ঢাকা ১২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে ছয় সংস্কার কমিশন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের আগস্টে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারে গঠন করা হয় ছয়টি সংস্কার কমিশন।

আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এই কমিশনগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

একই সঙ্গে কমিশনের প্রধানরা পরবর্তী আশু করণীয়, মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার কী করতে পারে— সেটির সর্বসম্মত সুপারিশমালা পেশ করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুস রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দেন। এসব কমিশনকে ৯০ দিন বা তিন মাসে অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

এরপর নির্ধারিত সময়ের ১৫ দিন পর গত ১৫ জানুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক এই চারটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করা হয়। অপরদিকে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গত বুধবার প্রতিবেদন জমা দেয়।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ শনিবার সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তির সঙ্গে আলোচনা এবং সমঝোতাক্রমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হবে।‌ এ তারিখ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে।

গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, এ ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত পৌঁছাতে একটি বৈঠক শুরু হবে। সেই বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলো রাজি থাকলে এ আলোচনা পবিত্র রমজান মাস পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ১ মাস ৩ দিনের মাথায় গত ১১ সেপ্টেম্বর বহুল আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

এর মধ্যে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয় সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেনকে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব পান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান। দুদক সংস্কার কমিশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে প্রধান করা হয়।

আবার এই কমিশনগুলোর প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। যেটির প্রধানের দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সদস্য সচিব হন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদনের পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে সরকার।

এরপর চূড়ান্ত পর্যায়ে শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ৩ থেকে ৭ দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্র-জনতার ওপর হামলা প্রতিবাদে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে নাগরিক কমিটি

আজ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে ছয় সংস্কার কমিশন

আপডেট সময় ০৮:৪৬:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের আগস্টে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর রাষ্ট্র সংস্কারে গঠন করা হয় ছয়টি সংস্কার কমিশন।

আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এই কমিশনগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

একই সঙ্গে কমিশনের প্রধানরা পরবর্তী আশু করণীয়, মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার কী করতে পারে— সেটির সর্বসম্মত সুপারিশমালা পেশ করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুস রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দেন। এসব কমিশনকে ৯০ দিন বা তিন মাসে অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

এরপর নির্ধারিত সময়ের ১৫ দিন পর গত ১৫ জানুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সংস্কার ও দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক এই চারটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পেশ করা হয়। অপরদিকে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গত বুধবার প্রতিবেদন জমা দেয়।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ শনিবার সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তির সঙ্গে আলোচনা এবং সমঝোতাক্রমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হবে।‌ এ তারিখ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে।

গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, এ ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত পৌঁছাতে একটি বৈঠক শুরু হবে। সেই বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলো রাজি থাকলে এ আলোচনা পবিত্র রমজান মাস পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ১ মাস ৩ দিনের মাথায় গত ১১ সেপ্টেম্বর বহুল আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

এর মধ্যে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয় সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেনকে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব পান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান। দুদক সংস্কার কমিশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে প্রধান করা হয়।

আবার এই কমিশনগুলোর প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। যেটির প্রধানের দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সদস্য সচিব হন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদনের পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে সরকার।

এরপর চূড়ান্ত পর্যায়ে শিক্ষার্থী, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ৩ থেকে ৭ দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে।