ঢাকা ০২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ইডেন কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo বিএনপির ভাবনায় শুধুই ভোট Logo ‘লাল সন্ত্রাস’চায় ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo শীত নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস Logo ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি অনুমোদন, কার্যকরের দিন ঘোষণা Logo বিএনপির অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিলেন ছাত্রহত্যা আসামি শ্রমিকলীগ নেতা, খুঁজে পায় না পুলিশ Logo বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতের লড়াই চালু থাকবে : জামায়াতের আমীর Logo গণঅভ্যুত্থানে রিকশাচালক ইসমাইলের মৃত্যু, চিকিৎসকসহ গ্রেপ্তার ৫ Logo নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপসহ টিভিতে যা দেখবেন আজ Logo আগাছা পরিষ্কার করতে আরেকবার যুদ্ধের প্রস্তুতি নিন: জামায়াত আমির

ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি অনুমোদন, কার্যকরের দিন ঘোষণা

গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভা। ৪৬০ দিনের বেশি যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী ৪৬ হাজার ৭৮৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ১ লাখ ১০ হাজার ৪৫৩ জনকে আহত করার পর অবশেষে এই চুক্তির অনুমোদন দিলো বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার। খবর আলজাজিরার।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা করার পর শনিবার ভোর সকালে ইসরায়েলি সরকার এই চুক্তি অনুমোদন করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার বন্দীদের মুক্তির জন্য কাঠামো অনুমোদন করেছে। বন্দীদের মুক্তির জন্য এই কাঠামো রোববার থেকে কার্যকর হবে।

ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার কিছু কঠোরপন্থির তীব্র বিরোধিতার মুখেও নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী এই চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া আটজন সদস্য এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির পক্ষে ভোট দেয়

চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি প্রথমে ছয় সপ্তাহের জন্য কার্যকর হবে। তখন গাজায় বন্দী ব্যক্তিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেয়া হবে। এর মাধ্যমে ১৫ মাসের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর পথ খুলবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, হোয়াইট হাউস আশা করছে যুদ্ধবিরতি রোববার সকালে শুরু হবে এবং রেড ক্রসের মাধ্যমে রোববার বিকেলে তিনজন নারী বন্দী ইসরায়েলে মুক্তি পাবে।

ইসরায়েলি বিচার মন্ত্রণালয় শুক্রবার প্রথম ধাপে মুক্তি দেয়া ৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তারাও রোববার মুক্তি পাবেন।

ম্যাকগার্ক হোয়াইট হাউস থেকে একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা এই চুক্তির প্রতিটি বিবরণ নিশ্চিত করেছি। আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসী যে এটি রোববার কার্যকর হতে প্রস্তুত।

রোববারের বন্দীদের মুক্তির পর চুক্তি অনুযায়ী সাতদিন পরে আরও চারজন নারী বন্দী মুক্তি পাবে এবং এরপরে প্রতি সাতদিন অন্তর আরও তিনজন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার অনেক এলাকা থেকে সরে আসবে এবং লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি তাদের উত্তরাঞ্চলের বাড়িগুলোর ধ্বংসাবশেষে ফিরে আসার সুযোগ পাবে।

এদিকে গত বুধবার কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলি হামলা গাজায় অব্যাহত রয়েছে। ঘোষণার পর থেকে প্রায় ১২০ জন মানুষ নিহত হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির এই চুক্তি যদি শেষ পর্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন শুরু হলে চরম বিভীষিকার মধ্যে থাকা গাজাবাসীর জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিতিশীলতাও কমে আসতে পারে। গাজা যুদ্ধ ঘিরেই লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকে হিজবুল্লাহ ও হুতির মতো ইরানপন্থী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ইসরায়েল।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এখন মানবিক সাহায্যের একটি স্রোত দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুক্রবার গাজার দক্ষিণে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের মিসরীয় পাশে ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

একজন মিসরীয় কর্মকর্তা জানান, রাফা ক্রসিং পুনরায় খোলার বিষয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের একটি প্রতিনিধিদল শুক্রবার কায়রো পৌঁছেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইডেন কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি অনুমোদন, কার্যকরের দিন ঘোষণা

আপডেট সময় ০৮:৫৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভা। ৪৬০ দিনের বেশি যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী ৪৬ হাজার ৭৮৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা এবং ১ লাখ ১০ হাজার ৪৫৩ জনকে আহত করার পর অবশেষে এই চুক্তির অনুমোদন দিলো বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার। খবর আলজাজিরার।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা করার পর শনিবার ভোর সকালে ইসরায়েলি সরকার এই চুক্তি অনুমোদন করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার বন্দীদের মুক্তির জন্য কাঠামো অনুমোদন করেছে। বন্দীদের মুক্তির জন্য এই কাঠামো রোববার থেকে কার্যকর হবে।

ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার কিছু কঠোরপন্থির তীব্র বিরোধিতার মুখেও নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী এই চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া আটজন সদস্য এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির পক্ষে ভোট দেয়

চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি প্রথমে ছয় সপ্তাহের জন্য কার্যকর হবে। তখন গাজায় বন্দী ব্যক্তিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেয়া হবে। এর মাধ্যমে ১৫ মাসের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর পথ খুলবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আলোচক ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, হোয়াইট হাউস আশা করছে যুদ্ধবিরতি রোববার সকালে শুরু হবে এবং রেড ক্রসের মাধ্যমে রোববার বিকেলে তিনজন নারী বন্দী ইসরায়েলে মুক্তি পাবে।

ইসরায়েলি বিচার মন্ত্রণালয় শুক্রবার প্রথম ধাপে মুক্তি দেয়া ৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। তারাও রোববার মুক্তি পাবেন।

ম্যাকগার্ক হোয়াইট হাউস থেকে একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা এই চুক্তির প্রতিটি বিবরণ নিশ্চিত করেছি। আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসী যে এটি রোববার কার্যকর হতে প্রস্তুত।

রোববারের বন্দীদের মুক্তির পর চুক্তি অনুযায়ী সাতদিন পরে আরও চারজন নারী বন্দী মুক্তি পাবে এবং এরপরে প্রতি সাতদিন অন্তর আরও তিনজন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার অনেক এলাকা থেকে সরে আসবে এবং লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি তাদের উত্তরাঞ্চলের বাড়িগুলোর ধ্বংসাবশেষে ফিরে আসার সুযোগ পাবে।

এদিকে গত বুধবার কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলি হামলা গাজায় অব্যাহত রয়েছে। ঘোষণার পর থেকে প্রায় ১২০ জন মানুষ নিহত হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির এই চুক্তি যদি শেষ পর্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন শুরু হলে চরম বিভীষিকার মধ্যে থাকা গাজাবাসীর জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিতিশীলতাও কমে আসতে পারে। গাজা যুদ্ধ ঘিরেই লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকে হিজবুল্লাহ ও হুতির মতো ইরানপন্থী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ইসরায়েল।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এখন মানবিক সাহায্যের একটি স্রোত দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুক্রবার গাজার দক্ষিণে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের মিসরীয় পাশে ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

একজন মিসরীয় কর্মকর্তা জানান, রাফা ক্রসিং পুনরায় খোলার বিষয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের একটি প্রতিনিধিদল শুক্রবার কায়রো পৌঁছেছে।