ঢাকা ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনা: ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দোয়া মাহফিল Logo বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক Logo হতাহতের মা-বাবাদের কী জবাব দেব: প্রধান উপদেষ্টা Logo উত্তরার বিমান দুর্ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তারেক রহমানের Logo এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ছাত্রশিবিরের সংবর্ধনা Logo উত্তরায় স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত বেড়ে ১৯ Logo বিমান দুর্ঘটনায় জাতিসংঘের শোক, রাষ্ট্রীয় শোকে অংশগ্রহণের ঘোষণা Logo বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির শোক Logo পাইলট তৌকির বিমানটিকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেন: আইএসপিআর Logo ব্লাড ডোনার লিস্ট

এবার মাদকরোধক ডিসপ্লেতে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’

এবার মাদকরোধক ডিসপ্লেতে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গেন্ডারিয়া ঢাকা (দক্ষিণ) কার্যালয়ের ছাদে মাদকরোধক ডিসপ্লেতে অস্বাভাবিক একটি বার্তা দেখা যাওয়ায় ব্যাপক আলোচনা ও তোলপাড় শুরু হয়েছে। ডিসপ্লেতে লেখা ছিল, ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’। এ ঘটনায় অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। এরই মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ঘটনা নথিভুক্ত করতে পুলিশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অধিদপ্তরের দক্ষিণ কার্যালয়ের ছাদের বাইরের দিকে একটি ডিসপ্লে আছে। সেখানে ‘মাদককে না বলুন’সহ মাদকবিরোধী নানা শ্লোগান ২৪ ঘন্টা দেখা যায়। কিন্তু গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে ডিসপ্লেতে হঠাৎ ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’ লেখা দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এ সময় খবর পেয়ে গেন্ডারিয়া থানার টহল পুলিশ এসআই মো. আব্দুর কাদির ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে আসেন। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে তারা স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ডিসপ্লেটি বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। তবে দক্ষিণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাঞ্জারুল ইসলাম বলেন, ‘‘ডিসপ্লে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করায় আমার কাছে ফুটেজ নেই। তবে নতুন যে পেন ড্রাইভ লাগানো আছে, সেখানে লেখা থাকলে থাকতেও পারে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পরিচালক লিখিতভাবে প্রধান কার্যালয়কে জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি ঘটনা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’’

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে গেন্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু শাহেদ ঘটনার সতত্য নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাদি হয়ে ডায়েরি করেছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও জিডি করতে এসেছেন।’’

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এটি পরিকল্পিত ঘটনা বলে আমাদের কাছে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। তদন্তের পরই বিস্তারিত জানাতে পারবো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এই অফিসে রাতের বেলা যেন কেউ ঢুকেতে না পারে সেজন্য প্রধান ফটক আটকে রাখা হয়। থাকে দারোয়ান। এরপরও ছাদে যেতে হলে সেখানে দুজন নিরাপত্তার রক্ষি থাকে। যাদের কাছে ছাদে ওঠার চাবি থাকে। আবার ওই ডিসপ্লেতে আগের পেন ড্রাইভ খুলে নতুন করে পেন ড্রাইভ লাগানো হয়েছে। ফলে ভেতরের কারো সহায়তা না থাকলে পেন ড্রাইভ পরিবর্তন করা সম্ভব না বলে তারা মনে করছেন।

এ দিকে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিদপ্তরে এখনও ফ্যাাসিবাদের দোসররা রয়েছে। তারা অধিদপ্তর বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এ ধরনের কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন নিজেদের ইচ্ছামতো সিন্ডিকেট তৈরি করে অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মাঝেমধ্যেই অধিদপ্তরে ঘটছে নানা অনিয়ম বা দুর্নীতির ঘটনা।

উল্লেখ্য এর আগেও কমলাপুর স্টেশনসহ ঢাকার বাইরে আরও কয়েকটি জেলায় সরকারি অফিস কিংবা অধিদপ্তরের ডিসপ্লেতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নানা শ্লোগান ভেসে ওঠার ঘটনা ঘটেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনা: ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দোয়া মাহফিল

এবার মাদকরোধক ডিসপ্লেতে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’

আপডেট সময় ০৯:০৪:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গেন্ডারিয়া ঢাকা (দক্ষিণ) কার্যালয়ের ছাদে মাদকরোধক ডিসপ্লেতে অস্বাভাবিক একটি বার্তা দেখা যাওয়ায় ব্যাপক আলোচনা ও তোলপাড় শুরু হয়েছে। ডিসপ্লেতে লেখা ছিল, ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’। এ ঘটনায় অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। এরই মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ঘটনা নথিভুক্ত করতে পুলিশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অধিদপ্তরের দক্ষিণ কার্যালয়ের ছাদের বাইরের দিকে একটি ডিসপ্লে আছে। সেখানে ‘মাদককে না বলুন’সহ মাদকবিরোধী নানা শ্লোগান ২৪ ঘন্টা দেখা যায়। কিন্তু গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে ডিসপ্লেতে হঠাৎ ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসবে’ লেখা দেখা যায়। এ সময় স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এ সময় খবর পেয়ে গেন্ডারিয়া থানার টহল পুলিশ এসআই মো. আব্দুর কাদির ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে আসেন। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে তারা স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ডিসপ্লেটি বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। তবে দক্ষিণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাঞ্জারুল ইসলাম বলেন, ‘‘ডিসপ্লে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করায় আমার কাছে ফুটেজ নেই। তবে নতুন যে পেন ড্রাইভ লাগানো আছে, সেখানে লেখা থাকলে থাকতেও পারে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পরিচালক লিখিতভাবে প্রধান কার্যালয়কে জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি ঘটনা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’’

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে গেন্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু শাহেদ ঘটনার সতত্য নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাদি হয়ে ডায়েরি করেছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও জিডি করতে এসেছেন।’’

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এটি পরিকল্পিত ঘটনা বলে আমাদের কাছে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। তদন্তের পরই বিস্তারিত জানাতে পারবো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি এই অফিসে রাতের বেলা যেন কেউ ঢুকেতে না পারে সেজন্য প্রধান ফটক আটকে রাখা হয়। থাকে দারোয়ান। এরপরও ছাদে যেতে হলে সেখানে দুজন নিরাপত্তার রক্ষি থাকে। যাদের কাছে ছাদে ওঠার চাবি থাকে। আবার ওই ডিসপ্লেতে আগের পেন ড্রাইভ খুলে নতুন করে পেন ড্রাইভ লাগানো হয়েছে। ফলে ভেতরের কারো সহায়তা না থাকলে পেন ড্রাইভ পরিবর্তন করা সম্ভব না বলে তারা মনে করছেন।

এ দিকে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিদপ্তরে এখনও ফ্যাাসিবাদের দোসররা রয়েছে। তারা অধিদপ্তর বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এ ধরনের কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন নিজেদের ইচ্ছামতো সিন্ডিকেট তৈরি করে অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মাঝেমধ্যেই অধিদপ্তরে ঘটছে নানা অনিয়ম বা দুর্নীতির ঘটনা।

উল্লেখ্য এর আগেও কমলাপুর স্টেশনসহ ঢাকার বাইরে আরও কয়েকটি জেলায় সরকারি অফিস কিংবা অধিদপ্তরের ডিসপ্লেতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নানা শ্লোগান ভেসে ওঠার ঘটনা ঘটেছে।