ঢাকা ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মানবসেবা ‍উন্নয়ন সংস্থা

গাভীর বাছুর বিতরণের ফটোসেশন শেষে বাছুর না দিয়ে খিচুড়ি ডিম খাইয়ে বিদায়

প্রকল্পের নাম হতদরিদ্রদের মাঝে উন্নত জাতের গাভীর বাছুর বিতরণ। বরাদ্দ ৫ লাখ টাকা। সুফলভোগী ১০ জন নারী। কিন্তু তাদের বাছুর দেবার কথা বলে ডেকে এনে প্রশিক্ষণের নামে বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তুলে বিদায় করা হয়েছে। কাউকে গরুর বাছুর দেয়া হয়নি। খামার থেকে দশটি বাছুর এনে ছবি তোলা শেষে আবার খামারেই ফেরত পাঠানো হয় সেই বাছুরগুলো। এদিকে, গরু না পাওয়ায় হতাশ ওই সকল গরীব দুঃস্থ নারীরা। ফটোসেশনের দুইসপ্তাহ পার হলেও এখনও তাদের গাভীর বাছুর বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। অর্থাৎ প্রকল্পের টাকা পুরোটাই আত্মসাতের অপচেষ্টা করা হয়েছে।

এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামের এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক এমএস আলম বাবলুর বিরুদ্ধে। বিষয়টি এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে সমালোচনা চলছে।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন (বিএনএফ) এর আর্থিক সহায়তায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা এনজিও’র উদ্যোগে ১০জন দুঃস্থ মহিলাকে গাভীর বাছুর দেয়ার কথা বলে রেলবাজারে নিয়ে আসা হয়। নিজের পরিচিত একটি খামার থেকে দশটি গাভীর বাছুর গাড়িতে করে নিয়ে আসেন এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক এমএস আলম বাবলু। এরপর এলাকার কিছু ব্যক্তিকে তার বাসভবন সংলগ্ন এনজিও’র সামনে ডেকে এনে ১০জন মহিলাকে দাঁড় করিয়ে গাভীর বাছুর দেয়ার ফটোসেশন করেন।

পরে ওই সকল দুঃস্থ মহিলাদের গাভীর বাছুর না দিয়ে খিচুড়ি ডিম খাইয়ে বিদায় করা হয়। এরপর বাছুরগুলো আবার একই গাড়িতে করে একই খামারে ফেরত দিয়ে আসা হয়। সেখানে উপস্থিত অনেকেই গরু প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী পরিচালক বাবলু জানান পরে দেয়া হবে।

কুবিরদিয়ার মাঠপাড়া গ্রামের আলম হোসেনের মেয়ে খুশি খাতুন স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার পর বাবার বাড়িতে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন। অন্যের বাড়িতে ও মাঠে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। তিনি জানান, ট্রেনিং এর কথা বলে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। গাভীর বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলে। কিন্তু আমাকে গাভীর বাছুর দেয় নাই। বলছে এবার অন্য এলাকার লোকদের দেবো, পরেরবার তোমাকে দেবো। পরে খিচুড়ি ডিম খাওয়ায়ে বিদায় করছে। বাবলু কাকা ত্যাড়া মানুষ। বেশি কথা বললে আবার ধমক দেয়। তাই আর কিছু বলার সাহস পাই নাই।

খুশি আরও জানান, এর আগে একবার আমাকে একটা ছাগল দিয়েছিল বাবলু কাকা। তবে সেজন্য আমার কাছ থেকে নগদ ১৩০০ টাকা নিয়েছিল। এছাড়া পরবর্তীতে একটি গর্ভবতী ছাগলও নিয়েছিল।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আগাছা পরিষ্কার করতে আরেকবার যুদ্ধের প্রস্তুতি নিন: জামায়াত আমির

মানবসেবা ‍উন্নয়ন সংস্থা

গাভীর বাছুর বিতরণের ফটোসেশন শেষে বাছুর না দিয়ে খিচুড়ি ডিম খাইয়ে বিদায়

আপডেট সময় ১১:০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

প্রকল্পের নাম হতদরিদ্রদের মাঝে উন্নত জাতের গাভীর বাছুর বিতরণ। বরাদ্দ ৫ লাখ টাকা। সুফলভোগী ১০ জন নারী। কিন্তু তাদের বাছুর দেবার কথা বলে ডেকে এনে প্রশিক্ষণের নামে বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তুলে বিদায় করা হয়েছে। কাউকে গরুর বাছুর দেয়া হয়নি। খামার থেকে দশটি বাছুর এনে ছবি তোলা শেষে আবার খামারেই ফেরত পাঠানো হয় সেই বাছুরগুলো। এদিকে, গরু না পাওয়ায় হতাশ ওই সকল গরীব দুঃস্থ নারীরা। ফটোসেশনের দুইসপ্তাহ পার হলেও এখনও তাদের গাভীর বাছুর বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। অর্থাৎ প্রকল্পের টাকা পুরোটাই আত্মসাতের অপচেষ্টা করা হয়েছে।

এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা নামের এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক এমএস আলম বাবলুর বিরুদ্ধে। বিষয়টি এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে সমালোচনা চলছে।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন (বিএনএফ) এর আর্থিক সহায়তায় মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা এনজিও’র উদ্যোগে ১০জন দুঃস্থ মহিলাকে গাভীর বাছুর দেয়ার কথা বলে রেলবাজারে নিয়ে আসা হয়। নিজের পরিচিত একটি খামার থেকে দশটি গাভীর বাছুর গাড়িতে করে নিয়ে আসেন এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক এমএস আলম বাবলু। এরপর এলাকার কিছু ব্যক্তিকে তার বাসভবন সংলগ্ন এনজিও’র সামনে ডেকে এনে ১০জন মহিলাকে দাঁড় করিয়ে গাভীর বাছুর দেয়ার ফটোসেশন করেন।

পরে ওই সকল দুঃস্থ মহিলাদের গাভীর বাছুর না দিয়ে খিচুড়ি ডিম খাইয়ে বিদায় করা হয়। এরপর বাছুরগুলো আবার একই গাড়িতে করে একই খামারে ফেরত দিয়ে আসা হয়। সেখানে উপস্থিত অনেকেই গরু প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী পরিচালক বাবলু জানান পরে দেয়া হবে।

কুবিরদিয়ার মাঠপাড়া গ্রামের আলম হোসেনের মেয়ে খুশি খাতুন স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার পর বাবার বাড়িতে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন। অন্যের বাড়িতে ও মাঠে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। তিনি জানান, ট্রেনিং এর কথা বলে আমাকে ডেকে নিয়ে যায়। গাভীর বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলে। কিন্তু আমাকে গাভীর বাছুর দেয় নাই। বলছে এবার অন্য এলাকার লোকদের দেবো, পরেরবার তোমাকে দেবো। পরে খিচুড়ি ডিম খাওয়ায়ে বিদায় করছে। বাবলু কাকা ত্যাড়া মানুষ। বেশি কথা বললে আবার ধমক দেয়। তাই আর কিছু বলার সাহস পাই নাই।

খুশি আরও জানান, এর আগে একবার আমাকে একটা ছাগল দিয়েছিল বাবলু কাকা। তবে সেজন্য আমার কাছ থেকে নগদ ১৩০০ টাকা নিয়েছিল। এছাড়া পরবর্তীতে একটি গর্ভবতী ছাগলও নিয়েছিল।