সাতক্ষীরার শ্যামনগর পৌরসভায় একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই এলাকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনি খাতুন।
তিনি বলেন, বুধবার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সমাবেশ ও আলোচনাস্থলসহ পুরো পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে শ্যামনগর সদরের এম এম প্লাজার পাশে কৃষক দলের কার্যালয়ের সামনে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আনন্দ মিছিলের সঙ্গে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপির একাংশ। অন্যদিকে দলটির আরেক অংশ একই সময়ে ওই স্থানে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।
বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, গত ১৯ জানুয়ারি রাতে ১৪ বছর পর সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির ৪৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। এ ছাড়াও ঘোষণা করা হয়েছে শ্যামনগর পৌরসভা বিএনপির ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি। এরপর থেকে শ্যামনগরে কমিটির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি মিছিল সমাবেশ চলছে। কমিটি গঠন নিয়ে টানা কয়েকদিন ধরে শ্যামনগর উপজেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এরমধ্যে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) শ্যামনগর উপজেলার পূর্ববর্তী ও নতুন ঘোষিত উভয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল আলীম। পরে বুধবার (২২ জানুয়ারি) শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেয় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান কবিরের গ্রুপ। অন্যদিকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের কর্মশালা ও লিফলেট বিতরণের ঘোষণা দেয় উপজেলার বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদের গ্রুপ। এ কর্মসূচি ঘিরে পৌর এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি নিয়ে শ্যামনগরের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে বংশিপুর এবং ঈশ্বরীপুর এলাকা থেকে সোলায়মান কবির গ্রুপের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে ফেরার পথে ইসমাইলপুর এলাকায় পৌঁছালে উপজেলা বিএনপি নেতা আশেক এলাহি মুন্নার বাড়ি থেকে ওই মিছিলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য সাইফুল ইসলাম, পথচারী রবিউল ইসলাম, মেহেদী হাসান, বিএনপি কর্মী আব্দুর রশিদসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। রাজনৈতিক দলের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শ্যামনগর পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।