সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়েছে। এতে ৬০-৭০ জনের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার বর্ণি ও কাঠাঁলবাড়ী গ্রামবাসীর মধ্যে শনিবার রাতে প্রথমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর রোববার সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ বাধে; যা চলে দুপুর পর্যন্ত। এসময় উপজেলা সদর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক দিয়ে সাদাপাথরগামী পর্যটকদের গাড়িগুলো আটকা পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বেলা ২টার পর সংষর্ষ থামলেও রাস্তাঘাটে ইট-পাটকেলের স্তুপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার প্রভাকর রায় বলেন, মারামারির ঘটনায় আহত হয়ে রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত ৬০/৭০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত তিনজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহত আরও অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও রেজিস্ট্রার খাতায় নাম এন্ট্রি করেননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, শনিবার বিকালে বর্ণি গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইলে চার্জ দেওয়া নিয়ে কাঠাঁলবাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তির বাকবিতণ্ডা হয়। সেখানে কাঠাঁলবাড়ী গ্রামের এক ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় বর্ণি গ্রামের লোকজন সড়কে গাড়ি আটকে অবরোধ করেন।
পরে থানা সদরে কোম্পানীগঞ্জ, বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী তিন গ্রামের লোকজনের মধ্যে দেশি অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় এবং পরে তা সংঘর্ষে গড়ায়।
তিনি আরও জানান, এই সংঘর্ষ চলেছে রাত ৯টা পর্যন্ত। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকাল ১০টার দিকে বর্ণি গ্রামের বাসিন্দারা মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশি অস্ত্র নিয়ে কাঁঠালবাড়ী গ্রামের দিকে এগিয়ে যায়। পরে উপজেলা সদরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বেলা ২টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে।
ওসি জানান, সংঘর্ষ চলাকালে সড়কের দুইপাশে গাড়ি আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দুই পক্ষকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বোববারর সকাল থেকে সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুতি নেন বর্ণি ও কাঁঠালবাড়ী গ্রামের লোকজন। সিএনজিচালিত অটেরিকশায় মাইক বেঁধে গ্রামের লোকজনকে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। পরে দুই গ্রামের লোকজন উপজেলার থানা বাজার পয়েন্টে দফায়-দফায় সংঘর্ষে জড়ান। সরেজমিনে দেখা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এলাকায় এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।