ঢাকা ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকা উচিত নয়: মির্জা ফখরুল

দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকা উচিত নয় : মির্জা ফখরুল

দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের শক্তিটা অন্য। এর পেছনে জনগণ থাকে। এই কথাটা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে।

আমরা সংস্কার চাই, আমরা সংস্কার বেশি চাই। কিন্তু আমরা এটাও চাই, দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয়। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জ ফখরুল বলেন, ‘আপনি সংস্কারের জন্য কয়েকটা কমিশন করেছেন।

সেসব কমিশন কাজ করছে ভালো কথা। এই কমিশন কাদের সঙ্গে কাজ করছে? তারা কয়েকজন পণ্ডিত ব্যক্তিকে নিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের ভালো করে চিনি, সম্মান করি। কিন্তু একই সঙ্গে জনগণের কাছে যান।

তারা কী চায় জানুন। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আপনারা সংস্কার করেন আমাদের কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু যে বিষয়টা নিয়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে তা হলো বাংলাদেশের অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা এগুলো সমস্যা। এই সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকে। নির্বাচিত সরকারের শক্তিটা অন্য।

এর পেছনে জনগণ থাকে। এই কথাটা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে। আমরা সংস্কার চাই, আমরা সংস্কার বেশি চাই। কিন্তু আমরা এটাও চাই, দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন দেশের সংকট বাড়ছে তো বাড়ছেই। সবচেয়ে বড় সংকট সাধারণ মানুষের। চালের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, তাদের পক্ষে চাল কেনাও কঠিন হয়ে গেছে। চাল, ডাল, তেল, লবন, ডিম, মুরগি প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটার দিকে তাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কোনো খেয়াল নেই। দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য তারা কাজ করছেন না। কিছু বললে বলেন, এত তাড়াতাড়ি সম্ভব না। কিন্তু আমরা উদ্যোগটা দেখতে চাই। কী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সেটা দেখতে চাই। আমরা তো দেখলাম না, উনাদের কজন উপদেষ্টা বা যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন তারা বাজারে গিয়ে একটু জিজ্ঞাসা করছেন। মানুষকে বোঝার চেষ্টা করছেন যে, সমস্যাটা কোথায়?’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কার কোনো নতুন ধারণা নয়। আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি মুহূর্তে সংস্কার হচ্ছে, সেই ধারা চলতে থাকবে। সে জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না। সেই পর্যন্ত আমরা একটি অনির্বাচিত সরকারের হাতে দিনের পর দিন দেশ চালাতে দিতে পারি না। সেই কারণে আমরা যখন বলি, নির্বাচন তাড়াতাড়ি চায়, তখন আমাদের সম্পর্কে একটা ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে, বিএনপি তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। ক্ষমতায় তো আমরা আগেও ছিলাম। আল্লাহ চাইলে আমরা আবারও ক্ষমতায় যাব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাব হচ্ছে, ১৭ বছর ভোটার হওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা। এখন তা হলে কী করতে হবে? নতুন করে আবার ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই বিষয়টাকে এভাবে না বলে উচিত ছিল, এই বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে তারপর বিষয়টা আনতে পারলে ভালো হতো। কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না। এখন তো আরো বেশি মানুষ আশাহত হবে। এটা করতে গিয়ে আরো সময় যাবে, আরো সময় খাবে, আরো সময়ক্ষেপণ হবে, আরো বিলম্ব হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘কেন জানি না মানুষের মধ্যে একটা ধারণা হচ্ছে, এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করছে। এটা সঠিক নয়। বাট এট দ্য সেম টাইম মানুষের মধ্যে এই আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।’

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বলেন, ‘তরুণরা সংখ্যায় বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জবির শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা, আহত ৯

দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকা উচিত নয়: মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় ০৫:৪৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের শক্তিটা অন্য। এর পেছনে জনগণ থাকে। এই কথাটা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে।

আমরা সংস্কার চাই, আমরা সংস্কার বেশি চাই। কিন্তু আমরা এটাও চাই, দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয়। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জ ফখরুল বলেন, ‘আপনি সংস্কারের জন্য কয়েকটা কমিশন করেছেন।

সেসব কমিশন কাজ করছে ভালো কথা। এই কমিশন কাদের সঙ্গে কাজ করছে? তারা কয়েকজন পণ্ডিত ব্যক্তিকে নিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের ভালো করে চিনি, সম্মান করি। কিন্তু একই সঙ্গে জনগণের কাছে যান।

তারা কী চায় জানুন। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আপনারা সংস্কার করেন আমাদের কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু যে বিষয়টা নিয়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে তা হলো বাংলাদেশের অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা এগুলো সমস্যা। এই সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকে। নির্বাচিত সরকারের শক্তিটা অন্য।

এর পেছনে জনগণ থাকে। এই কথাটা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে। আমরা সংস্কার চাই, আমরা সংস্কার বেশি চাই। কিন্তু আমরা এটাও চাই, দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমকায় থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন দেশের সংকট বাড়ছে তো বাড়ছেই। সবচেয়ে বড় সংকট সাধারণ মানুষের। চালের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, তাদের পক্ষে চাল কেনাও কঠিন হয়ে গেছে। চাল, ডাল, তেল, লবন, ডিম, মুরগি প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটার দিকে তাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) কোনো খেয়াল নেই। দ্রব্যমূল্য কমানোর জন্য তারা কাজ করছেন না। কিছু বললে বলেন, এত তাড়াতাড়ি সম্ভব না। কিন্তু আমরা উদ্যোগটা দেখতে চাই। কী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সেটা দেখতে চাই। আমরা তো দেখলাম না, উনাদের কজন উপদেষ্টা বা যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন তারা বাজারে গিয়ে একটু জিজ্ঞাসা করছেন। মানুষকে বোঝার চেষ্টা করছেন যে, সমস্যাটা কোথায়?’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কার কোনো নতুন ধারণা নয়। আর সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতি মুহূর্তে সংস্কার হচ্ছে, সেই ধারা চলতে থাকবে। সে জন্য নির্বাচন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে না। সেই পর্যন্ত আমরা একটি অনির্বাচিত সরকারের হাতে দিনের পর দিন দেশ চালাতে দিতে পারি না। সেই কারণে আমরা যখন বলি, নির্বাচন তাড়াতাড়ি চায়, তখন আমাদের সম্পর্কে একটা ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে, বিএনপি তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। ক্ষমতায় তো আমরা আগেও ছিলাম। আল্লাহ চাইলে আমরা আবারও ক্ষমতায় যাব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাব হচ্ছে, ১৭ বছর ভোটার হওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা। এখন তা হলে কী করতে হবে? নতুন করে আবার ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই বিষয়টাকে এভাবে না বলে উচিত ছিল, এই বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে তারপর বিষয়টা আনতে পারলে ভালো হতো। কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না। এখন তো আরো বেশি মানুষ আশাহত হবে। এটা করতে গিয়ে আরো সময় যাবে, আরো সময় খাবে, আরো সময়ক্ষেপণ হবে, আরো বিলম্ব হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘কেন জানি না মানুষের মধ্যে একটা ধারণা হচ্ছে, এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করছে। এটা সঠিক নয়। বাট এট দ্য সেম টাইম মানুষের মধ্যে এই আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।’

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বলেন, ‘তরুণরা সংখ্যায় বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।’