ঢাকা ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাকিস্তান ৩০০-৪০০ ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে: ভারত Logo কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ Logo ‘আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রচার করছে’ Logo গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নোসক শিবিরের সহযোগিতা Logo এআই হ্যাকাথন ২০২৫: রুয়েটের ‘বুরাক’ টিমের চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন Logo আমিরাতে আইপিএলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, পিএসএল পেল অগ্রাধিকার Logo আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ Logo রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে জবি শিক্ষার্থী ৩ দিনের রিমান্ডে Logo আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ Logo ভারতের ৭৭টি ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান

ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে: মাসুদ সাঈদী

ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে: মাসুদ সাঈদী

আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পুত্র ও জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে। একজন সুস্থ মানুষকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। রোববার দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপজেলার ৯নং মিরসরাই সদর ইউনিয়নের পূর্ব কিসমত জাফরাবাদ রহমাতুল্লিল আল আমিন ইসলামিক অ্যাকাডেমি ও হেফজখানার উদ্যোগে এ তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় তিনি বলেন, যখন আল্লামা সাঈদীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আমি তখন হাসপাতালে অবস্থান করছিলাম। সেসময় আমি আব্বার সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করতে অসংখ্যবার তাদের কাছে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। কারণ আমার সঙ্গে যদি দেখা করতে দেওয়া হতো তাহলে যারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আল্লামা সাঈদীকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে সেটা ধরা পড়ে যেত।

মাসুদ সাঈদী বলেন, আমরা কারাগারে আব্বার সঙ্গে প্রতি মাসে ১ বার করে সাক্ষাতের সুযোগ পেতাম। ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট যখন আব্বাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, তার ২৬ দিন আগে আমরা আব্বার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আর ৪ দিন পর আব্বার সঙ্গে আমাদের দেখা হওয়ার কথা ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমি যদি সেদিন দেখা করতে পারতাম তাহলে আমার পিতা নিশ্চয়ই আমাকে বলতেন- ‘আমার বুকে কোনো ব্যথা নেই, আমাকে তারা পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে এনেছে’। তাদের এ ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবে বিধায় তারা আমাকে আব্বার সঙ্গে এক মুহূর্তের জন্য দেখা করতে দেয়নি।

মাসুদ সাঈদী বলেন, গত ২০১০ সালের ২৯ জুন আল্লামা সাঈদীকে খুনি হাসিনা সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করেছে। যখন তাকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল সেটি যুদ্ধাপরাধ নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলা। যে মানুষটি ৫২ বছর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৫০টি দেশ ঘুরে মানুষকে কোরআনের দাওয়াত দিয়েছেন, যে মানুষের মুখে কোরআন শুনে পৃথিবীতে প্রায় ১ হাজারের অধিক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন সেই মানুষটি নাকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। এই আঘাতের মিথ্যা হাস্যকর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে ১৩টি বছর রেখেছিলেন। সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আপনারা জানেন- মামলার সাক্ষীদের ঢাকার সেফহাউস নামক একটি জায়গায় দিনের পর দিন ট্রেনিং দিয়ে তাদের আদালতে হাজির করা হতো।

সাঈদীপুত্র আরও বলেন, আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের কোনো নেতাদের কোনো অপরাধ ছিল না। তাদের একটি মাত্র অপরাধ ছিল- তারা শুধু আল্লাহর প্রশংসা করেছিল, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কায়েমের রাজনীতি বাংলাদেশে করেছিল -এটাই তাদের অপরাধ।

তিনি আরও বলেন, আল্লামা সাঈদীকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে সেই খুনি হাসিনার বিচার আমরা চাই। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাই খুনি হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ওই ট্রাইব্যুনালের সামনে ফাঁসি দিতে হবে। আমরা আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামি আন্দোলনের সব আলেম হত্যার বিচার চাই।

রহমাতুল্লিল আল আমিন ইসলামিক অ্যাকাডেমি ও হেফজখানা মাঠে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাহেরখালী আহমদিয়া হাবিবিয়া গণিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং রহমাতুল্লিল আল আমিন ইসলামিক অ্যাকাডেমি ও হেফজখানার পৃষ্ঠপোষক মোহাম্মদ রেজাউল মোস্তফা চৌধুরীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রধান ওয়ায়েজ ছিলেন নরসিংদী জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি কাজী ইব্রাহীম।

বিশেষ ওয়ায়েজিন হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও কোরআন গবেষক অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর মৌসুমি আবাসিক এলাকা জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন। প্রধান বক্তা ছিলেন শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক আলা উদ্দিন শিকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল কবির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান।

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তান ৩০০-৪০০ ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে: ভারত

ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে: মাসুদ সাঈদী

আপডেট সময় ১১:২০:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পুত্র ও জিয়ানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ বিন সাঈদী বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে ভারতের প্রেসক্রিপশনে আল্লামা সাঈদীকে হত্যা করা হয়েছে। একজন সুস্থ মানুষকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। রোববার দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপজেলার ৯নং মিরসরাই সদর ইউনিয়নের পূর্ব কিসমত জাফরাবাদ রহমাতুল্লিল আল আমিন ইসলামিক অ্যাকাডেমি ও হেফজখানার উদ্যোগে এ তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় তিনি বলেন, যখন আল্লামা সাঈদীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আমি তখন হাসপাতালে অবস্থান করছিলাম। সেসময় আমি আব্বার সঙ্গে একটিবারের জন্য দেখা করতে অসংখ্যবার তাদের কাছে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। কারণ আমার সঙ্গে যদি দেখা করতে দেওয়া হতো তাহলে যারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আল্লামা সাঈদীকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে সেটা ধরা পড়ে যেত।

মাসুদ সাঈদী বলেন, আমরা কারাগারে আব্বার সঙ্গে প্রতি মাসে ১ বার করে সাক্ষাতের সুযোগ পেতাম। ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট যখন আব্বাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, তার ২৬ দিন আগে আমরা আব্বার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। আর ৪ দিন পর আব্বার সঙ্গে আমাদের দেখা হওয়ার কথা ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমি যদি সেদিন দেখা করতে পারতাম তাহলে আমার পিতা নিশ্চয়ই আমাকে বলতেন- ‘আমার বুকে কোনো ব্যথা নেই, আমাকে তারা পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে এনেছে’। তাদের এ ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবে বিধায় তারা আমাকে আব্বার সঙ্গে এক মুহূর্তের জন্য দেখা করতে দেয়নি।

মাসুদ সাঈদী বলেন, গত ২০১০ সালের ২৯ জুন আল্লামা সাঈদীকে খুনি হাসিনা সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করেছে। যখন তাকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল সেটি যুদ্ধাপরাধ নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলা। যে মানুষটি ৫২ বছর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৫০টি দেশ ঘুরে মানুষকে কোরআনের দাওয়াত দিয়েছেন, যে মানুষের মুখে কোরআন শুনে পৃথিবীতে প্রায় ১ হাজারের অধিক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন সেই মানুষটি নাকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। এই আঘাতের মিথ্যা হাস্যকর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে ১৩টি বছর রেখেছিলেন। সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আপনারা জানেন- মামলার সাক্ষীদের ঢাকার সেফহাউস নামক একটি জায়গায় দিনের পর দিন ট্রেনিং দিয়ে তাদের আদালতে হাজির করা হতো।

সাঈদীপুত্র আরও বলেন, আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামী আন্দোলনের কোনো নেতাদের কোনো অপরাধ ছিল না। তাদের একটি মাত্র অপরাধ ছিল- তারা শুধু আল্লাহর প্রশংসা করেছিল, আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কায়েমের রাজনীতি বাংলাদেশে করেছিল -এটাই তাদের অপরাধ।

তিনি আরও বলেন, আল্লামা সাঈদীকে যারা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে সেই খুনি হাসিনার বিচার আমরা চাই। আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাই খুনি হাসিনাকে ভারত থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ওই ট্রাইব্যুনালের সামনে ফাঁসি দিতে হবে। আমরা আল্লামা সাঈদীসহ ইসলামি আন্দোলনের সব আলেম হত্যার বিচার চাই।

রহমাতুল্লিল আল আমিন ইসলামিক অ্যাকাডেমি ও হেফজখানা মাঠে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাহেরখালী আহমদিয়া হাবিবিয়া গণিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং রহমাতুল্লিল আল আমিন ইসলামিক অ্যাকাডেমি ও হেফজখানার পৃষ্ঠপোষক মোহাম্মদ রেজাউল মোস্তফা চৌধুরীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রধান ওয়ায়েজ ছিলেন নরসিংদী জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি কাজী ইব্রাহীম।

বিশেষ ওয়ায়েজিন হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও কোরআন গবেষক অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর মৌসুমি আবাসিক এলাকা জামে মসজিদের খতিব অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন। প্রধান বক্তা ছিলেন শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক আলা উদ্দিন শিকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল কবির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান।