ঢাকা ১২:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র চান পোপ ফ্রান্সিস

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র চান পোপ ফ্রান্সিস

ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র চান পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেছেন, চলমান সংকট নিরসনে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের জন্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান প্রয়োজন। এছাড়া পবিত্র জেরুজালেম নগরীর জন্য বিশেষ মর্যাদা (স্পেশাল স্ট্যাটাস) দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

টানা প্রায় একমাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। রক্তাক্ত এই আগ্রাসনের জেরে সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে, আর এর মধ্যেই এই দাবি জানালেন পোপ ফ্রান্সিস। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় চলমান সংঘাতের মতো যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের জন্য দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রয়োজন বলে বুধবার জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। একইসঙ্গে জেরুজালেমের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিতের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

ইতালীয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরএআইয়ের টিজি১ নিউজ চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পোপ ফ্রান্সিস এসব কথা বলেন। এছাড়া গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া এই সংঘাতকে আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নেওয়া থেকে এড়ানো সম্ভব হবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

ইতালির সম্প্রচারকারী আরএআইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘ওই দুই জনগণকে একসাথে থাকতে হবে। সেই হিসেবে ভালো সমাধানের উপায় হচ্ছে, দুটি রাষ্ট্র। অসলো চুক্তি, দুটি সুসংজ্ঞায়িত রাষ্ট্র এবং জেরুজালেমের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদা। ১৯৯৩ সালে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইতজাক রাবিন এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের নেতা ইয়াসির আরাফাত সীমিত পরিসরে ফিলিস্তিনি স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অসলো চুক্তিতে সম্মত হন।

এরপর ২০০০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক এবং ইয়াসির আরাফাত ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন তারা। প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং ১৯৮০ সালে সমগ্র শহরটিকে ইসরায়েলের ‘একক ও চিরন্তন রাজধানী’ হিসেবে ঘোষণা করে। তবে ফিলিস্তিনিরা এীতহাসিক এই শহরের পূর্ব অংশকে নিজেদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখে থাকে।

তবে জেরুজালেম নগরীর বিশেষ বা আন্তর্জাতিক কোনও মর্যাদা থাকার বিষয়টি ইসরায়েল ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। যদিও এই শহরটি খ্রিস্টান, মুসলিম এবং ইহুদিদের কাছে পবিত্র। বুধবার পোপ বলেন, ‘পবিত্র ভূমিতে এই যুদ্ধ আমাকে ভীত করে। এই লোকেরা কীভাবে এই সংঘাতে অবসান করবে? তিনি আরও বলেন, সংঘাত ও উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থ হচ্ছে, ‘বহু মানুষের জীবনসহ অনেক কিছুর সমাপ্তি’।

রয়টার্স বলছে, হামাস-ইসরায়েল সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর গাজাবাসীদের সাহায্য করার জন্য মানবিক করিডোর এবং যুদ্ধবিরতির কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এই যুদ্ধের কারণে মানুষ যেন ইউক্রেন, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং মিয়ানমারসহ অন্যান্য সংঘাতকে ভুলে না যায়।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

ইকুয়েডরকে ৭ গোল দিল আর্জেন্টিনা

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র চান পোপ ফ্রান্সিস

আপডেট সময় ১২:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩

ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র চান পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেছেন, চলমান সংকট নিরসনে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের জন্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান প্রয়োজন। এছাড়া পবিত্র জেরুজালেম নগরীর জন্য বিশেষ মর্যাদা (স্পেশাল স্ট্যাটাস) দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

টানা প্রায় একমাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। রক্তাক্ত এই আগ্রাসনের জেরে সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে, আর এর মধ্যেই এই দাবি জানালেন পোপ ফ্রান্সিস। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় চলমান সংঘাতের মতো যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের জন্য দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান প্রয়োজন বলে বুধবার জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। একইসঙ্গে জেরুজালেমের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিতের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

ইতালীয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরএআইয়ের টিজি১ নিউজ চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পোপ ফ্রান্সিস এসব কথা বলেন। এছাড়া গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া এই সংঘাতকে আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নেওয়া থেকে এড়ানো সম্ভব হবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

ইতালির সম্প্রচারকারী আরএআইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘ওই দুই জনগণকে একসাথে থাকতে হবে। সেই হিসেবে ভালো সমাধানের উপায় হচ্ছে, দুটি রাষ্ট্র। অসলো চুক্তি, দুটি সুসংজ্ঞায়িত রাষ্ট্র এবং জেরুজালেমের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদা। ১৯৯৩ সালে ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইতজাক রাবিন এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের নেতা ইয়াসির আরাফাত সীমিত পরিসরে ফিলিস্তিনি স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অসলো চুক্তিতে সম্মত হন।

এরপর ২০০০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক এবং ইয়াসির আরাফাত ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন তারা। প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং ১৯৮০ সালে সমগ্র শহরটিকে ইসরায়েলের ‘একক ও চিরন্তন রাজধানী’ হিসেবে ঘোষণা করে। তবে ফিলিস্তিনিরা এীতহাসিক এই শহরের পূর্ব অংশকে নিজেদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখে থাকে।

তবে জেরুজালেম নগরীর বিশেষ বা আন্তর্জাতিক কোনও মর্যাদা থাকার বিষয়টি ইসরায়েল ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। যদিও এই শহরটি খ্রিস্টান, মুসলিম এবং ইহুদিদের কাছে পবিত্র। বুধবার পোপ বলেন, ‘পবিত্র ভূমিতে এই যুদ্ধ আমাকে ভীত করে। এই লোকেরা কীভাবে এই সংঘাতে অবসান করবে? তিনি আরও বলেন, সংঘাত ও উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থ হচ্ছে, ‘বহু মানুষের জীবনসহ অনেক কিছুর সমাপ্তি’।

রয়টার্স বলছে, হামাস-ইসরায়েল সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর গাজাবাসীদের সাহায্য করার জন্য মানবিক করিডোর এবং যুদ্ধবিরতির কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এই যুদ্ধের কারণে মানুষ যেন ইউক্রেন, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং মিয়ানমারসহ অন্যান্য সংঘাতকে ভুলে না যায়।