ঢাকা ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রকৌশলীদের দাবি: সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস চালুর আহ্বান

প্রকৌশলীদের দাবি: সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস চালুর আহ্বান

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর কাছে আজ পেশাজীবী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদ ৮ দফা সুপারিশ পেশ করেছে। সংগঠনটির দাবি, দক্ষ ও সমতা নির্ভর জনকল্যাণমুখী প্রশাসন গঠনে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

প্রস্তাবিত সুপারিশসমূহ-

১। দক্ষ ও জনকল্যাণমুখী আমলাতন্ত্র গঠনের লক্ষ্যে পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন করা। অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের খাত সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত কর্মকর্তারা উক্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বা তদুর্দ্ধ পদে অংশ নিতে পারবেন।
২। উপসচিব পরীক্ষায় কোটা ব্যবস্থা বাতিলকরণ এবং উন্মুক্ত, প্রতিযোগিতামূলক ও মন্ত্রণালয়ের খাত ভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে উপসচিব পদে নিয়োগ প্রদান করা।
৩। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকুরীজীবীদের মধ্যে সমতা বিধান নিশ্চিত করা।
৪। উপসচিব পদের পরীক্ষায় একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে দক্ষ, সুশিক্ষিত, ও খাত সংশ্লিষ্ট কাজে নির্দিষ্ট সময়ের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত/ প্রবাসী ব্যক্তিবর্গকেও সুযোগ দেয়া।
৫। প্রকৌশলীদের সকল সেক্টরের জন্য একটি অভিন্ন ‘সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস’ চালু করা, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত সকল ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে প্রকৌশলীদের নিয়োগ করা হবে।
৬। জনকল্যাণমুখী ও জবাবদিহিমূলক সিভিল সার্ভিস প্রণয়ন করা। দুর্নীতি ও মানবতা বিরোধী অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করার বিধান সার্ভিস রুলে অন্তর্ভুক্ত করা।
৭। ভূমি ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্ব বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস ও ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস নামক দুটি পৃথক সার্ভিস প্রণয়ন করা।

৮। কারিগরি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদ ও নীতি-নির্ধারনে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের অন্তর্ভুক্তি করার নীতিমালা প্রণয়ন করা।

এর আগে সংগঠনটির উদ্যোগে “পেশা যার, মন্ত্রণালয় তার” শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সদস্য প্রকৌশলী জাহিদুর রশিদ। সেমিনারে শতাধিক প্রকৌশলী অংশ নেন। তারা উল্লেখ করেন, সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ৭০ শতাংশ প্রকৌশল খাতের মাধ্যমে ব্যয় হলেও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তাদের ভূমিকা সীমিত।

তারা বলেন, বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের শিকড় ব্রিটিশ উপনিবেশ এবং পাকিস্তান আমলের প্রশাসনিক কাঠামোতে প্রোথিত। স্বাধীনতার পর সিভিল সার্ভিস পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি কমিশন সুপারিশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদের দাবি, অতীতের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে জনপ্রশাসনে কার্যকর সংস্কার আনতে হবে। সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস চালুর মাধ্যমে প্রকৌশলীদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যুক্ত করা গেলে রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে আরও গতি আসবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রকৌশলীদের দাবি: সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস চালুর আহ্বান

আপডেট সময় ০৭:৩১:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর কাছে আজ পেশাজীবী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদ ৮ দফা সুপারিশ পেশ করেছে। সংগঠনটির দাবি, দক্ষ ও সমতা নির্ভর জনকল্যাণমুখী প্রশাসন গঠনে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

প্রস্তাবিত সুপারিশসমূহ-

১। দক্ষ ও জনকল্যাণমুখী আমলাতন্ত্র গঠনের লক্ষ্যে পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন করা। অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের খাত সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত কর্মকর্তারা উক্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বা তদুর্দ্ধ পদে অংশ নিতে পারবেন।
২। উপসচিব পরীক্ষায় কোটা ব্যবস্থা বাতিলকরণ এবং উন্মুক্ত, প্রতিযোগিতামূলক ও মন্ত্রণালয়ের খাত ভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে উপসচিব পদে নিয়োগ প্রদান করা।
৩। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকুরীজীবীদের মধ্যে সমতা বিধান নিশ্চিত করা।
৪। উপসচিব পদের পরীক্ষায় একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে দক্ষ, সুশিক্ষিত, ও খাত সংশ্লিষ্ট কাজে নির্দিষ্ট সময়ের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত/ প্রবাসী ব্যক্তিবর্গকেও সুযোগ দেয়া।
৫। প্রকৌশলীদের সকল সেক্টরের জন্য একটি অভিন্ন ‘সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস’ চালু করা, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত সকল ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে প্রকৌশলীদের নিয়োগ করা হবে।
৬। জনকল্যাণমুখী ও জবাবদিহিমূলক সিভিল সার্ভিস প্রণয়ন করা। দুর্নীতি ও মানবতা বিরোধী অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করার বিধান সার্ভিস রুলে অন্তর্ভুক্ত করা।
৭। ভূমি ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্ব বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস ও ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস নামক দুটি পৃথক সার্ভিস প্রণয়ন করা।

৮। কারিগরি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদ ও নীতি-নির্ধারনে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের অন্তর্ভুক্তি করার নীতিমালা প্রণয়ন করা।

এর আগে সংগঠনটির উদ্যোগে “পেশা যার, মন্ত্রণালয় তার” শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক সদস্য প্রকৌশলী জাহিদুর রশিদ। সেমিনারে শতাধিক প্রকৌশলী অংশ নেন। তারা উল্লেখ করেন, সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ৭০ শতাংশ প্রকৌশল খাতের মাধ্যমে ব্যয় হলেও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তাদের ভূমিকা সীমিত।

তারা বলেন, বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রের শিকড় ব্রিটিশ উপনিবেশ এবং পাকিস্তান আমলের প্রশাসনিক কাঠামোতে প্রোথিত। স্বাধীনতার পর সিভিল সার্ভিস পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি কমিশন সুপারিশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদের দাবি, অতীতের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে জনপ্রশাসনে কার্যকর সংস্কার আনতে হবে। সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস চালুর মাধ্যমে প্রকৌশলীদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যুক্ত করা গেলে রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে আরও গতি আসবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।