ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। হামলায় পুলিশের অনেকে নিহত বা আহত হয়েছে; জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে যানবাহন ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। থানাসহ পুলিশের স্থাপনা থেকে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে অনেকেই মারা যান; পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকে। উন্নত চিকিৎসার জন্য কেউ কেউ দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। আইজিপিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের সরিয়ে নতুনদের বসানো হয়। তারা আন্দোলনে পুলিশের স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করেন।
পুলিশ সদর দপ্তর নিশ্চিত হয়েছে, দুর্বৃত্তদের হামলায় পুলিশের অবকাঠামো তছনছ হয়েছে। ৬০৭ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। তদন্তসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। যানবাহন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নতুন করে ২৭৫ কোটি টাকার গাড়ি কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পুলিশের যানবাহন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নতুন গাড়ি কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ৪৩১টি যানবাহন কিনতে ২৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকার বাজেট ধরা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর ৭২২টি গাড়ি কেনার জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছে। মন্ত্রণালয় ৪৩১টি যানবাহন কিনতে ২৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যানবাহনের সংকট কাটাতে পুলিশের জন্য যানবাহন জরুরি হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও কাজের গতি বাড়াতে ৩৮টি জিপ, ২৫০টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ৫৬টি সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ, ১২টি প্যাট্রল কার ও মাইক্রোবাস, ২টি অ্যাম্বুলেন্স, ২০টি ট্রাক, ২টি বাস, ১২টি প্রিজন ভ্যান, ২৮৫টি মোটরসাইকেল, ৮টি রেকার, ৪টি এপিসি, ১টি জলকামানসহ মোট ৭২২টি যানবাহন কেনা দরকার। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যানবাহনের সংখ্যা আরও কমাতে হবে। পরে সিদ্ধান্ত হয়, ৩০টি জিপ, ২০০টি ডাবল কেবিন পিকআপ, ৮টি মাইক্রোবাস, ১৬টি ট্রাক, ৪টি বাস, ১৫২টি মোটরসাইকেল, ৮টি রেকার, ৪টি এপিসি, ১টি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ডগভ্যানসহ ৪৩১টি যানবাহন কেনা হবে। ছয় মাসের মধ্যে যানবাহনগুলো কেনার কথা রয়েছে।