ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ইতরামির একটা সীমা আছে: পুলিশকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলামকে আদালতের এজলাস কক্ষে নিতে লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ইতরামির একটা সীমা আছে, ফাজলামো পেয়েছেন নাকি?’

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর লালবাগ থানার মো. আলী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য কামরুল ইসলামকে আদালতে আনা হয়।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর অভিযোগ, ‘আদালতে এলেই তিনি পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে ঝগড়া করেন।’

বুধবার সকালে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয় কামরুল ইসলাম, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পাঁচজনকে। এরপর তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে শুনানির জন্য তাদের এজলাসে তোলা হয়।

পরে কামরুল, পলক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৫ জনকে মাথায় হেলমেট, হাতে হাতকড়া আর বুকে বুলেট প্রুভ জ্যাকেট পরিয়ে সারিবদ্ধভাবে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু আদালতের সিঁড়ি দিয়ে তোলার সময় বাঁধে বিপত্তি। আদালতের লিফটে না তুলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ তলায় তোলা হয় তাদের। এ সময় আসামিদের নিরাপত্তাদানকারী পুলিশ সদস্যদের ওপর চটে যান কামরুল ইসলাম।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আদালতের লিফট কি নষ্ট? এতো ওপরে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটানো হচ্ছে কেন? জানতে চেয়ে একপ্রকার চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। এ সময় পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া আইনজীবীরা বলতে থাকেন, ‘আদালতে আপনারা লাগিয়েছেন নষ্ট লিফট।’ এরপর কামরুলকে পুলিশ সদস্যরা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার সময় হাত ধরে সহায়তা করেন।

শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত আসামিদের বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিকে শুনানি শেষে কামরুল ইসলামকে আদালতের লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারকী বলেন, ‘লিফটের সামনে অনেক সময় বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ, আইনজীবীদের ভিড় থাকে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে, কোনো রকম ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় সিঁড়ি দিয়ে তোলা হয়।’

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘আর আদালতে এলেই তিনি পুলিশের সঙ্গে ঝগড়া করেন। কখনো আইনজীবীদের সঙ্গে ঝগড়া করেন। আবার কখনো উচ্চবাচ্য বক্তব্য রাখেন। এটা তার অভ্যাস।

মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই লালবাগ থানার আজিমপুর কলোনি এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন মোহাম্মদ আলী। ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর লালবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘জামায়াত ইসলামী কারো ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে না’

ইতরামির একটা সীমা আছে: পুলিশকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল

আপডেট সময় ০৫:২২:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলামকে আদালতের এজলাস কক্ষে নিতে লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ইতরামির একটা সীমা আছে, ফাজলামো পেয়েছেন নাকি?’

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর লালবাগ থানার মো. আলী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য কামরুল ইসলামকে আদালতে আনা হয়।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর অভিযোগ, ‘আদালতে এলেই তিনি পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে ঝগড়া করেন।’

বুধবার সকালে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয় কামরুল ইসলাম, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পাঁচজনকে। এরপর তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে শুনানির জন্য তাদের এজলাসে তোলা হয়।

পরে কামরুল, পলক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৫ জনকে মাথায় হেলমেট, হাতে হাতকড়া আর বুকে বুলেট প্রুভ জ্যাকেট পরিয়ে সারিবদ্ধভাবে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু আদালতের সিঁড়ি দিয়ে তোলার সময় বাঁধে বিপত্তি। আদালতের লিফটে না তুলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ তলায় তোলা হয় তাদের। এ সময় আসামিদের নিরাপত্তাদানকারী পুলিশ সদস্যদের ওপর চটে যান কামরুল ইসলাম।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আদালতের লিফট কি নষ্ট? এতো ওপরে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটানো হচ্ছে কেন? জানতে চেয়ে একপ্রকার চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। এ সময় পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া আইনজীবীরা বলতে থাকেন, ‘আদালতে আপনারা লাগিয়েছেন নষ্ট লিফট।’ এরপর কামরুলকে পুলিশ সদস্যরা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার সময় হাত ধরে সহায়তা করেন।

শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত আসামিদের বিভিন্ন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিকে শুনানি শেষে কামরুল ইসলামকে আদালতের লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারকী বলেন, ‘লিফটের সামনে অনেক সময় বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ, আইনজীবীদের ভিড় থাকে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে, কোনো রকম ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় সিঁড়ি দিয়ে তোলা হয়।’

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘আর আদালতে এলেই তিনি পুলিশের সঙ্গে ঝগড়া করেন। কখনো আইনজীবীদের সঙ্গে ঝগড়া করেন। আবার কখনো উচ্চবাচ্য বক্তব্য রাখেন। এটা তার অভ্যাস।

মামলার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই লালবাগ থানার আজিমপুর কলোনি এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন মোহাম্মদ আলী। ওইদিন বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর লালবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।