ঢাকা ১২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কারাগারে বসে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয় সালমান এফ রহমানের Logo জুলাই গণহত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো ৮ সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাকে Logo বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়া শুরুর হুমকি এস আলমের Logo ড্র করে মাঠ ছাড়লো ব্রাজিল-উরুগুয়ে Logo মার্টিনেজের গোলে জয়ে বছর শেষ করলো আর্জেন্টিনা Logo গাজায় একদিনে নিহত আরও অর্ধশত ফিলিস্তিনি, প্রাণহানি প্রায় ৪৪ হাজার Logo পাবিপ্রবিতে কন্ঠস্বরের আয়োজনে মঞ্চায়িত হলো”নক্ষত্রের রাত-২য় প্রহর” Logo ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিশু কিশোর প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান আহমদিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা Logo বগুড়ায় হাসপাতাল ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে যুবকের মৃত্যু! Logo শাজাহানপুরে আলু বীজ সংকটে ডিলারদের সংবাদ সম্মেলন

আওয়ামী লীগকে ভোটে আনা নিয়ে নয়া আলোচনা

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৪৪:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
  • 27

আজহকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

মানবজমিন:

আওয়ামী লীগকে ভোটে আনা নিয়ে নয়া আলোচনা
সাড়ে ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন দলটির সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই দিশাহারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গণহত্যা ও ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের
মুখোমুখি সিনিয়র অনেক নেতা। দাবি উঠছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের। এমন পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া এক বক্তব্য ঘিরে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে বিএনপি’র অনাপত্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলে বিক্ষুব্ধ হন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তারা মনে করেন, এটা জুলাই আগস্টের শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। হিন্দুকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি। বিএনপি এটা করেছে, বলেছে সব রাজনৈতিক দল অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সুতরাং তারা ইতিমধ্যে রায় দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামতকে উপেক্ষা করবো না।

ছাত্ররা যখন গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি তুলছে ঠিক তখন এমন বক্তব্য আশাহত করেছে তাদের। বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়াও দিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের অনেক নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ছেলেদের রক্তের ওপর পা রেখে দিল্লিকে কেবলা বানিয়ে ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জনগণের মুক্তির নিয়তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আওয়ামী পুনর্বাসনের জন্য যারা উদ্যোগ নেবে, তাদেরকে ইতিহাস গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করবে। তিনি আরও লেখেন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে যারা ধারণ করে, যারা গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে চায়, তারা ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করার দাবি ছাড়া আওয়ামী লীগ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আর কোনো দ্বিতীয় বক্তব্য দিতে পারে না। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আপনার কোনো আপত্তি নেই- দ্য হিন্দুর এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কোনো একটি দল বা আরেকটি দলকে বেছে নেয়ার জন্য আমি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। আমি রাজনীতিকদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করছি। এর আগে সোমবার সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তৃতায় সেটি বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে।

নয়াদিগন্ত:

নির্বাচন বিলম্বিত করার শঙ্কা বাড়ছে বিএনপিতে
ন্তর্বর্তী সরকার ও ছাত্র প্ল্যাটফর্ম থেকে সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন ইস্যুতে যে ধরনের বক্তব্য আসছে, তাতে বিএনপিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার শঙ্কা আরো বেড়েছে। সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে নির্বাচনী রোডম্যাপের ব্যাপারে খুব স্পষ্টভাবে কোনো বার্তা না থাকায় আশাহত হয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারেও নির্বাচনী রোডম্যাপ বা পথ-নকশার বিষয়টি স্পষ্ট করেননি ড. ইউনূস। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপি মনে করছে, এ সরকারের প্রধান লক্ষ্য যে নির্বাচন, সেটি থেকে তারা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে কিনা কিংবা ঠিক কত দিন তারা ক্ষমতায় থাকতে চান, সেটি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। বিএনপি মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকার যদি দেড় বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে, তাহলে এ সরকারকে ব্যর্থ করতে ‘পতিত’ আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসররা সর্বোচ্চ মাত্রায় তৎপর রয়েছে। দেশের বাইরে থেকে তারা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাথে গোপন যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে। তাদের নির্দেশনা দেয়া আছে, যখন প্রয়োজন হবে, তখনই মাঠে নামতে হবে। বিএনপি এ-ও মনে করছে, যত দিন দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হবে, তত দিন আওয়ামী লীগও এই সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের অপতৎরতা অব্যাহত রাখবে; দেশী-বিদেশী বন্ধুদের অব্যাহতভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে যাবে।

বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিগত কয়েক মাস ধরে এ দাবিতে নানা প্ল্যাটফর্ম থেকে সোচ্চার তারা। দলটির নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তারা দেশে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। শুধু বিএনপি নয়, তাদের জোটও দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।

 

নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা ইস্যুতে বিএনপির অব্যাহত দাবির মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে গত রোববার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। সেখানে তিনি বলেন, ‘আপনারা সুযোগ দিলে প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারকাজ শেষ করেই আমরা আপনাদের কাক্সিক্ষত নির্বাচন আয়োজন করব। তত দিন পর্যন্ত আপনাদের ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করব। নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন।’ আলজাজিরাকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার একসাথে চলছে। নতুন বাংলাদেশ শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় কখন হবে- সে বিষয়ে ড. ইউনূসের কোনো ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘না, আমার মাথায় এমন কিছু নেই।’

জানা গেছে, বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ড. ইউনূসের এই ভাষণ এবং সাক্ষাৎকার নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি কার্যত বিএনপিকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। সরকারের বর্তমান অবস্থান ‘নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার অবস্থান’ বলে দলটির ভেতরে বিবেচিত হচ্ছে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুই-তিনজন নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রমে বিএনপির কোনো বিরোধিতা নেই। তারা সরকারকে সহযোগিতা করছে। তবে এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য যেহেতু নির্বাচন, তাই যে সংস্কারগুলো একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের পূর্বশর্ত- রাজনৈতিক মতৈক্যের ভিত্তিতে সেগুলোতে সরকারের অগ্রাধিকার দেয়া দরকার। কারণ, গত দেড় দশক ধরে ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষ এখন ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে রয়েছে। তাই সরকারের উচিত নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এ ক্ষেত্রে সংস্কারের পাশাপাশি একইসাথে নির্বাচনী প্রস্তুতিও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সরকার যদিও বলছে, নির্বাচনের যাত্রা শুরু হয়েছে। তবে রোডম্যাপ না দেয়ায় এটি সরকারের ‘রাজনৈতিক’ বক্তব্য হিসেবে মনে করছে দলটি।

প্রথম আলো:

অতি প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষে নির্বাচন

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নানা সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, অতি প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া হবে। আগের মতো কোনো ভুয়া নির্বাচন হোক, সেটি অন্তর্বর্তী সরকার চায় না।

আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) অধ্যাদেশের সংশোধনের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত চাইলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবেন। এমন বিধান রেখে অধ্যাদেশের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়াটি অনুমোদনের জন্য আজ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেন। ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে আইন মন্ত্রণালয়ের ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের পর ‘সাইবার সুরক্ষা আইন’ নামে নতুন আইন করা, হয়রানিমূলক মামলার প্রতিকারে ডিসি-এসপি ও জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার সমন্বয়ে কমিটি করার চিন্তা, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে করা প্রায় সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা, নতুন বিচারপতি নিয়োগ, ৬১টি জেলায় ৪ হাজার ৩০০ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ আইনের খসড়া করাসহ বিভিন্ন তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে আইন
কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থাকলে এবং আদালত মনে করলে দল নিষিদ্ধ বা প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এমন বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল), ১৯৭৩ অধ্যাদেশের সংশোধন প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়াটি অনুমোদনের জন্য আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সংগঠন বা দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার ও নিষিদ্ধ করতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিধান রেখে এ আইনের সংশোধন প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার তা করে যেতে পারেনি।

জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩’ প্রণয়ন করে। ২০১০ সালে শেখ হাসিনার সরকার এ আইনের আওতায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে বিচার করে রায় দেন। পরে সে রায় কার্যকর হয়। একই অপরাধের অভিযোগে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিল শাসক আওয়ামী লীগ।

দেশরুপান্তর:

লুটের অস্ত্র কিনছে অপরাধীরা!
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তরা থানা, পুলিশ ফাঁড়িসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করেছে। গত তিন মাসেও তা পুরোপুরি উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনকি গণভবন ও সংসদ ভবন থেকে লুট হওয়া বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) অস্ত্রও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশঙ্কা, লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ চিহ্নিত অপরাধীরা কিনছে। তাদের হাতে আসা অস্ত্র দিয়ে নানা অপকর্ম হচ্ছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। এতে করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এমন শঙ্কা থেকে পুলিশে উদ্বেগ আছে।

জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশের লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদগুলো উদ্ধার করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। এসব অস্ত্র যাতে কোনো অপরাধীর হাতে না যেতে পারে, সেজন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

কালের কন্ঠ:

‘দুঃখের জালে’ মা-ইলিশের মরণ,‘দুঃখের জালে’ মা-ইলিশের মরণ
মা-ইলিশ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ৩ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ২২ দিন। এই সময়ে কী চলে উপকূলের নদীগুলোতে? নিজের চোখে দেখার জন্য গত ৩০ অক্টোবর বুধবার রাতের ভাত খেয়ে ঠিক ১০টায় স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ঘর থেকে। সঙ্গে নিলাম ছেলের একটা স্কুলব্যাগ, একটা তোয়ালে, লুঙ্গি ও এক জোড়া শার্ট-প্যান্ট। মোবাইল ফোনের চার্জারটাও নিতে ভুললাম না।

শর্টপ্যান্টের পকেটে নিয়ে নিলাম হাজার তিনেক টাকা। তারপর পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদর থেকে তেঁতুলিয়া নদীপারের একটি ঘাটে পৌঁছতে ভাড়ার মোটরসাইকেলে লাগল ২৮ মিনিট।
জাল পাতে পুলিশ ও:দশমিনা উপজেলার সইজ্জাপুর গ্রামের জেলে হেমায়েত মাছ শিকার করেন বাঁধাজাল দিয়ে। এটি বেহুন্দি জাল নামেও পরিচিত। তার জালে তিন-চার দিন বয়সের মাছের পোনাসহ আটকা পড়ে মাছের ডিমও। মাঘ থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত তার ওই জালে যে মাছ ধরা পড়ে, তার ৮০ শতাংশই ইলিশের বাচ্চা।

প্রতি টানে দুই থেকে আড়াই মণ ইলিশের পোনা উঠে আসে তার জালে। ইলিশের ওই পোনাগুলো ‘চাপলি’ নামে পরিচিত।
এভাবে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে দিনের পর দিন জেলেরা অবাধে মাছ শিকার করে যাচ্ছেন কিভাবে? হেমায়েতদের মতো শুধুই মাছ ধরে জীবন চালানো জেলেদের মুখ থেকে শোনা যায় ভয়ংকর জবাব। নিষিদ্ধ জাল শুধু জেলেরাই পাতেন না, পুলিশ প্রশাসনও অবৈধ আয়ের জাল বিছিয়ে রেখেছে নদী-সাগরে।

যুগান্তর :

বিচারের আগে আ.লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেব না: সারজিস আলম

আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘গণহত্যার বিচারের পূর্বে আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেব না। প্রয়োজনে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হবে।’ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি এই পোস্ট দেন।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ছেলেদের রক্তের ওপর পা রেখে দিল্লিকে কিবলা বানিয়ে ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জনগণের মুক্তির নিয়তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আওয়ামী পুনর্বাসনের জন্য যারা উদ্যোগ নেবে, ইতিহাস তাদের গণশত্রু হিসাবে চিহ্নিত করবে।’

দৈনিক সংগ্রাম:

হাসিনাকে বিচারের জন্য দিল্লীকে ফেরত পাঠাতেই হবে
স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিবাদে গেল জুলাইয়ে দেশজুড়ে রাস্তায় নেমে আসে ছাত্র-জনতা। আন্দোলনকারীদের দমনে গণহত্যা, ধরপাকড় করেও শেষ পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে গিয়েও থেমে নেই তিনি। একের পর এক কল রেকর্ড ফাঁস করে দেশের ভিতর অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে জনতার মধ্যে। এর মধ্যেই আলোচনা উঠেছে পরবর্তী নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। সাক্ষাৎকারে বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় দিল্লী যদি হাসিনাকে ফেরত না দেয় তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার খুবই স্বল্পস্থায়ী, তাই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সব দিক এখনই মীমাংসা করা সম্ভব নয়। তবে পরবর্তী কোনো সরকারও এটি সহজে মেনে নেবে না। হাসিনাকে বিচারের জন্য দিল্লীকে ফেরত পাঠাতেই হবে; যদি চুক্তি ভঙ্গ করে ফেরত না পাঠায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খুব একটা সুখের হবে না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বিষয়ে কথা বলেন। ভারতের কাছে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তবে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তার কোনো আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। গত সোমবার সন্ধ্যায় দ্য হিন্দুর ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়। ঢাকায় নিজ বাসভবনে দ্য হিন্দুর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ও সংস্কারের পরিকল্পনার বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি দেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনকে প্রপাগান্ডা বলে অভিহিত করেছেন।

কালবেলা:

তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর কতটা যৌক্তিক
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির বিষয়টি কতটুকু যুক্তিযুক্ত, তা যাচাই-বাছাই করতে একটি কমিটি গঠনও করতে যাচ্ছে সরকার। তবে এ আন্দোলনে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। আবার রাস্তা অবরোধ করে চলাচলে বাধা এবং চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে যাত্রী আহত করাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন অনেকেই। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভও দেখা গেছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন না করে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান-দক্ষতায় মনোযোগ দিতে হবে।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে জিন্নাহ কলেজ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কলেজটি। পরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলে এর নামকরণ করা হয় সৈয়দ মীর নিসার আলী তিতুমীরের নামে। ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ১১ একর জায়গার ওপর স্থাপিত কলেজটিকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে ২০১৭ সালে তিতুমীর কলেজসহ রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

কারাগারে বসে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয় সালমান এফ রহমানের

আওয়ামী লীগকে ভোটে আনা নিয়ে নয়া আলোচনা

আপডেট সময় ০৭:৪৪:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

আজহকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

মানবজমিন:

আওয়ামী লীগকে ভোটে আনা নিয়ে নয়া আলোচনা
সাড়ে ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন দলটির সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই দিশাহারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গণহত্যা ও ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের
মুখোমুখি সিনিয়র অনেক নেতা। দাবি উঠছে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের। এমন পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া এক বক্তব্য ঘিরে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে বিএনপি’র অনাপত্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলে বিক্ষুব্ধ হন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তারা মনে করেন, এটা জুলাই আগস্টের শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। হিন্দুকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি। বিএনপি এটা করেছে, বলেছে সব রাজনৈতিক দল অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সুতরাং তারা ইতিমধ্যে রায় দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামতকে উপেক্ষা করবো না।

ছাত্ররা যখন গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি তুলছে ঠিক তখন এমন বক্তব্য আশাহত করেছে তাদের। বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়াও দিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের অনেক নেতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ছেলেদের রক্তের ওপর পা রেখে দিল্লিকে কেবলা বানিয়ে ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জনগণের মুক্তির নিয়তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আওয়ামী পুনর্বাসনের জন্য যারা উদ্যোগ নেবে, তাদেরকে ইতিহাস গণশত্রু হিসেবে চিহ্নিত করবে। তিনি আরও লেখেন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে যারা ধারণ করে, যারা গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে চায়, তারা ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করার দাবি ছাড়া আওয়ামী লীগ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আর কোনো দ্বিতীয় বক্তব্য দিতে পারে না। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আপনার কোনো আপত্তি নেই- দ্য হিন্দুর এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কোনো একটি দল বা আরেকটি দলকে বেছে নেয়ার জন্য আমি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। আমি রাজনীতিকদের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করছি। এর আগে সোমবার সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বক্তৃতায় সেটি বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে।

নয়াদিগন্ত:

নির্বাচন বিলম্বিত করার শঙ্কা বাড়ছে বিএনপিতে
ন্তর্বর্তী সরকার ও ছাত্র প্ল্যাটফর্ম থেকে সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন ইস্যুতে যে ধরনের বক্তব্য আসছে, তাতে বিএনপিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার শঙ্কা আরো বেড়েছে। সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে নির্বাচনী রোডম্যাপের ব্যাপারে খুব স্পষ্টভাবে কোনো বার্তা না থাকায় আশাহত হয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারেও নির্বাচনী রোডম্যাপ বা পথ-নকশার বিষয়টি স্পষ্ট করেননি ড. ইউনূস। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপি মনে করছে, এ সরকারের প্রধান লক্ষ্য যে নির্বাচন, সেটি থেকে তারা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে কিনা কিংবা ঠিক কত দিন তারা ক্ষমতায় থাকতে চান, সেটি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। বিএনপি মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকার যদি দেড় বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে, তাহলে এ সরকারকে ব্যর্থ করতে ‘পতিত’ আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসররা সর্বোচ্চ মাত্রায় তৎপর রয়েছে। দেশের বাইরে থেকে তারা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সাথে গোপন যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে। তাদের নির্দেশনা দেয়া আছে, যখন প্রয়োজন হবে, তখনই মাঠে নামতে হবে। বিএনপি এ-ও মনে করছে, যত দিন দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হবে, তত দিন আওয়ামী লীগও এই সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের অপতৎরতা অব্যাহত রাখবে; দেশী-বিদেশী বন্ধুদের অব্যাহতভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে যাবে।

বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। বিগত কয়েক মাস ধরে এ দাবিতে নানা প্ল্যাটফর্ম থেকে সোচ্চার তারা। দলটির নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে তারা দেশে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। শুধু বিএনপি নয়, তাদের জোটও দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।

 

নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা ইস্যুতে বিএনপির অব্যাহত দাবির মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে গত রোববার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। সেখানে তিনি বলেন, ‘আপনারা সুযোগ দিলে প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারকাজ শেষ করেই আমরা আপনাদের কাক্সিক্ষত নির্বাচন আয়োজন করব। তত দিন পর্যন্ত আপনাদের ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করব। নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন।’ আলজাজিরাকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার একসাথে চলছে। নতুন বাংলাদেশ শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় কখন হবে- সে বিষয়ে ড. ইউনূসের কোনো ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘না, আমার মাথায় এমন কিছু নেই।’

জানা গেছে, বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ড. ইউনূসের এই ভাষণ এবং সাক্ষাৎকার নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি কার্যত বিএনপিকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। সরকারের বর্তমান অবস্থান ‘নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার অবস্থান’ বলে দলটির ভেতরে বিবেচিত হচ্ছে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দুই-তিনজন নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রমে বিএনপির কোনো বিরোধিতা নেই। তারা সরকারকে সহযোগিতা করছে। তবে এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য যেহেতু নির্বাচন, তাই যে সংস্কারগুলো একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের পূর্বশর্ত- রাজনৈতিক মতৈক্যের ভিত্তিতে সেগুলোতে সরকারের অগ্রাধিকার দেয়া দরকার। কারণ, গত দেড় দশক ধরে ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষ এখন ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে রয়েছে। তাই সরকারের উচিত নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এ ক্ষেত্রে সংস্কারের পাশাপাশি একইসাথে নির্বাচনী প্রস্তুতিও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সরকার যদিও বলছে, নির্বাচনের যাত্রা শুরু হয়েছে। তবে রোডম্যাপ না দেয়ায় এটি সরকারের ‘রাজনৈতিক’ বক্তব্য হিসেবে মনে করছে দলটি।

প্রথম আলো:

অতি প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষে নির্বাচন

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নানা সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, অতি প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া হবে। আগের মতো কোনো ভুয়া নির্বাচন হোক, সেটি অন্তর্বর্তী সরকার চায় না।

আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) অধ্যাদেশের সংশোধনের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত চাইলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবেন। এমন বিধান রেখে অধ্যাদেশের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়াটি অনুমোদনের জন্য আজ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেন। ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে আইন মন্ত্রণালয়ের ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের পর ‘সাইবার সুরক্ষা আইন’ নামে নতুন আইন করা, হয়রানিমূলক মামলার প্রতিকারে ডিসি-এসপি ও জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার সমন্বয়ে কমিটি করার চিন্তা, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে করা প্রায় সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা, নতুন বিচারপতি নিয়োগ, ৬১টি জেলায় ৪ হাজার ৩০০ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ আইনের খসড়া করাসহ বিভিন্ন তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে আইন
কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থাকলে এবং আদালত মনে করলে দল নিষিদ্ধ বা প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এমন বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল), ১৯৭৩ অধ্যাদেশের সংশোধন প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়াটি অনুমোদনের জন্য আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সংগঠন বা দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার ও নিষিদ্ধ করতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার বিধান রেখে এ আইনের সংশোধন প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার তা করে যেতে পারেনি।

জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য ১৯৭৩ সালে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩’ প্রণয়ন করে। ২০১০ সালে শেখ হাসিনার সরকার এ আইনের আওতায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। এ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে বিচার করে রায় দেন। পরে সে রায় কার্যকর হয়। একই অপরাধের অভিযোগে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিল শাসক আওয়ামী লীগ।

দেশরুপান্তর:

লুটের অস্ত্র কিনছে অপরাধীরা!
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তরা থানা, পুলিশ ফাঁড়িসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করেছে। গত তিন মাসেও তা পুরোপুরি উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনকি গণভবন ও সংসদ ভবন থেকে লুট হওয়া বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) অস্ত্রও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশঙ্কা, লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ চিহ্নিত অপরাধীরা কিনছে। তাদের হাতে আসা অস্ত্র দিয়ে নানা অপকর্ম হচ্ছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। এতে করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এমন শঙ্কা থেকে পুলিশে উদ্বেগ আছে।

জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশের লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদগুলো উদ্ধার করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। এসব অস্ত্র যাতে কোনো অপরাধীর হাতে না যেতে পারে, সেজন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

কালের কন্ঠ:

‘দুঃখের জালে’ মা-ইলিশের মরণ,‘দুঃখের জালে’ মা-ইলিশের মরণ
মা-ইলিশ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল ১৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ৩ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ২২ দিন। এই সময়ে কী চলে উপকূলের নদীগুলোতে? নিজের চোখে দেখার জন্য গত ৩০ অক্টোবর বুধবার রাতের ভাত খেয়ে ঠিক ১০টায় স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ঘর থেকে। সঙ্গে নিলাম ছেলের একটা স্কুলব্যাগ, একটা তোয়ালে, লুঙ্গি ও এক জোড়া শার্ট-প্যান্ট। মোবাইল ফোনের চার্জারটাও নিতে ভুললাম না।

শর্টপ্যান্টের পকেটে নিয়ে নিলাম হাজার তিনেক টাকা। তারপর পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সদর থেকে তেঁতুলিয়া নদীপারের একটি ঘাটে পৌঁছতে ভাড়ার মোটরসাইকেলে লাগল ২৮ মিনিট।
জাল পাতে পুলিশ ও:দশমিনা উপজেলার সইজ্জাপুর গ্রামের জেলে হেমায়েত মাছ শিকার করেন বাঁধাজাল দিয়ে। এটি বেহুন্দি জাল নামেও পরিচিত। তার জালে তিন-চার দিন বয়সের মাছের পোনাসহ আটকা পড়ে মাছের ডিমও। মাঘ থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত তার ওই জালে যে মাছ ধরা পড়ে, তার ৮০ শতাংশই ইলিশের বাচ্চা।

প্রতি টানে দুই থেকে আড়াই মণ ইলিশের পোনা উঠে আসে তার জালে। ইলিশের ওই পোনাগুলো ‘চাপলি’ নামে পরিচিত।
এভাবে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে দিনের পর দিন জেলেরা অবাধে মাছ শিকার করে যাচ্ছেন কিভাবে? হেমায়েতদের মতো শুধুই মাছ ধরে জীবন চালানো জেলেদের মুখ থেকে শোনা যায় ভয়ংকর জবাব। নিষিদ্ধ জাল শুধু জেলেরাই পাতেন না, পুলিশ প্রশাসনও অবৈধ আয়ের জাল বিছিয়ে রেখেছে নদী-সাগরে।

যুগান্তর :

বিচারের আগে আ.লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেব না: সারজিস আলম

আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘গণহত্যার বিচারের পূর্বে আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেব না। প্রয়োজনে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হবে।’ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি এই পোস্ট দেন।

এর কয়েক ঘণ্টা আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ছেলেদের রক্তের ওপর পা রেখে দিল্লিকে কিবলা বানিয়ে ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জনগণের মুক্তির নিয়তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আওয়ামী পুনর্বাসনের জন্য যারা উদ্যোগ নেবে, ইতিহাস তাদের গণশত্রু হিসাবে চিহ্নিত করবে।’

দৈনিক সংগ্রাম:

হাসিনাকে বিচারের জন্য দিল্লীকে ফেরত পাঠাতেই হবে
স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিবাদে গেল জুলাইয়ে দেশজুড়ে রাস্তায় নেমে আসে ছাত্র-জনতা। আন্দোলনকারীদের দমনে গণহত্যা, ধরপাকড় করেও শেষ পর্যন্ত ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে গিয়েও থেমে নেই তিনি। একের পর এক কল রেকর্ড ফাঁস করে দেশের ভিতর অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে জনতার মধ্যে। এর মধ্যেই আলোচনা উঠেছে পরবর্তী নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণ নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। সাক্ষাৎকারে বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় দিল্লী যদি হাসিনাকে ফেরত না দেয় তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার খুবই স্বল্পস্থায়ী, তাই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সব দিক এখনই মীমাংসা করা সম্ভব নয়। তবে পরবর্তী কোনো সরকারও এটি সহজে মেনে নেবে না। হাসিনাকে বিচারের জন্য দিল্লীকে ফেরত পাঠাতেই হবে; যদি চুক্তি ভঙ্গ করে ফেরত না পাঠায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খুব একটা সুখের হবে না।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বিষয়ে কথা বলেন। ভারতের কাছে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চাইবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তবে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তার কোনো আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। গত সোমবার সন্ধ্যায় দ্য হিন্দুর ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়। ঢাকায় নিজ বাসভবনে দ্য হিন্দুর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ও সংস্কারের পরিকল্পনার বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি দেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদনকে প্রপাগান্ডা বলে অভিহিত করেছেন।

কালবেলা:

তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর কতটা যৌক্তিক
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির বিষয়টি কতটুকু যুক্তিযুক্ত, তা যাচাই-বাছাই করতে একটি কমিটি গঠনও করতে যাচ্ছে সরকার। তবে এ আন্দোলনে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। আবার রাস্তা অবরোধ করে চলাচলে বাধা এবং চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে যাত্রী আহত করাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন অনেকেই। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভও দেখা গেছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন না করে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান-দক্ষতায় মনোযোগ দিতে হবে।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে জিন্নাহ কলেজ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কলেজটি। পরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হলে এর নামকরণ করা হয় সৈয়দ মীর নিসার আলী তিতুমীরের নামে। ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ১১ একর জায়গার ওপর স্থাপিত কলেজটিকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে ২০১৭ সালে তিতুমীর কলেজসহ রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।