রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে থাকছে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইনের খসড়া থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ বা গণহত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে বিচারের আওতায় আনার জন্য আইসিটি আইনের সংশোধিত খসড়ায় একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছিল। কোনো রাজনৈতিক দলের বিচার প্রচলিত অন্যান্য আইনে যেমন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা সম্ভব। সরকার চেয়েছে আইসিটি আইন নিয়ে কোনো বিতর্ক না হোক। তবে অন্যান্য আইনে তা বহাল থাকবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়া বিভিন্ন প্রসিদ্ধ আইনজীবী এবং হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। সকল মতামতের ভিত্তিতে আমরা একটা খসড়া করেছি। এটা উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করা হয়েছিল। এটা উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত হয়েছে। তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদে। উপদেষ্টা পরিষদ মনে করেছে আমরা যে আইনের সংশোধনীটা করেছিলাম সেখানে রাজনৈতিক দলকে শাস্তি দেওয়ার বিধান ছিল। খসড়ায় বলা ছিল, আদালত যদি মনে করেন তারা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কনসার্নড অথোরিটির (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ) কাছে সুপারিশ করতে পারেন।
তিনি বলেন, খসড়ায় বলা হয়েছে, আদালত যদি মনে করেন তাঁরা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কনসার্নড অথোরিটির (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ) কাছে সুপারিশ করতে পারেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়ায় খুন, গুম, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কোনো দল বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হলে সেই দল বা সংগঠনের নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল করা যাবে।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হয়েছে। ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো পরিবর্তন করে স্বচ্ছ উপায়ে বিচারের জন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে। রোম স্ট্যাটিউট অবলম্বন করে জেনোসাইড, মানবাধিকারবিরোধী অপরাধের সংজ্ঞা পরিবির্তন করা হয়েছে সংশোধনীতে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তিন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থারও বিচারের বিধান রাখা হয়েছে সংশোধনীতে।
এছাড়া আরব আমিরাতে আটক থাকা আরও কিছু বাংলাদেশিকে ফেরত আনার জন্য সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।