ঢাকা ০৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পারিবারিক কলহ: মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা!

পারিবারিক কলহ: মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা!

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ১১ মাস বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন এক মা। এতে ঘটনাস্থলে মা নাসরিন আক্তার (২৯) ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেয়ে রওজাতুল জান্নাত রাফসার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করছেন শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ছাইদুর রহমান। সকালে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেললাইনের শ্রীপুরের সাতখামাইর বাজার এলাকার তিনি ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন।

নিহত নাসরিন ময়মনসিংহের পাগলা থানার টাঙ্গাবো গ্রামের মো. রাসেলের স্ত্রী। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে রাসেল শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের আমতলী এলাকায় আহমেদ ফকিরের বাড়িতে ভাড়া থেকে পার্শ্ববর্তী পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

রেলওয়ের কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি সকাল ১০টার দিকে সাতখামাইর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করছিল। এ সময় নাসরিন আক্তার মেয়েকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রেন কাছাকাছি এলে তিনি সামনে ঝাঁপ দেন। এতে ইঞ্জিনের আঘাতে নাসরিন আক্তার শিশুসহ আট থেকে ১০ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলে নাসরিনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুস্মিতা সাহা বলেন, হাসপাতালে নিহতের মরদেহ আনা হয়নি। একটি শিশুকে আনা হয়েছিল। শিশুটির মাথায় আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নিহত নাসরিনের ছেলে মো. বেলাল আহমেদ নাঈম জানান, তার বাবার সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে বোনকে কোলে নিয়ে মা সকাল ৬টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা এ ঘটনা জানতে পারেন।

নিহতের স্বামী রাসেল বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে আমার স্ত্রী মারা যায়। এ সময় স্থানীয়রা আমার শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেয়েটি মারা গেছে। আমরা এখন তাদের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।’’

শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ছাইদুর রহমান বলেন, সকালে মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীপুর থেকে ময়মনসিংহের দিকে যাওয়ার পর সাতখামাইর এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নারী ও শিশু হতাহত হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশে জানানো হয়েছে। জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন ফাঁড়ির ইনচার্জ সেতাফুর রহমান বলেন, ট্রেনের ধাক্কায় এক নারীর নিহতের খবর পেয়েছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যে সন্দেহের কথা জানাল শিবির

পারিবারিক কলহ: মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা!

আপডেট সময় ০৯:৪২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ১১ মাস বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন এক মা। এতে ঘটনাস্থলে মা নাসরিন আক্তার (২৯) ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেয়ে রওজাতুল জান্নাত রাফসার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করছেন শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ছাইদুর রহমান। সকালে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেললাইনের শ্রীপুরের সাতখামাইর বাজার এলাকার তিনি ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন।

নিহত নাসরিন ময়মনসিংহের পাগলা থানার টাঙ্গাবো গ্রামের মো. রাসেলের স্ত্রী। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে রাসেল শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের আমতলী এলাকায় আহমেদ ফকিরের বাড়িতে ভাড়া থেকে পার্শ্ববর্তী পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

রেলওয়ের কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি সকাল ১০টার দিকে সাতখামাইর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করছিল। এ সময় নাসরিন আক্তার মেয়েকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রেন কাছাকাছি এলে তিনি সামনে ঝাঁপ দেন। এতে ইঞ্জিনের আঘাতে নাসরিন আক্তার শিশুসহ আট থেকে ১০ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলে নাসরিনের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুস্মিতা সাহা বলেন, হাসপাতালে নিহতের মরদেহ আনা হয়নি। একটি শিশুকে আনা হয়েছিল। শিশুটির মাথায় আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নিহত নাসরিনের ছেলে মো. বেলাল আহমেদ নাঈম জানান, তার বাবার সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে বোনকে কোলে নিয়ে মা সকাল ৬টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা এ ঘটনা জানতে পারেন।

নিহতের স্বামী রাসেল বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে আমার স্ত্রী মারা যায়। এ সময় স্থানীয়রা আমার শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেয়েটি মারা গেছে। আমরা এখন তাদের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।’’

শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ছাইদুর রহমান বলেন, সকালে মহুয়া এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীপুর থেকে ময়মনসিংহের দিকে যাওয়ার পর সাতখামাইর এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় নারী ও শিশু হতাহত হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশে জানানো হয়েছে। জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন ফাঁড়ির ইনচার্জ সেতাফুর রহমান বলেন, ট্রেনের ধাক্কায় এক নারীর নিহতের খবর পেয়েছেন।