ঢাকা ০২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo যৌথবাহিনীর অভিযানে গুলিসহ সেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক Logo নওগাঁর ধামইরহাট থানা থেকে ট্রাংক ভেঙে এইচএসসি ২০২৫ এর প্রশ্নপত্র চুরি Logo মুখ ফসকে’ ইসরায়েলের বিপক্ষে বক্তব্য দিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত Logo ইরাক আগ্রাসনের মতো মিথ্যা অজুহাতে ইসরায়েলের হামলা’ Logo মে মাসে প্রবাসী আয় ৩৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা Logo হজযাত্রীর কোটা না বাড়াতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ ধর্ম উপদেষ্টার Logo ত্রিপক্ষীয় নতুন জোটে বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সম্মতি Logo ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা ‘বিপজ্জনক নজির’:চীন Logo যানজট নিরসনের চট্টগ্রামে হচ্ছে মনোরেল Logo চলমান সংঘাতের মধ্যেই তুরস্কে গেলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যারা পণ্যের দাম বাড়ায় তাদের মধ্যস্থতাকারীদের জটিল নেটওয়ার্কের সন্ধান

মধ্যস্থতাকারীদের একটি জটিল নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখে। অন্তবর্তীকালীন সরকার খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী ও জরুরি পদক্ষেপ না নিলে মূল্যস্ফীতির হার কমানো কঠিন হবে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫ : সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, ওসিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, চালের বাজার ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত জটিল। সে কারণে সিপিডি চালের সরবরাহ শৃঙ্খলে বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা নিরূপণের জন্য মাঠ পর্যায়ে একটি অনুসন্ধানমূলক জরিপ পরিচালনা করে, বিশেষ করে মাঝারি-পাইজাম চাল। যার লক্ষ্য ছিল প্রধানত দামের যে অস্থিরতা তার মূল কারণগুলো সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করা।

অনুসন্ধান করে দেখা যায়, চাল সরবরাহ ব্যবস্থায় অসংখ্য বাজার এজেন্ট রয়েছে। বাজার মূল্যের ওপর গুদাম মালিকদের বা অটো রাইস মিলারদের উল্লেখযোগ্য আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। ফলস্বরূপ ধান চাষীরা প্রায়শই সঠিক দাম পান না। কিন্তু ভোক্তারা অযৌক্তিকভাবে উচ্চ মূল্যের সম্মুখীন হন, যার ফলে ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়।

খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে সিপিডি বলে, বাংলাদেশে পূর্ববর্তী কর্তৃত্ববাদী সরকার উচ্চ মূল্যস্ফীতির মাধ্যমে একটি অকার্যকর অর্থনীতি রেখে গেছে, যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঠিক করতে হবে। বেশ কিছু খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলের বিশ্লেষণে মধ্যস্থতাকারীদের একটি জটিল নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী এবং জরুরি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতির হার কমানো কঠিন হবে।

রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ৪৫.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন

রাজস্ব প্রসঙ্গে সিপিডি বলছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে ২০২৫ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩.৭ শতাংশ যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময় ছিল ১৭.৭ শতাংশ অর্থাৎ এখানে উল্লেখযোগ্য অবনতি দেখা গেয়েছে।

২০২৫ অর্থবছরের মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে অর্থবছরের বাকি সময় ৪৫.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে যা মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। সামগ্রিকভাবে কর রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক। কর রাজস্বের দুটি উৎসেই (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত ও বহির্ভূত) একই চিত্র দেখা গেছে।

তিনি বলেন, ওই সময়ে মূসক এবং সম্পূরক শুল্ক আহরণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। জুলাই-আগস্টের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে শ্লথগতি এর বড় কারণ। কর রাজস্ব আহরণের পরিস্থিতি বহুলাংশেই সরকারকে মূসক এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিতে ধাবিত করেছে। তবে আইএমএফের শর্তপূরণের চাপও এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান উচ্চ-মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতিতে এ ধরনের উদ্যোগ মোটেই কাম্য নয়। কারণ পরোক্ষ কর সকল ধরনের আয়ের মানুষের জীবনেই প্রভাব ফেলে।

বাজেট বাস্তবায়নের হার নিম্নগতি

অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে ২০২৫ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল ১৮.১ শতাংশ। পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ১৬.০ শতাংশ। অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৬.১ শতাংশ। যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময় এটি ছিল ৮.৯ শতাংশ। জুলাই-আগস্টের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, এডিপি প্রকল্পের পুনঃপ্রাধান্য নির্ধারণ এবং পুনর্মূল্যায়ন, প্রশাসনিক রদবদল এর বড় কারণ। তবে এডিপি বহির্ভূত বাজেট বাস্তবায়নের হারে জুলাই-অক্টোবর ২০২৫ অর্থবছরে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়।

সিপিডি জানায়, ২০২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা এডিপি বহির্ভূত খাতসমূহে অতিরিক্ত ব্যয় হয়। আর অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ সুদের ব্যয়জনিত কারণে হয়েছে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রায় ১০ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এর সঙ্গে প্রস্তাবিত মহার্ঘ ভাতা বাস্তবায়িত হলে এডিপি বহির্ভূত খাতসমূহে ব্যয়ের চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করে সিপিডি

যৌথবাহিনীর অভিযানে গুলিসহ সেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক

যারা পণ্যের দাম বাড়ায় তাদের মধ্যস্থতাকারীদের জটিল নেটওয়ার্কের সন্ধান

আপডেট সময় ০১:৫২:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

মধ্যস্থতাকারীদের একটি জটিল নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখে। অন্তবর্তীকালীন সরকার খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী ও জরুরি পদক্ষেপ না নিলে মূল্যস্ফীতির হার কমানো কঠিন হবে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫ : সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান, ওসিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, চালের বাজার ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত জটিল। সে কারণে সিপিডি চালের সরবরাহ শৃঙ্খলে বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা নিরূপণের জন্য মাঠ পর্যায়ে একটি অনুসন্ধানমূলক জরিপ পরিচালনা করে, বিশেষ করে মাঝারি-পাইজাম চাল। যার লক্ষ্য ছিল প্রধানত দামের যে অস্থিরতা তার মূল কারণগুলো সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করা।

অনুসন্ধান করে দেখা যায়, চাল সরবরাহ ব্যবস্থায় অসংখ্য বাজার এজেন্ট রয়েছে। বাজার মূল্যের ওপর গুদাম মালিকদের বা অটো রাইস মিলারদের উল্লেখযোগ্য আধিপত্য লক্ষ্য করা যায়। ফলস্বরূপ ধান চাষীরা প্রায়শই সঠিক দাম পান না। কিন্তু ভোক্তারা অযৌক্তিকভাবে উচ্চ মূল্যের সম্মুখীন হন, যার ফলে ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়।

খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে সিপিডি বলে, বাংলাদেশে পূর্ববর্তী কর্তৃত্ববাদী সরকার উচ্চ মূল্যস্ফীতির মাধ্যমে একটি অকার্যকর অর্থনীতি রেখে গেছে, যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঠিক করতে হবে। বেশ কিছু খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলের বিশ্লেষণে মধ্যস্থতাকারীদের একটি জটিল নেটওয়ার্কের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে সাহসী এবং জরুরি পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতির হার কমানো কঠিন হবে।

রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ৪৫.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন

রাজস্ব প্রসঙ্গে সিপিডি বলছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে ২০২৫ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩.৭ শতাংশ যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময় ছিল ১৭.৭ শতাংশ অর্থাৎ এখানে উল্লেখযোগ্য অবনতি দেখা গেয়েছে।

২০২৫ অর্থবছরের মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে অর্থবছরের বাকি সময় ৪৫.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে যা মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। সামগ্রিকভাবে কর রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক। কর রাজস্বের দুটি উৎসেই (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত ও বহির্ভূত) একই চিত্র দেখা গেছে।

তিনি বলেন, ওই সময়ে মূসক এবং সম্পূরক শুল্ক আহরণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। জুলাই-আগস্টের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে শ্লথগতি এর বড় কারণ। কর রাজস্ব আহরণের পরিস্থিতি বহুলাংশেই সরকারকে মূসক এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিতে ধাবিত করেছে। তবে আইএমএফের শর্তপূরণের চাপও এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান উচ্চ-মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতিতে এ ধরনের উদ্যোগ মোটেই কাম্য নয়। কারণ পরোক্ষ কর সকল ধরনের আয়ের মানুষের জীবনেই প্রভাব ফেলে।

বাজেট বাস্তবায়নের হার নিম্নগতি

অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে ২০২৫ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিল ১৮.১ শতাংশ। পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময় যা ছিল ১৬.০ শতাংশ। অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৬.১ শতাংশ। যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময় এটি ছিল ৮.৯ শতাংশ। জুলাই-আগস্টের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, এডিপি প্রকল্পের পুনঃপ্রাধান্য নির্ধারণ এবং পুনর্মূল্যায়ন, প্রশাসনিক রদবদল এর বড় কারণ। তবে এডিপি বহির্ভূত বাজেট বাস্তবায়নের হারে জুলাই-অক্টোবর ২০২৫ অর্থবছরে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়।

সিপিডি জানায়, ২০২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা এডিপি বহির্ভূত খাতসমূহে অতিরিক্ত ব্যয় হয়। আর অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ সুদের ব্যয়জনিত কারণে হয়েছে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রায় ১০ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এর সঙ্গে প্রস্তাবিত মহার্ঘ ভাতা বাস্তবায়িত হলে এডিপি বহির্ভূত খাতসমূহে ব্যয়ের চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করে সিপিডি