

আজ সোমবার বিকেলে ‘সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রিতে রাজস্ব ফাঁকি ও প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারের মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো (বিইআর) ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর ট্যোবাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) যৌথভাবে অনলাইন মিটিং প্লাটফরম জুমে এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

বিইআর ও বিএনটিটিপির গবেষণার ফল তুলে ধরে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রতি শলাকা সিগারেটে ৫০ পয়সা থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হচ্ছে। এই অতিরিক্ত টাকার ওপর কোনো কর সরকার পাচ্ছে না। গবেষণায় দেখা যায়, মোট সিগারেট বিক্রির প্রায় ৮০ শতাংশ খুচরা শলাকা হিসেবে বিক্রি হয়। খুচরা শলাকা থেকেই তামাক কম্পানিগুলো প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করছে।

যার করের অংশ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। সাবেক সচিব ও ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাকসুদ, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক বজলুর রহমান এবং একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক সুশান্ত সিনহা। ওয়েবিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপির প্রজেক্ট ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম হিল্লোল। সঞ্চালনা করেন বিএনটিটিপির প্রজেক্ট অফিসার ইব্রাহীম খলিল।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, আইন অনুসারে গায়ের দামে ভোক্তার কাছে সিগারেট বিক্রির কথা থাকলেও তামাক কম্পানির প্রতিনিধিরাই সেই দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সিগারেট সরবরাহ করছে।

খুচরা বিক্রেতারা কোন দামে বিক্রি করবে তাও সিগারেট কস্পানিই ঠিক করে দিচ্ছে। প্রতি শলাকা খুচরা সিগারেটের দামও তারাই নির্ধারণ করছে, খুচরা বিক্রেতাদের কাছে দামসংবলিত লিফলেট সরবরাহ করছে।

তারা বলেন, তামাক কম্পানি প্রাণঘাতী পণ্যের ব্যবসা করে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো মুনাফা করা। ফলে জনস্বাস্থ্যের অবনতি ঘটিয়ে তারা সিগারেটের একক শলাকা বিক্রি এবং বিক্রি বন্ধের বিরোধিতা করে। কারণ বাজারে সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি হলে তাদের ব্যবসা ও মুনাফা ভালো হয়। কারণ খুচরা শলাকা বিক্রি হলে সহজেই তরুণদের হাতে তুলে দিতে পারে। এর মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতের ভোক্তা তৈরি করে এবং জনগণের পকেট থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেশের তামাক করব্যবস্থাকে একটি গ্রহণযোগ্য নিয়মের মধ্যে আনতে ও রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করতে অতি দ্রুত একটি শক্তিশালী তামাক করনীতি প্রণয়ন করত হবে।