ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১১টি ব্যাংক মিলে ইসলামী ব্যাংকের সমান হবে না : গভর্নর

সোমবার (১৮ নভেম্বর) মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে দেশের আর্থিক খাতের সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কিছু ব্যাংক ভালো করছে। তারমধ্যে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামি ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হয়ে কাজ করছে, বা করবে তাদের বাদ দিয়ে দেশ চলবে না। ঢালাওভাবে কাউকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া যাবে না।

ব্যাংক গ্রাহকদের স্বার্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবার আগে দেখবে বলেও জানান গভর্নর মনসুর। তিনি বলেন, সংস্কার অগ্রগতি দেখে সহযোগিতা করা হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। তবে ব্যাংকগুলোকে ঢালাওভাবে তারল্য সহায়তা করা হবে না।

আর ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির (আইবিবিএল) চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ২০১৭ সালের পর ইসলামি ব্যাংক থেকে ৪৫টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিতর্কিত শিল্পগ্রুপ এস আলম ৮০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে। শিগগিরিই এস আলম গ্রুপের নামে থাকা শেয়ার বিক্রি করে ব্যাংকের মূলধন শক্তিশালী করা হবে।

আইবিবিএল চেয়ারম্যান আরও বলেন, সরকার পতনের পর থেকে তিন মাসে ইসলামি ব্যাংকের ডিপোজিট বেড়েছে ৪ হাজার ৯৭২টি। প্রবাসী আয় এসেছে ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশের মোট রেমিট্যান্সে ইসলামি ব্যাংক আবারও ৩০ শতাংশ ভূমিকা রাখার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

নতুন বোর্ড ‘স্বচ্ছতার সঙ্গে’ কাজ করছে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, তারল্য ঘাটতিতে পড়া ইসলামী ব্যাংক ইতিবাচক ধারায় ফিরছে।

“২০১৭ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৮০ শতাংশ ঋণ এস আলম নিয়েছে। এটা যে বিশাল ক্ষতি তা একদিনে কাঁটিয়ে ওঠা সম্ভব না। নতুন বোর্ড দেওয়ায় তারা আবার পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করছে। এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।”

গভর্নর বলেন, অযোগ্য ব্যক্তিদের আর প্রতিষ্ঠানে রাখা যাবে না। যারা নিজের স্বার্থে কাজ করছে, তাদের রাখা যাবে না।

“কিন্তু যারা যোগ্য ব্যক্তি, নিঃস্বার্থভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করবেন, কেন তারা থাকবেন না? যারা অভিজ্ঞ, তারা এসব প্রতিষ্ঠানে থাকতেই পারেন। ঢালাওভাবে কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। ইসলামী ব্যাংকে কারা থাকবেন কিংবা কারা থাকবেন না, সে বিষয়গুলো বোর্ড থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর বোর্ডে যাদের দেওয়া হয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকিং খাত বিষয়ক অভিজ্ঞ কর্মী হিসাবেও কাজ করছেন।”

আহসান এইচ মনসুর বলেন, “দুর্বল ব্যাংকগুলোকে বাঁচানোর জন্য নতুন কৌশল নেওয়া হবে। তবে এসব কৌশল কি তা এখনি বলব না। সামনে তা জানানো হবে। ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য । আগের মত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা করা হচ্ছে না। নতুন বোর্ড কর্মপরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করছে একটু একটু করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবাইকে রক্ষা করবে। তবে ছেলে এসে ললিপপ চাইলেই সেটা দেওয়া হবে না। নিয়মের মধ্যে সাপোর্ট দেওয়া হবে।”

জনপ্রিয় সংবাদ

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করছে জনগণ: মির্জা ফখরুল

১১টি ব্যাংক মিলে ইসলামী ব্যাংকের সমান হবে না : গভর্নর

আপডেট সময় ০২:৫০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

সোমবার (১৮ নভেম্বর) মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে দেশের আর্থিক খাতের সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কিছু ব্যাংক ভালো করছে। তারমধ্যে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামি ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হয়ে কাজ করছে, বা করবে তাদের বাদ দিয়ে দেশ চলবে না। ঢালাওভাবে কাউকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া যাবে না।

ব্যাংক গ্রাহকদের স্বার্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবার আগে দেখবে বলেও জানান গভর্নর মনসুর। তিনি বলেন, সংস্কার অগ্রগতি দেখে সহযোগিতা করা হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। তবে ব্যাংকগুলোকে ঢালাওভাবে তারল্য সহায়তা করা হবে না।

আর ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির (আইবিবিএল) চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ২০১৭ সালের পর ইসলামি ব্যাংক থেকে ৪৫টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিতর্কিত শিল্পগ্রুপ এস আলম ৮০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে। শিগগিরিই এস আলম গ্রুপের নামে থাকা শেয়ার বিক্রি করে ব্যাংকের মূলধন শক্তিশালী করা হবে।

আইবিবিএল চেয়ারম্যান আরও বলেন, সরকার পতনের পর থেকে তিন মাসে ইসলামি ব্যাংকের ডিপোজিট বেড়েছে ৪ হাজার ৯৭২টি। প্রবাসী আয় এসেছে ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশের মোট রেমিট্যান্সে ইসলামি ব্যাংক আবারও ৩০ শতাংশ ভূমিকা রাখার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

নতুন বোর্ড ‘স্বচ্ছতার সঙ্গে’ কাজ করছে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, তারল্য ঘাটতিতে পড়া ইসলামী ব্যাংক ইতিবাচক ধারায় ফিরছে।

“২০১৭ সাল থেকে ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ৮০ শতাংশ ঋণ এস আলম নিয়েছে। এটা যে বিশাল ক্ষতি তা একদিনে কাঁটিয়ে ওঠা সম্ভব না। নতুন বোর্ড দেওয়ায় তারা আবার পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করছে। এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।”

গভর্নর বলেন, অযোগ্য ব্যক্তিদের আর প্রতিষ্ঠানে রাখা যাবে না। যারা নিজের স্বার্থে কাজ করছে, তাদের রাখা যাবে না।

“কিন্তু যারা যোগ্য ব্যক্তি, নিঃস্বার্থভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করবেন, কেন তারা থাকবেন না? যারা অভিজ্ঞ, তারা এসব প্রতিষ্ঠানে থাকতেই পারেন। ঢালাওভাবে কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। ইসলামী ব্যাংকে কারা থাকবেন কিংবা কারা থাকবেন না, সে বিষয়গুলো বোর্ড থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর বোর্ডে যাদের দেওয়া হয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকিং খাত বিষয়ক অভিজ্ঞ কর্মী হিসাবেও কাজ করছেন।”

আহসান এইচ মনসুর বলেন, “দুর্বল ব্যাংকগুলোকে বাঁচানোর জন্য নতুন কৌশল নেওয়া হবে। তবে এসব কৌশল কি তা এখনি বলব না। সামনে তা জানানো হবে। ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য । আগের মত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা করা হচ্ছে না। নতুন বোর্ড কর্মপরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করছে একটু একটু করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবাইকে রক্ষা করবে। তবে ছেলে এসে ললিপপ চাইলেই সেটা দেওয়া হবে না। নিয়মের মধ্যে সাপোর্ট দেওয়া হবে।”