ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের দেওয়া নির্দেশ পুনর্বিবেচনাসহ লাইসেন্স ও রুট পারমিট দিতে নীতিমালার বিষয়ে সুরাহা করতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ। অন্যথায় আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকার ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দেশের ৬৪ জেলায় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে আলটিমেটাম দিয়ে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন সংগঠনের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন।
তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল না করতে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় এখনও বহাল রয়েছে। তারপরও হাইকোর্ট কিভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে রায় দেয়? সুপ্রিমকোর্টের যে রায় আছে তার ফলে হাইকোর্টের রায় এমনিতেই বাতিল হয়ে যায়।
২০২২ সালের এপ্রিলে ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যানবাহন মহাসড়কে উঠতে পারবে না বলে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। এর ফলে মহাসড়ক ছাড়া অন্য সব সড়কে এই যানগুলো চলার বৈধতা পায়।
গত মঙ্গলবার উচ্চ আদালত থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ আসে। প্যাডেল চালিত রিকশা সমিতির করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
এর পরদিনই ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে রাজধানীর দয়াগঞ্জ মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রিকশা চালকরা।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ মিরপুর, মালীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, আগারগাঁও, নাখালপাড়া, রামপুরা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা।
সর্বশেষ শুক্রবার ঢাকার জুরাইনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে রিকশা চালকদের বিক্ষোভ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে উচ্চ আদালতের রায়টি পুনর্বিবেচনাসহ সমস্যা সমাধানে সাত দিনের আলটিমেটাম দিল রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ।
একটা নীতিমালা তৈরি করে আধুনিকায়ন করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের লাইসেন্স দেওয়া, রুট পারমিট ও সড়কে পৃথক লেনের দাবিতে সংগঠনটি ১২ বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান সংগঠনটির আহ্বায়ক।
খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, গত ৬ জুলাই বিআরটিএ থেকে আমাদের চিঠি দিয়ে জানানো হলো- আমাদের দাবিটা যৌক্তিকভাবে পরিচালনা করছে। গত ২৪ অক্টোবর আমাদের জানানো হলো নীতিমালা চূড়ান্ত হয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন অশায় বুক বেঁধে আছি, তখনই প্যাডেলচালিত রিকশাচালকদের একটি সংগঠন রিট করল। পেটে লাথি মেরে কোনো রিট হতে পারে না।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে সংগঠনটির আহ্বায়ক বলেন, আপনি একটা নীতিমালা করে লাইসেন্স দিয়ে, নিবন্ধন করে রুট পারমিট দিয়ে দেন। যখন লাইসেন্স আর রুট পারমিটের বিষয়টি আসবে, তখনই নিরাপত্তার বিষয়টি চলে আসবে। তাই নীতিমালাটা অবিলম্বে ৭ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করুন।