প্রয়োজনীয় সংস্কার করে চলতি বছরেই জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করে বিএনপি। রোববার (১১ জানুয়ারি) বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ইইউ‘র রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারে বৈঠকের পর আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের এই অবস্থানের একথা জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ সবার মনে প্রশ্ন আছে সেই বিষয়গুলো বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে…একটি হচ্ছে নির্বাচন … কবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে? আমাদের ভাবনা কি? সংস্কারের ব্যাপরে যে আলোচনা হয়েছে… সেই সংস্কারের ব্যাপারে আমাদের ভাবনা কি? মূলত নির্বাচনের রোডম্যাপ এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা যেটা বলে আসছি, এই বছরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরী। অন্য কোনো ভাবনার দিকে না গিয়ে সরাসরি জাতীয় নির্বাচনের দিকে গিয়ে দেশে আগামীদিনে একটা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য।
খসরু বলেন, অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দেশ বেশিদিন চলতে পারে না। অগণতান্ত্রিক সরকারের রাজনৈতিক ওয়েট থাকে না, মবিলাইজেশন প্রসেস থাকে না, জনগনের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকে না। জনগনের কাছ থেকে কোনো ফিটব্যাক পাওয়া যায় না। সুতরাং একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যত তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব সেদিকে আমরা জোর দিয়েছি।
সংস্কার প্রসঙ্গে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংস্কারের বিষয়ে যেটি আলোচনা হয়েছে সেটা হচ্ছে যে ক‘টি বিষয়ে আমরা ঐক্যমতে যেতে পারব সেগুলো ইমিডিয়েটলি করা যেতে পারে… সেগুলোর ব্যাপারে সময় নেয়ার কোনো কারণ নেই। আর যেগুলো ঐক্যমত হবে না…সেগুলো আগামী দিনে নির্বাচনে প্রত্যেকটি দল জনগনের কাছে নিয়ে যাবে তাদের যে প্রোগ্রাম নিয়ে যাবে, জনগনের ম্যান্ডেট নিয়ে আগামী দিনে সংসদে পেশ করা হবে এবং সংসদে আলোচনা হবে, তর্ক হবে-বিতর্ক হবে এবং পাস করা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু ইইউ‘র সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে আমাদের সাথে তাদের অর্থনীতির..। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে যে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড তা অব্যাহত থাকবে কিনা? আমাদের পক্ষ থেকে পরিস্কারভাবে বিএনপির অর্থনৈতিক সফলতা আমরা বলেছি… আগামীদিনে দেশের অর্থনীতিকে এই গর্তের থেকে তু্লে আনার জন্য বিএনপি যে কর্মসূচি ইতিমধ্যে নিয়েছে এবং এই সরকারের সময় যদি কোনো কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়া হয় সেটা অবশ্যই আমরা সমর্থন করব। আমাদের দলের অর্থনৈতিক কর্মসূচি আছে জনগন আমাদেরকে নির্বাচিত করলে সেই কাজগুলো আমরা করব।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে সেজন্য বিনিয়োগকারীদের বিএনপি স্বাগত জানায় বলে জানান আমির খসরু।
রো্ববার বিকাল সাড়ে তিনটায় রাষ্ট্রদূতের পতাকাবাহী গাড়ি গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।